মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩

৩ থেকে ৫ জানুয়ারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা


দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পাঁচটি জেলা ছাড়া সারা দেশে ২৪ ঘণ্টার জন্য বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। 

মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, "জয়পুরহাট, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর জেলা ছাড়া সারাদেশে ৪ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২ টা থেকে ৫ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২ টা পর্যন্ত বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। উল্লেখিত সময়ে বেবিট্যাক্সি / অটোরিকশা / ইজিবাইক, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক এবং টেম্পো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।"
এছাড়া ৩ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৭ জানুয়ারি মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী / তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি/বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য।

নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি / বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কতিপয় জরুরি কাজে যেমন- অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ারসার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এরূপ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে পারবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, উল্লেখিত যানবাহনসমূহ চলাচলের ওপর সময়সূচি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ১৯৮৩ সালের মটর ভেহিক্যালস্ অধ্যাদেশ অনুযায়ী এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আগামী ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর জেলার সবগুলো আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী জিতে যাওয়ায় সেগুলোতে নির্বাচন হবে না।

নাশকতার বিরুদ্ধে ‘দাঁড়ানোয়’ সিরাজগঞ্জে সাইফুলকে খুন

তারা বলেন, সোমবার খুন হওয়া সাইফুল সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াত জোটের কর্মীদের নাশকতার মামলায় আদালতে সাক্ষ্য যেমন দিয়েছিলেন, তেমনি যৌথ অভিযানে তথ্য দেয়ার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সংগঠন গোছাতেও ভূমিকা রাখছিলেন।
তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা দাবি করেছেন, সাইফুল হত্যাকাণ্ডে বিরোধী জোটের নেতা-কর্মীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
সিরাজগঞ্জ সদর থানা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সাইফুলকে (৪২) সোমবার বিকালে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছাতিয়ানতলা বাজারে কাছে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই বাজারের কাছেই বাঐতারা গ্রামে তার বাড়ি।
মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়ির সামনে সাইফুলের প্রথম জানাজা হয়। পরে লাশ নেয়া হয় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে। সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর পর লাশ নিয়ে শহরে মৌন মিছিল হয়। বিকালে শহরের মালসাপাড়া কবরস্থানে দ্বিতীয় জানাজার পর তাকে দাফন করা হয়।
জানাজার আগে সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতারা আগামী সাত দিনের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি করেন।  
সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সাইফুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারেও অভিযান চলছে।
এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী জবান আলীর নেতৃত্বে তার সহযোগীরা সাইফুলকে হত্যা করে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে বলে জানান ওসি।
“হত্যার আগে কিলাররা ছাতিয়ানতলী বাজারে মিটিং করে। এরপর লোক মারফত তাকে বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয়। মোটর সাইকেল নিয়ে বাজারেও গেলেও কাউকে না পেয়ে ফিরে আসার পথে বাশের ব্রিজের কাছে তাকে আটকে হত্যা করা হয়,” বলেন তিনি।
বিরোধী জোটের হরতাল-অবরোধের সময় বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় ও সিরাজগঞ্জ-মুলিবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের বাঐতারা এলাকায় গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটে আসছিল।
সদর উপজেলার সয়দাবাদ এলাকার যুবলীগকর্মী হামিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই সব ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাইফুল সাক্ষ্য দেন। এই কারণে বিরোধী জোটের ক্যাডাররা তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।”
২৬ ডিসেম্বর সয়দাবাদ ইউনিয়নে যৌথবাহিনী অভিযানে ২৩ জনকে আটক করা হয় এবং জবান আলীসহ মোহনপুর গ্রামের বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।
“এই কারণে জবান বাহিনীর সদস্যরা সাইফুলের ওপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে,” বলেন পূর্ব মোহনপুর গ্রামের আওয়ামী লীগকর্মী সেলিম আহম্মেদ।
জেলা যুবলীগের সভাপতি মঈন উদ্দিন খান চিনু বলেন, “সয়দাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সংগঠনকে দুর্বল করে দেয়ার জন্য বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে সাইফুলকে হত্যা করা হয়েছে।”
“একাত্তর সালের কায়দায় জামায়াত-বিএনপিকর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যায় মেতে উঠেছে,” বলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম হোসেন আলী হাসান।
দশম সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাবিবে মিল্লাত মুন্না নিহত সাইফুলকে দক্ষ সংগঠন উল্লেখ করে বলেন, “যেখানেই আওয়ামী লীগের দক্ষ সংগঠক গড়ে উঠছে। বেছে বেছে তাদেরই হত্যা করছে বিএনপি-জামায়াত ক্যাডাররা।”
আওয়ামী লীগ নেতাদের এই অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শাহিনুর আলম বলেন, “সাইফুল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমাদের দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।”
একই কথা বলেন জেলা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক সাইদুর বাচ্চুও।
দুই সন্তানের জনক সাইফুলের একমাত্র মেয়ে সোমবার প্রকাশিত প্রাথমিক সমাপনীর ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার এই ভাল ফলাফলেও ছায়া ফেলেছে বাবার মৃত্যু। প্রায় নির্বাক শিশুটি এখন মা-ভাইয়ের সঙ্গে বাবার হত্যাকারীদের শাস্তি দাবি জানিয়েছে।

সিরাজগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ১৫


সিরাজগঞ্জে পুলিশের সাথে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ইবি রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।মঙ্গলবার বিকেলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ প্রায় ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার আগে বিএনপি নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা শেষে পুর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল বের করার চষ্টো করলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এ সময় নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়।জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মির্জা বাবু জানান, দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা শেষে শান্তিপুর্ণ মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। রাবার বুলেটের স্পিন্টারের আঘাতে তিনিসহ জেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. আব্দুর রফিক, শহর যুবদলের সভাপতি রেজাউল জোয়ার্দ্দার, রুবেল, যুবদল কর্মী শিপু, রতন, জুয়েল ও কাকনসহ ১৫জন আহত হয়েছে বলে তিনি দাবী করেছেন।সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম জানান, মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে রাবার-বুলেট টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। 

সিরাজগঞ্জ আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুল ইসলামের জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত ও মালসাপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সিরাজগঞ্জ আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুল ইসলামের জানাযা নামাজ মঙ্গলবার সকালে বাঐতারা গ্রামে নিজবাড়িতে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর জেলা আওয়ামীলীগ অফিসে আনা হয়। আওয়ামীলীগ ও তার সকল নেতাকর্মী ও জনসাধারন শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শহরের মালসাপাড়া কবরস্থানে বাদ জোহর দ্বিতীয় দফা জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩

শিবির আর কোন আন্দোলনে মাঠে নামবে না

দেশে অব্যাহত সহিংসতা ঘটাতে শিবির আর মাঠে নামবে না। গত বছরের নভেম্বর থেকে এ বছরের শেষ পর্যন্ত শিবির টানা সহিংসতার ইতি টানল।

তাদের কথা, বিএনপি মাঠে না নামলে তারা আর মাঠে নামবে না। তারা অযথা আর প্রাণ ঝরাবে না। সোমবার শিবিরের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, ‘বহু প্রাণ গেছে, আর নয়। অনেক ছাত্রকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। চোখ হারাতে হয়েছে। পুলিশ কাছে থেকে গুলি করেছে। চোখ উপড়ে ফেলেছে ।এখন বিএনপি যদি প্রাণ উৎসর্গের মতো ত্যাগ স্বীকার করে, তবেই তারা আবার মাঠে নামার প্রস্তুতি নেবেন বলে জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখা ছাত্রশিবিরের উচ্চ পর্যায়ের আরেক নেতা জানান, শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসাইনকে মেরে হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

তিনি এখনো জেলে চিকিৎসাধীন। দক্ষিণ শাখা ছাত্রশিবিরের অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। রিমান্ড থেকে বাঁচার জন্য পুলিশকে টাকা দিতে গিয়ে অনেক পরিবার পথে বসে গেছে। অনেকের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। এজন্য এখন আর এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে কৌশলে আগাবেন বলে জানান তিনি।

শিবিরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক নেতা বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ আমরা পালন করেছি। সারা দেশে আন্দোলনকে আমরাই টিকিয়ে রেখেছি। অনেক নেতার জীবন বিসর্জন দেওয়ার মাধ্যমে দেশে আন্দোলন টিকে রয়েছে।’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বিএনপির কর্মীদের মাঠে দেখা না গেলেও তারা টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি ঠিকই করবে।’ তাই তার মতে, একা আর কোনো আন্দোলন নয়। বিএনপি মাঠে নামলেই কেবল শিবির রাজপথে থাকবে বলে জানান শিবিরের ওই নেতা।

এ বিষয়ে ডিএমপি পুলিশের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পুলিশের কঠোর নজরদারি ও ব্যাপক তল্লাশির কারণে শিবির কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তারা সুযোগ পেলেই মাঠে নামবে আবার। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও বোমা ও দেশীয় অস্ত্রসহ শিবিরের নেতা-কর্মীরা ধরা পড়ছে বলে জানান ডিএমপির এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। পাশাপাশি ১৮ দলীয় জোটের আন্দোলনে বিএনপির বদলে শিবিরই মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, এ কথাও স্বীকার করেন তিনি।

আ’লীগ প্রার্থী মজিদ মন্ডলের সভামঞ্চে আগুন

সিরাজগঞ্জের  বেলকুচি উপজেলার তামাই হাই স্কুল মাঠে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মজিদ মন্ডলের নির্বাচনী সভামঞ্চে সোমবার সকালে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।

ওসি আব্দুল হাই সরকার জানান, সোমবার বিকেলে ওই স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মজিদ মন্ডলের নির্বাচনী সভা আহবান করা হয়। রোববার রাতেই মঞ্চ তৈরী করা হয়।

সোমবার সকালে দুর্বৃত্তরা মঞ্চে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।

তবে ১৮ দলীয় জোট না নির্বাচনের প্রতিপক্ষরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

সিরাজগঞ্জে আওয়ামী-লীগের নেতাকে সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা।

সিরাজগঞ্জে সদর থানা আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক সাইফুল ইসলাম (৪২)-কে বাড়ি থেকে ঢেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তিনি সদর উপজেলার বাঐতারা গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে। গতকাল পূর্ব বাঐতারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগ সমর্থকরা জবান আলীর বাড়িতে আগুন দিয়েছে। অপরদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে জবান আলীর বড় ভাই আবু শামাসহ ২ জনকে আটক করেছে। 

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, বিকেল ৫টার দিকে সিরাজগঞ্জের আলোচিত শ্রমিক নেতা নাসির উদ্দিন ও শ্যালক টিক্কা জোড়া খুনের অন্যতম আসামি ও যমুনার নৌ-দস্যু হিসেবে পরিচিত ডাকাত জবান আলী ডেকে আনার জন্য সাইফুল ইসলামের বাড়িতে লোক পাঠায়। সে মোতাবেক সাইফুল ইসলাম ছাতিয়ানতলী পুরাতন বাজার এলাকায় পৌঁছলে তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোক্তার হোসেন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘঁনাস্থল থেকে জানান, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা বাড়ি থেকে ঢেকে এনে সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে।  হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা জড়িত সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা চলছে। 

এ বিষয়ে জেলা বিএনপি যুগ্ম সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু ও সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অমর কৃষ্ণ দাস জানান, আমরা ঢাকায় আছি। হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানাতে পারবো না।

শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জে শীতের তীব্রতায়।

পৌষের মাঝ সময়ে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে ১৫ থেকে ১২ ডিঃ সেঃ তাপমাত্রা চলছে। কনকনে ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়ায় শীত জেকে বসায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে যমুনা পাড়ের জেলা সিরাজগঞ্জের মানুষের জনজীবন। 

গত দু’দিন থেকে জেলায় শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শুরু হয়েছে ঘনকুয়াশা। রাত ১১ টার পর থেকে কুয়াশায় ঢাকা পড়ে নগর বন্দর। ভোরে যেন কুয়াশা ধেয়ে আসে। ভোর ৬ টার পর পিচঢালা রাস্তা ভেজা দেখে যে কেউ ভাবতে পারেন রাতে বৃষ্টি হয়েছে। 

শীতে বেশী দূর্ভোগে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। গরম কাপড়ের অভাবে বিপাকে পড়েছে ছিন্নমূল দরীদ্র অসহায় মানুষ। শহরের ফুটপথে গরম কাপড়ের যেন মেলা বসেছে। শহরের ফুটপথের দোকান দেখরে মনে হবে এটি গরম কাপড়ের শহর। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা ফুটপথের গরম কাপড়,কম্বল ক্রয় করছে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারন করছে অনেকে। 

বেগম জিয়ার বাসার গেটে অতিরিক্ত মহিলা পুলিশ

রোববার ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার প্রাক্কালে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসার গেটে অতিরিক্ত মহিলা পুলিশ অবস্থান নিয়েছে।

গুলশান জোনের এডিসি আয়েশা খানম তাদের নেতৃত্বে রয়েছেন। ভোর থেকেই বাসার মেইন গেটের সামনে শক্ত অবস্থানে আছেন ৩০ থেকে ৩৫ জন মহিলা পুলিশ।ভোর থেকে তার বাসায় ১৭ প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বাসার চারিদিকে ৩ টি করে বালুর ট্রাক ও বাশ দিয়ে নতুন করে শক্ত ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।
 
রাতে গণমাধ্যম কর্মীরা বাসার সামনে যেতে পারলেও এখন তাদের ব্যারিকেডের ভেতর ঢুকতে দিচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।

মোটরজান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ৮৮ ধারা অনুযায়ী অন্য আরোহী বহনে নিষেদাজ্ঞা আরোপ

motorশনিবার রাতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে মটরসাইকেলে চালকের সাথে অন্য আরোহী বহন নিষিদ্ধ থাকবে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পযর্ন্ত।

মোটরজান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ৮৮ ধারা অনুযায়ী মটরসাইকেল চালক ব্যাতিত অন্য আরোহী বহনে নিষেদাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
বিআরটিএ এর পরিচালকের সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে, মটরসাইকেল চালকের সাথে অন্য আরোহী চড়ে সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক  কর্মকান্ড চালিয়ে জনগনের জানমালের নিরাপত্তা বিজ্ঞিত করছে। তাই এই আদেশ দেয়া হয়েছে।

সলঙ্গায় বিধবা ২ সন্তানের জননী ধর্ষিত

সিরাজগঞ্জেরসলঙ্গা থানার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভট্টমাঝুড়িয়া গ্রামে ২ সন্তানের জননী এক বিধবা মহিলা (৪৫) বিএনপি নেতা কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছে। ধর্ষক আব্দুল জলিল উল্লেখিত গ্রামের আজিমুদ্দিনের ছেলে ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে। ঘটনার পর স্থানীয় জনতা ধর্ষক বিএনপি নেতাকে গণধোলাই দিয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্রকরে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠেঠে। ধষিতার ছেলে মুকুল ও ফজলু জানায়-রাত ৯টার সময় বিএনপি নেতা ভট্টমাঝুড়িয়া গ্রামের মৃত আজিমুদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিল কৌশলে তার মায়ের ঘরে প্রবেশ করে ধর্ষন করতে থাকে। এ সময় বিষয়টি জানতে পেরে তারা দুই ভাই জলিলকে আটক করে রেখে গণধোলাই দেয়। এক পর্যায়ে প্রভাবশালী আব্দুল জলিল কতিপয় লোকজনের সহযোগীতায় সেখান থেকে চলে যায়। এ ব্যাপারে আব্দুল জলিলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান-শ্যালো মেশিন ঘর থেকে বাড়ী ফেরার পথে মকুল ও ফজলু চোর সন্দেহে তাকে আটক করেছিল। সেখানে ধর্ষনের কোন ঘটনা ঘটেনি। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০১৪: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার

আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০১৪: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।

আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। শুরু হয়েছে দারিদ্র ও পশ্চাৎপদতা হতে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের ঐতিহাসিক কালপর্ব। ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে উন্নয়ন, অগ্রগতির যে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও পথ রচিত হয়েছে, সে পথ থেকে কোনো অপশক্তি আমাদের বিচ্যুত করতে পারবে না।

আমরা রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দ্বিতীয় মেয়াদের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি জাতীয় সনদ ২০১৪ আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আমাদের বিশ্বাস, উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং দেশকে শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে আপনারা আরেকবার দেশ সেবার সুযোগ দেবেন।
শান্তি, গণতন্ত্র উন্নয়ন ও সমুদ্ধির জাতীয় সনদ হবে এবারের নির্বাচনী ইশতেহার।

মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জ72 শ্রোতা, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী সবার জন্য রইলো বড়দিনের শুভেচ্ছা।

সিরাজগঞ্জ72 শ্রোতা, পাঠক, শুভানুধ্যায়ী সবার জন্য রইলো বড়দিনের শুভেচ্ছা।

সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের বিদ্রোহী প্রার্থী আ’লীগ থেকে বহিস্কার

সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান রতনকে বহিস্কার করা হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওই আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থ হওয়ার কারণে সোমবার সন্ধ্যায় দলীয় সিদ্ধান্তে তাকে বহিস্কার করা হয়। এই মর্মে বেলকুচি উপজেলা শহরে মাইকিং করা হয়েছে।

এসম্পর্কে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কেএম হোসেন আলী হাসান জানান, জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত ও গঠনতন্ত্রের বিধি অনুযায়ী তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
বিস্মিল্লাহির রাহ্মানির রাহিম প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। ভয়ংকর রাষ্ট্রীয়-সন্ত্রাস কবলিত দেশ। প্রতিদিন রক্ত ঝরছে। বিনাবিচারে নাগরিকদের জীবন কেড়ে নেয়া হচ্ছে। ঘরে ঘরে কান্নার রোল। শহরের সীমানা ছাড়িয়ে নিভৃত পল্লীতেও ছড়িয়ে পড়েছে আতংক। সকলের চোখে অনিশ্চয়তার ছায়া। নির্বিকার শুধু সরকার। তাদের লক্ষ্য একটাই, যে-কোনো মূল্যে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত রাখা। তাই তারা ভিনদেশী হানাদারদের মতো ‘পোড়ামাটি নীতি’ অবলম্বন করে চলেছে। এমন পরিস্থিতি আমরা কখনো চাইনি। এই দেশের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার আছে। এ দেশের জনগণের প্রতি আমাদের মমতা আছে। তাই আমরা বরাবর সমঝোতার কথা বলেছি। শুধু মুখে বলা নয়, আমরা সমঝোতার জন্য সব রকমের চেষ্টা করছি। সকল দলের অংশগ্রহনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। সে প্রস্তাব আমাদের পক্ষ থেকে পার্লামেন্টেও পেশ করা হয়েছে। আমরা বলেছি, আসুন, এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করে একটা ঐক্যমতে পৌঁছাই। সরকার তাতেও রাজি হয়নি। তারা অনড় অবস্থান নিলেন। ক্ষমতায় থেকে, পার্লামেন্ট বহাল রেখেই তারা নির্বাচন করবেন। আমরা চাইলে তাদের সরকারে কয়েকজন মন্ত্রী দিতে পারবো শুধু। এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে একটি দল কীÑধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হয়েছে, তা আজ দেশবাসীর সামনে পরিস্কার। আমরা একটা সমঝোতার উদ্যোগ নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতিকেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম। রাষ্ট্রপতির পক্ষে তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে দেশবাসী এর মাধ্যমে সমঝোতার ব্যাপারে আমাদের আগ্রহ ও আন্তরিকতার প্রমাণ পেয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো এসে সরকারের সঙ্গে বিরোধী দলের বৈঠকের উদ্যোগ নেন। আমরা তাতেও সাড়া দিয়েছি। যদিও মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক আমাদের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেয়া হয়নি। বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। এমনকি, একতরফা নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়নি। অর্থাৎ, আলোচনার একট সুষ্ঠু পরিবেশ সরকারের তরফ থেকে সৃষ্টি করা হয়নি। তা সত্ত্বেও আলোচনার মাধ্যমে সংকট সুরাহা করার ব্যাপারে আন্তরিকতার সর্বোচ্চ প্রমাণ আমরা দিয়েছি। দু:খের বিষয়, তিন দফা আলোচনা সত্ত্বেও সরকারের অনড় মনোভাবের কারণে কোনো সমঝোতায় পৌঁছা সম্ভব হয়নি। তারা সকল দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়নি। ক্ষমতায় থেকে নির্বাচনের নামে কী-ধরণের প্রহসন করা তাদের উদ্দেশ্য, তা সকলের সামনে এর মধেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। আসলে কেবল লোক দেখানোর জন্য তারা আলোচনায় এসেছিলেন। এটা ছিল সময় ক্ষেপণে তাদের এক প্রতারণাপূর্ণ কৌশল। এর আড়ালে তারা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের পথেই এগিয়ে গেছে। আপনারা জানেন, তৃতীয় দফা বৈঠকে আমাদের দেয়া প্রস্তাব নিয়ে সরকারী দল তাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে আবার ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছিল। তারা সে কথাও রাখেনি। আমাদেরকে আর কিছু জানানোও হয়নি। সংবাদ-মাধ্যম থেকে আমরা জেনেছি যে, তারা বলেছে, দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার আর কোনো অবকাশ নেই। নির্বাচনের নামে একতরফা এক নজীরবিহীন প্রহসনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে তারা। উপস্থিত সাংবাদিক বন্ধুগণ, সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে ১৯৯৫-৯৬ সালে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টিকে সঙ্গী করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের দাবিতে আন্দোলনের নামে দেশজুড়ে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল আওয়ামী লীগ। হত্যাকান্ড, ধ্বংসযজ্ঞ ও অর্থনৈতিক বিনাশই ছিল তাদের আন্দোলনের পন্থা। গান পাউডার দিয়ে যানবাহন জ্বালিয়ে তারা নিরপরাধ নাগরিকদের হত্যা করেছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর তারা দীর্ঘদিন অচল করে রেখেছে। সে সময় বিএনপি সরকার দেশ পরিচালনা করছিল। আমরা বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলাম। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বন্ধুরাও মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের অনমনীয়তা ও সন্ত্রাস-আশ্রয়ী কার্যকলাপের কারণে কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি। আমরা প্রথম দিকে তাদের দাবির সঙ্গে একমত ছিলাম না। কিন্তু সকলের অংশগ্রহনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে আমরা তাদের দাবি পূরণে সম্মত হই। তবে তার আগেই আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের সব সদস্য জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করে। তখন সংবিধান সংশোধন করার মতো দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিএনপি’র ছিলনা। তাই কেবলমাত্র সংবিধান সংশোধনের জন্য পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে একটি স্বল্পমেয়াদী জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য আমরা নতুন নির্বাচন দিই। আমরা ঘোষনা করি, এটি একটি নিয়ম-রক্ষার নির্বাচন এবং এই নির্বাচনে জিতলে আমরা দেশ পরিচালনা করবো না। আমরা সে কথা রেখেছিলাম। সংবিধান সংশোধন করে জাতীয় নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর আমরা সংসদ ভেঙ্গে দিই এবং সরকার পদত্যাগ করে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে দিয়ে, ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করার হীন উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে সংবিধানের বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করেছে। সে কারণেই আজকের সংকটের সূত্রপাত ঘটেছে। এই হঠকারিতার কারণে দেশে যা-কিছু ঘটছে, তার দায়-দায়িত্ব আওয়ামী লীগের নেতাদেরকেই বহন করতে হবে। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা হচ্ছে, দুই প্রধান রাজনৈতিক পক্ষের মধ্যে একটি ঐক্যমত ও সমঝোতা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সকলের অংশগ্রহনে একটি সুষ্ঠ, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। এটা জানা সত্ত্বেও, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে, তাদের ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করার যে কূটকৌশল গ্রহন করেছে, তার বিষময় কুফল আজ দেশবাসী পাচ্ছে। সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই বলে থাকেন যে, পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তিনি জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু সংবিধানের এই বিতর্কিত সংশোধনীর আওতায় তিনি আজ নির্বাচনের নামে যে প্রহসন পরিচালনা করছেন তাতে জনগণের ভোট ছাড়াই ১৫৪ জন এমপি হয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য তাদের জনগণের ভোটের কোনো প্রয়োজন হয়নি। দেশের মোট ভোটারের শতকরা প্রায় ৫৩ জনের ভোটের অধিকার এই প্রক্রিয়ায় কেড়ে নেয়া হয়েছে। বাকী আসনগুলোতেও যারা প্রার্থী আছেন তাদেরও কোনো উপযুক্ত ও যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। সেখানেও ভোটাররা বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে। কারণ শুধু বিএনপি নয়, দেশের উল্লেখযোগ্য সকল বিরোধী দলই এই নির্বাচনী প্রহসন বর্জন করেছে। শুধু আওয়ামী লীগ এবং তাদের জোটের একাংশ এই একতরফা প্রহসনে শামিল হয়েছে। এই নির্বাচনী তামাশা কোনো ইলেকশন নয়, এটা নির্লজ্জ সিলেকশন। জনগণের ভোটাধিকার হরণের এমন জঘণ্য প্রহসন আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক ঘৃণ্য কলঙ্কের অধ্যায় হয়ে থাকবে। শাসকদলের এই অপকৌশলের কথা আমরা বিগত কয়েক বছর ধরেই বারবার বলে আসছিলাম। দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ এই চরম অত্যাচারী ও অযোগ্য সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ কোনো নির্বাচনে জনগণের ভোটে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সাহস তাদের নেই। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমাদের দাবি গণদাবি ও জাতীয় আকাঙ্খায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে শতকরা ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন করার পক্ষে। যখন সারাদেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাদের সঙ্গে রাজপথে নেমে শান্তিপূর্ণভাবে এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষনা করছিলেন, তখন সরকার শান্তিপূর্ণ সমাবেশের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে। দুনিয়ার সব গণতান্ত্রিক দেশে জনগণের ও বিরোধী দলের রাজপথে নেমে শান্তিপূর্ণ পন্থায় তাদের দাবি তুলে ধরার অধিকার থাকলেও বাংলাদেশে তা নেই। এখানে কেবল সরকারের সমর্থকরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ছত্রছায়ায় রাজপথে সশস্ত্র মহড়া দিতে পারে। অথচ আমাদের সংবিধানে সকলকেই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠানের অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দিয়ে কারাগারগুলো ভরে ফেলা হয়েছে। আমাদের সদর দফতর ও শাখা কার্যালয়গুলো অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। নির্বিচারে চলছে হত্যা, গুম, নির্যাতন, গুলি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ, গ্রেফতার ও অপহরণ। সুপরিকল্পিতভাবে এই সন্ত্রাসী পরিবেশ তৈরি করে দেশের জনগণ ও বিরোধী দলকে আতংকিত ও পলায়নপর রেখে সরকার তাদের নির্বাচনী প্রহসনের নীল-নক্শার বাস্তবায়ন শুরু করেছে। প্রিয় বন্ধুরা, এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুটি গুরুতর কথা বলেছেন। এক. সমঝোতার মাধ্যমে আসনগুলো ভাগাভাগি করেছেন তারা। ফলে ১৫৪ আসন ভোট ছাড়াই তারা পেয়ে গেছেন। বিএনপি অংশ নিলে এভাবেই আমাদেরকেও আসন দেয়া হতো। দুই. বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় একদিক থেকে ভালোই হয়েছে। জনগণকে আর বিরোধী দলকে ভোট দিতে হলো না। এতে জাতি অভিশাপমুক্ত হয়েছে। তার কথাতেই পরিস্কার হয়েছে, নির্বাচন নয়, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে আসন ভাগাভাগির প্রহসনই তিনি চেয়েছেন এবং এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, যদি বিরোধীদল এতে অংশ নিতো তবুও তিনি একই রকম প্রহসনের চেষ্টাই করতেন। দ্বিতীয়ত: বিরোধীদলহীন নির্বাচনই তাঁর কাম্য। একদলীয় ব্যবস্থাতেই তিনি বিশ্বাসী। সেই বিশ্বাস থেকেই তিনি এমন ব্যবস্থা করেছেন, যাতে জনগণ বিরোধী দলকে ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ না পায়। এতে তিনি পরিতৃপ্তিবোধ করছেন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই যে, আসন ভাগাভাগি করার আপনি কেউ নন। এটা জনগণের অধিকার। তারাই ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। সেই অধিকার আপনি কেড়ে নিয়েছেন। আমরা সকলেই জানি যে, কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি নয়, জনগণই প্রজাতন্ত্রের মালিক এবং সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস। তারা একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য, সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের তাদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করেন। সেই প্রতিনিধিদের সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তে সরকার গঠন ও রাষ্ট্র পরিচালনার অধিকার অর্জিত হয়। এটাই গণতন্ত্রের বিধান। এই বিধানের অন্যথা হলে গণতন্ত্র থাকেনা। সেটা হয়ে দাঁড়ায় অবৈধ স্বৈরাচার। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের পথ ছেড়ে সেই অবৈধ স্বৈরাচারের পথেই পা দিয়েছে। ইতিহাসের অমোঘ বিধানে এই পা চোরাবালিতে আটকে যেতে বাধ্য। আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, ভোট ও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া ১৫৪ জন এবং কার্যকর ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া বাকী যাদেরকেই আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করবে, তারা কেউই বৈধ জনপ্রতিনিধি হবে না। কেননা, জনগণ তাদেরকে ভোট দিয়ে কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করছে না। কাজেই তাদের সমর্থনে গঠিত সরকার হবে সম্পূর্ণ অবৈধ, অগণতান্ত্রিক ও জনপ্রতিনিধিত্বহীন। তেমন একটি অবৈধ সরকারের আদেশ নির্দেশ মান্য করতে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং জনগণের কোনো বাধ্যবাধকতা থাকেনা। নৈতিক ও জনসমর্থনের দিক বিবেচনায় নিলে এবং বারবার সংবিধানের বেপরোয়া লঙ্ঘণের কারণে এই সরকার অনেক আগেই দেশ পরিচালনার অধিকার ও বৈধতা হারিয়েছে। তবুও সাংবিধানিক সংকট ও শূণ্যতা চাইনি বলেই এখনো সরকারের কর্তৃত্ব ও অস্তিত্বের প্রতি আমাদের স্বীকৃতি অব্যহত রয়েছে। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনী প্রহসন করতে গিয়ে তারা নজীরবিহীন এক চরম জটিলতা সৃষ্টি করেছে। যে আসন শূণ্য হয়নি, সেখানে নতুন করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের প্রশ্ন অবান্তর। বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের এক নিকৃষ্ট নজীর সৃষ্টি করেছে প্রতিটি আসনে এই দ্বৈত প্রতিনিধিত্ব। এই পরিস্থিতি যারা সৃষ্টি করেছে তাদেরকেই এর নিরসনের দায়িত্ব নিতে হবে। সাংবাদিক বন্ধুগণ, ১৯৭৫ সালে এই আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। নিজেদের লুন্ঠন ও শাসন-ক্ষমতা পাকাপোক্ত রাখতে সমাজতন্ত্রের নামে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল। সব দল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং জনগণের সকল মৌলিক ও মানবিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। বিনা ভোটে সরকারের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছিল। নির্বাচন ছাড়াই তাদের নেতাকে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত করে ঘোষণা করেছিল: ‘যেন তিনি নির্বাচিত।’ প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণের সম্মতি ছাড়াই এই অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপগুলো তারা গ্রহন করেছিল পার্লামেন্টারী ক্যু’র মাধ্যমে। রাষ্ট্রশক্তির নিপীড়ন চালিয়ে এবং পেশীশক্তির প্রয়োগে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগণের সকল প্রতিবাদ-বিক্ষোভকে স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আজ আবারো আওয়ামী লীগ সেই কলঙ্কিত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে একটু ভিন্ন আদলে। জনগণের অধিকার হরণকারী চতুর্থ সংশোধনীর মতো এবারের বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী তারা একতরফাভাবে ব্রুট মেজরিটির জোরে সংসদে পাস করেছে। এরপর তারা ধাপে ধাপে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে গণতন্ত্র হত্যার পথে। প্রহসন ও কারসাজির মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ উদ্যোগের মাধ্যমে তারা গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকছে। বর্তমান অবস্থায় প্রাচীন একটি ফরাসী প্রবাদের অনুকরণে আমি আজ দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি বাক্য উচ্চারণ করতে চাই: ‘ডেমোক্রেসি ইজ ডেড, লং লিভ ডেমোক্রেসি।’ সমবেত সাংবাদিকবৃন্দ, দেশে এখন নির্বাচনের নামে সরকারের ক্ষমতার মেয়াদ বাড়িয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে ন্যক্কারজনক যে তামাশা চলছে তাতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বৃটিশ সাময়িকী ‘ইকোনমিস্ট’ তাদের প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে, ‘শাসকেরা জিতবে, হারবে বাংলাদেশ’। শুধু শাসক দল আওয়ামী লীগ জিতলে কথা ছিলনা। যে বিজয়ের অর্থই হচ্ছে দেশের পরাজয়, বাংলাদেশের হেরে যাওয়া, সেটি আমরা মেনে নিতে পারি না। এদেশের জনগণ জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ করে যে-দেশ সৃষ্টি করেছে, তারা সেই দেশের পরাজয় মেনে নেবে না। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে এদেশের মানুষ যে গণতন্ত্র এনেছে, সেই গণতন্ত্রকেও তারা কেড়ে নিতে, পরাজিত হতে দিবে না। এদেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার আদায় করবেই। বাংলাদেশের জনগণ শান্তি, নিরাপত্তা, নিশ্চয়তা ও সুুষ্ঠু অর্থনৈতিক তৎপরতার উপযোগী পরিবেশ চান। দীর্ঘ মেয়াদে যাতে বাংলাদেশ অশান্ত, অনিরাপদ ও অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ছেয়ে না যায়, তার জন্যই গ্রামে গঞ্জে, শহরে বন্দরে, পাড়ায় মহল্লায় মানুষ আজ লড়াইয়ে নেমেছে। এ লড়াই গণতন্ত্র রক্ষার, অধিকার প্রতিষ্ঠার, জীবন রক্ষার, দেশ বাঁচাবার, শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনবার। জনগণের বিজয় অর্জন পর্যন্ত এই লড়াই চলতে থাকবে এবং আমরা জনগণের সঙ্গেই থাকবো ইনশাআল্লাহ্। গণবিচ্ছিন্ন, সন্ত্রাসী, গণহত্যাকারী ও মহালুটেরা সরকার জানতো, তাদের এই কারসাজির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে উঠবেই। তাই তারা খুবই সুকৌশলে পরিকল্পিত পন্থায় প্রহসনের নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারের রায়ের বাস্তবায়নকে একই সময়সীমায় এনে দাঁড় করিয়েছে। জনগণের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অন্তর্ঘাত সৃষ্টির মাধ্যমে নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করে, আগুনে ঝলসিয়ে দিয়ে তারা এর দায় বিরোধী দলের ওপর চাপাতে চাইছে। ২০০৬ সালে যারা প্রকাশ্য রাজপথে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে বহু মানুষকে হত্যা করে মৃতদেহের উপর পৈশাচিক উল্লাস করেছে সেই আওয়ামী লীগ আজ মানবতা ও শান্তির বাণী শোনাচ্ছে। অপরদিকে জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়ে চালাচ্ছে অপপ্রচার। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংঘঠিত হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের বিচার আমরাও চাই। তবে বিএনপি বারবার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের সঙ্গে না জড়িয়ে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইনগত মানদন্ড বজায় রেখে পরিচালনার পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেছে। আমাদের পরামর্শ মেনে সরকার যদি বিষয়টিকে নিয়ে অতি-রাজনীতি না করতো, তাহলে আজ দেশে-বিদেশে এ নিয়ে এতো সংশয় সৃষ্টি ও প্রশ্ন উত্থাপিত হতো না। বাংলাদেশের অনেক বন্ধু রাষ্ট্র, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, এমনকি জাতিসংঘ পর্যন্ত বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও মান নিয়ে যে আপত্তি তুলছে, তাতে আমাদের অনেক বেশী সতর্ক ও সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তবে এ বিষয়ে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ যে-প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, তা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদেরকে মর্মাহত করেছে। পাকিস্তানের ভেতরই দায়িত্বশীল মহল থেকে এর প্রতিবাদ করা হচ্ছে। বিএনপির তরফ থেকে এ বিষয়ে আগেই আমাদের প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। আজ আমি আবারো বলছি, ১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছি। পাকিস্তান এখন সহ¯্র মাইল দূরবর্তী এক পৃথক রাষ্ট্র। ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের সরকারই ত্রিদেশীয় চুক্তি সই করেছিল। সেই চুক্তিতে পাকিস্তানী যুদ্ধ অপরাধীদের বিচার না করার এবং অতীত তিক্ততা ভুলে সামনে অগ্রসর হবার অঙ্গীকার তারাই করেছিলো। এরপর কোনো ইস্যু নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হলে তা কূটনৈতিকভাবেই নিরসন করা উচিত। কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে সরকার এই প্রসঙ্গকে পুঁজি করে দেশের ভেতরে নোংরা রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। এই রাজনৈতিক খেলা বন্ধ করুন। সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। আমি বারবার বলেছি, আজ আবারো বলছি, নির্দোষ সাধারণ মানুষের জানমালের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে দিকে সকলের সচেতন দৃষ্টি রাখতে হবে। একদিকে হত্যা, নির্যাতন, গুম অপরদিকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অন্তর্ঘাত সৃষ্টির অপকৌশল সরকার নিয়েছে। বিচারপতির বাড়িতে বোমা হামলা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার সময় শাসক দলের লোকেরা ধরা পড়লেও বিচার হচ্ছে না। দোষ দেয়া হচ্ছে বিরোধী দলের ওপর। কাজেই সকলকে খুব বেশি সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। বাংলাদেশের জনগণই আমাদের শক্তির উৎস। তাদের জন্য এবং তাদেরকে নিয়েই আমাদের সংগ্রাম। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জীবন ও সম্পদের উপর হামলার প্রকাশ্য উস্কানি দিয়েছেন। জনপ্রতিরোধ গড়ে তুলেই এ ধরনের হামলার মোকাবিলা করতে হবে। সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে গণপ্রহরার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্য ক্ষুন্ন হতে দেয়া যাবে না। এ প্রসঙ্গে আমি গত ২১ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে দেয়া আমার বক্তব্যের পুনরুল্লেখ করে বলতে চাই কোন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ হামলার শিকার হলে আগামীতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে অপরাধীদের চিহ্নিত ও শাস্তিবিধান নিশ্চিত করা হবে। দেশব্যাপী সন্ত্রাস, নাশকতা, হানাহানি উস্কে দিয়ে, অন্তর্ঘাত সৃষ্টি করে সরকার প্রহসনের নির্বাচনকে আড়াল করার যে অপকৌশল নিয়েছে এবং স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়নের নামে তারা তাদের অপশাসন ও নিষ্ঠুর লুন্ঠনকে দীর্ঘায়িত করার যে নীল-নক্শা প্রনয়ণ করেছে, তা ব্যর্থ করে দিতে হবে জনগণের সম্মিলিত প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। দেশে আজ ভয়ংকর অনিশ্চিত এক নৈরাজ্যকর অবস্থা সৃষ্টি করেছে সরকার। বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে রাজপথে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। এখন শুরু হয়েছে ঘরে ঢুকে হত্যা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে যৌথবাহিনী গঠন করে তাদেরকে চরমভাবে অপব্যবহার করছে সরকার। তালিকা করে বেছে বেছে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা, গ্রেফতার, অপহরণ, নির্যাতন করা হচ্ছে। জনগণের বিরুদ্ধে পরিচালিত এই বেআইনী ও নৃশংস অভিযানে দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত করার অপচেষ্টাও শুরু হয়েছে। পিলখানা হত্যাযজ্ঞ ও শাপলা চত্ত্বরে রক্তপাতের খলনায়কেরা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে দেশবাসীর মুখোমুখি দাঁড় করাবার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। জনগণের সম্পদ দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীকে প্রহসনের নির্বাচনে জড়িত করে বিতর্কিত না করার জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারের নির্দেশে যৌথবাহিনীর অভিযানে শাসকদলের সশস্ত্র ক্যাডাররাও অংশ নিচ্ছে। তারা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও মহিলাদের পর্যন্ত আটক করে নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে। অনেকের হত্যার পর লাশ গুম করা হচ্ছে। তাদের ঘর-বাড়ি লুটপাট, বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া এবং আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে চলছে গুপ্তহত্যা ও গুম করা। এ ধরণের পৈশাচিকতার তুলনা কেবল ভিনদেশী হানাদার বাহিনীর বর্বরতার সঙ্গেই করা চলে। আজ লক্ষীপুর, মেহেরপুর, সিরাজগঞ্জ, নীলফামারী, বগুড়া, জয়পুরহাট, সীতাকুন্ড, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের তান্ডব। প্রধানমন্ত্রী ও শাসক দলের প্রকাশ্য হুমকির পর তা’ আরো বিস্তৃত ও নৃশংস হয়ে উঠেছে। এর দায়-দায়িত্ব উস্কানি ও নির্দেশদাতা সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। আমি আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘণ করে দেশের নাগরিকদের ওপর এই নির্মম দমন-অভিযানের প্রতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা সমূহের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়ন বন্ধে সকলকে সোচ্চার হবার এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি। বাংলাদেশের বিরাজমান সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ ও নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমি জাতিসংঘকে আবারো ধন্যবাদ জানাই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, সংসদ, রাজনৈতিক দল, বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ, সংবাদ মাধ্যম, মানবাধিকার সংস্থা সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষায় যেভাবে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন, তার জন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি আশা করি, বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শান্তি-স্থিতি, আইনের শাসন ও জনগণের অধিকার রক্ষায় তারা আরো কার্যকর ভূমিকা রাখবেন এবং পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার জনগণের পক্ষে বলিষ্ঠভাবে দাঁড়াবেন। দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংক নারীর ক্ষমতায়ন ও ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের মাধ্যমে দারিদ্রমোচনের ক্ষেত্রে অর্জিত অগ্রগতিকে রক্ষার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন। আমি এই আন্দোলনকেও জনগণের অধিকার রক্ষার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ বলেই মনে করি। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল প্রহসনের নির্বাচনকে বর্জন করে মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষার দাবিতে আজ অটল ভূমিকা পালন করছে। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। সকলের প্রতি আমার আহবান, নিজ নিজ রাজনৈতিক বিশ্বাস, কর্মসূচি ও আদর্শ অক্ষুন্ন রেখেই আসুন, দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষায়, বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে একদলীয় স্বৈরশাসনের দিকে যাত্রাকে রুখে দিতে আমরা এক হয়ে লড়াই করি। এই সংগ্রামে বিজয়ের পর আমরা সকলে মিলে গড়ে তুলবো অখন্ড জাতীয় সত্ত্বা। দূর করবো হানাহানির অন্ধকার। কায়েম করবো সুশাসন। ফিরিয়ে আনবো আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার। সমঝোতার ভিত্তিতে প্রধান জাতীয় সমস্যা ও বিরোধীয় ইস্যুগুলোর নিষ্পত্তি করবো। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করবো। বাংলাদেশকে উৎপাদন ও কর্মমুখর করে সামনের দিকে এগিয়ে নেবো। দেশের সিভিল সমাজ ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সংগঠনকে আমি ধন্যবাদ জানাই শান্তি, সমঝোতা ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতির পক্ষে সোচ্চার হবার জন্য। আমি সাংবাদিক বন্ধুদেরকেও ধন্যবাদ জানাই।

ধুম থ্রি ১০৭ কোটি ৬১ লাখ রুপি

২০ ডিসেম্বর ভারতের তিনটি ভাষায় মুক্তি পাওয়া আমির খান এবং ক্যাটরিনা কাইফ অভিনীত ‘ধুম থ্রি’ মাত্র তিন দিনেই আয় করেছে ১০৭ কোটি রুপি! মুক্তির পরপরই উদ্বোধনী দিনের সর্ব্বোচ্চ আয়ের রেকর্ডের পর এবার দ্রুততম সময়ে একশ’ কোটি রুপি আয়ের রেকর্ড গড়ল ছবিটি।

ভিজয় কৃষ্ণা আচারিয়া পরিচালিত জনপ্রিয় বলিউডি অ্যাকশন সিরিজ ‘ধুম’-এর তৃতীয় সিকুয়াল ‘ধুম থ্রি’তে খলচরিত্রে অভিনয় করেছেন আমির খান। তার বিপরীতে অ্যাক্রোব্যাটের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ক্যাটরিনা কাইফ। আগের দুবারের মতোই বাইক চালানোতে দুই তুখোড় পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় ছিলেন অভিষেক বচ্চন এবং উদয় চোপড়া।

এ ব্যাপারে বলিউডি বিশ্লেষক তারান আদর্শ টুইটারে বলেন, ‘ধুম থ্রি’র তিনদিনের আয়ের হিসাব হল: ভারতে ১০৭ কোটি ৬১ লাখ রুপি এবং বাইরের দেশগুলোতে মোট ৬২ কোটি ৯৫ লাখ। সবমিলিয়ে বিশ্বজুড়ে সিনেমাটির আয় ১৭০ কোটি ৫৬ লাখ রুপি। ঐতিহাসিক!”

তারানের টুইট থেকে জানা যায়, কেবল রোববারেই ‘ধুম থ্রি’-র হিন্দি, তামিল এবং তেলেগু সংস্করণের আয় ছিল সর্বমোট ৩৮ কোটি ৩ লাখ রুপি। সিনেমাটির প্রযোজনা সংস্থা ইয়াশ রাজ ফিল্মসের এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, শুক্রবার মুক্তির দিনে সিনেমাটি আয় করে ৩৬ কোটি ২২ লাখ রুপি; শনিবার ‘ধুম থ্রি’র আয় ৩৩ কোটি ৩৬ লাখ রুপি। আগের দুদিনের হিসাব অনুযায়ী মোট আয় দাঁড়ায় ১০৭ কোটি ৬১ লাখ রুপিতে।

সিরাজগঞ্জে মহাসড়কে পুলিশের গুলিতে নিহত ২।

মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে কামারখন্দে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে নিহত এই দুজন ডাকাত বলে পুলিশ দাবি করলেও তাদের স্বজনরা বলছেন, তারা নসিমন চালাতেন।

বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জে সেনাবাহিনী!

জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর একটি সুত্র জানায়, শীতকালীন মহড়ার অংশ হিসেবে সিরাজগঞ্জে সেনাবাহিনী এসেছে। একজন লে: কর্ণেল পদমর্যাদার নেতৃত্বে কর্মকর্তা ও সৈনিক মিলিয়ে প্রায় দেড়শত সদস্য রয়েছে বলে জানা গেছে।

পুলিশের রহস্য জনক আচরন

আজ যখন ইমরান এইচ সরকার কে পুলিশ মারছিল -কয়েকটা পুলিশ চিৎকার দিয়ে বলে মার এই নাস্তিকের বাচ্ছা টারে।
কাল যখন গণজাগরণ কর্মী বনানী দিদি কে পুলিশ মারছিল -তখন কয়েক জন পুলিশ বলে মার মালাউনের বাচ্ছা কে।
একজন যখন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়েছিল তখন পুলিশ বলে মার ঐ মাদারচুদ মুক্তিযোদ্ধা রে- তখন ঐ মুক্তিযদ্ধার চুখে জল দেখা যায়, লজ্জায় কাউকে কিছু বলেন নি।
আওয়ামী মহিলা এম পি তারানা হালিম একটি চ্যানেল সাংবাদিকরে যখন পুলিশের সমালোচনা করে সাক্ষাৎ কার দিচ্ছিলেন -তখন পিছন থেকে এক পুলিশ অফিসার বলে এই পতিতা অভিনেত্রীরে সরা অখান থেকে।
তাছাড়া কয়েকজন কর্মী কে চারদিক দিয়ে ঘিরে পুলিশ চোরের মত লাঠি পেটা করে।

সিরাজগঞ্জে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুওলিকা দাহ ও বিক্ষোভ।

ছবিঃ আব্দুল খালেক তালুকদার
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে শিষ্টাচার বর্হিভূত নগ্ন হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্র লীগের নেতা কর্মীরা প্রধান সড়কে মিছিল করেছে। 

মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
 
জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় পাকিস্তান পার্লমেন্টে নিন্দা প্রস্তাবের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ।

এদিকে শাহজাদপুরেও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিলটি উপজেলা শহর প্রদক্ষিণকালে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় কাভার্ডভ্যান, ডাকাতের কবলে ম্যানেজার

বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের আলোকদিয়ায় এসএ পরিবহনের মাল বোঝাই একটি কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রন হারিয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছে। এ দুর্ঘটনাস্থলে আসার পথে একই সংস্থার ম্যানেজার ডাকাতের কবলে পড়েন। এসময় ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে তার কাছে রক্ষিত প্রায় ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কাভার্ডভ্যানটি ঢাকা থেকে আসার উত্তরবঙ্গে আসার পথে উল্লেখিত স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে চালক হাবিবুর রহমানসহ ৩ জন আহত হয়েছে এবং কাভার্ডভ্যানটি রাস্তার পার্শ্বের একটি দোকানের মধ্যে ঢুকে পড়ায় দোকানটিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

এদিকে, এসএ পরিবহনের কাভার্ডভ্যানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবরে ওই প্রতিষ্ঠানের টাঙ্গাইল শাখার ম্যানেজার তাজুল ইসলাম মোটরসাইকেল যোগে দুর্ঘটনাস্থলে আসার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের কাশেম মোড় এলাকায় একদল ডাকাতের কবলে পড়েন। এসময় ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে তার কাছ থেকে উল্লেখিত নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

একতরফা নির্বাচন করে সরকার স্বৈরতন্ত্র কায়েম করছে - রুমানা মাহমুদ এমপি


সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদ এমপি বলেছেন, গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জনগণের অংশগ্রহণ এবং জনমতের প্রতিফলন ঘটে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। অথচ সরকারের একরোখা মানসিকতা, গোঁয়ার্তুমি, হত্যা নির্যাতন করে প্রার্থী বিহীন একতরফা নির্বাচন করে গণতন্ত্রের লেবাসে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করছে।

বুধবার বিকালে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত এক মতবিনিয়ম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জেলা বিএনপির সহসভাপতি গাজী ফখরুল ইসলাম তনুর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এ্যাড. আমানউল্লাহ মন্ডল, গাজি আজিজুর রহমান দুলাল, অধ্যক্ষ গাজি আব্দুল আজিজ সরকার, এ্যাড. রফিক সরকার, আলমগীর হোসেন জুয়েল, খ ম রোকনুজ্জামান, দিলীপ কুমার, সুলতানা তালুকদার রীন, শামিমা বেগম প্রমুখ।

যৌথবাহিনীর অভিযান এবার সিরাজগঞ্জে

সিরাজগঞ্জে শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে যৌথবাহিনীর কম্বিং অপারেশন। যৌথবাহিনীর এই চিরুনি অভিযানে মাঠে থাকছে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত রোববারের আইন শৃংখলা সংক্রান্ত বৈঠক থেকেই এমন সিদ্ধান্তের কথা যৌথবাহিনীকে বলা হয়েছে।

যৌথবাহিনীর চিরুনি অভিযান নামে এ অভিযান চলবে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। নাশকতায় ইন্ধনদাতা ও জড়িতদের আটক করাই হবে অভিযানের মূল উদ্দেশ্য।

জানা গেছে, নাশকতার ভিত্তিতে দেশের কয়েকটি জেলাকে স্পর্শকাতর বলে উল্লেখ করেছে আইনশৃংখলা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ জেলাও রয়েছে। অন্যান্য জেলাগুলো হচ্ছে- সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম, ফেনী, বগুড়া, রাজশাহী, লালমনিরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, কুমিল্লা ও মেহেরপুর।

সিরাজগঞ্জে বিএনপির ২ নেতা গ্রেপ্তার

সিরাজগঞ্জে পুলিশ অভিযানে বিএনপির ২ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু এবং বহুলী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা সানাউল্লাহ মিয়া।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম জানান, বাবু সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত এমপি আওয়ামী লীগ নেতা প্রফেসর ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নার বাড়িতে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামী। মুক্তিযোদ্ধা সানাউল্লাহ মিয়া সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়ন পরিষদ অফিস ভাংচুর মামলার আসামী।

সিরাজগঞ্জ জামাত শিবিরের নাশকত।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড (চণ্ডীদাসগাতী) আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর আলমের বাড়িতে আসবাব পুড়ে আছে এখানে-সেখানে।
কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে জামায়াত-শিবিরের লোকজন তাঁর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি কোনোমতে প্রাণ বাঁচান। ঘটনার পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও নিরাপত্তাহীনতার কারণে এখনো এলাকায় ফেরেননি তিনি।
একই অবস্থা সিরাজগঞ্জ বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের সভাপতি নুরুন্নবী, ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ইকবাল হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আবদুল ওয়াহাব তালুকদার, ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ রানাসহ অনেকের। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী হয়েও তাঁরা সিরাজগঞ্জ শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নিজের গ্রামে ফেরার সাহস পাচ্ছেন না 
শিয়ালকোল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক বুলবুল আহমেদ জানান, জামায়াত-শিবির-অধ্যুষিত চণ্ডীদাসগাতী গ্রামে তাঁদের আট ভাইয়ের বাড়িঘর পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আহাজারি করে বুলবুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। সিরাজগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। আর আমরা নিজেদের ভিটায় ফিরতে পারছি না। উদ্বাস্তুর মতো এক কাপড়ে থাকতে হচ্ছে আমাদের।’
জেলা পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সিরাজগঞ্জ-নলকা আঞ্চলিক সড়কের দক্ষিণ পাশের বিশাল গ্রাম চণ্ডীদাসগাতী। এই এলাকা জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি বলে পরিচিত। অবরোধ চলাকালে বিভিন্ন জায়গায় গাছের গুঁড়ি ফেলে এই রাস্তাটি বন্ধ করে রাখার কারণে সিরাজগঞ্জ জেলার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও স্বাভাবিকভাবে এখানে চলাফেরা করতে পারে না। গত শুক্রবার ওই গ্রামে অভিযান চালাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছে পুলিশ।
চণ্ডীদাসগাতী গ্রামের মতোই সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সংখ্যালঘুরা আতঙ্কে আছেন। ৯ ডিসেম্বর এখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন শিশু নিহত হয়েছিল। সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ সড়কের পাশের ওই গ্রামে গতকাল গিয়ে দেখা গেল, বহুলি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কার্যালয়টি ভস্মীভূত। ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক বলেন, ‘ইউপি কার্যালয়টি পুরোপুরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সব কাজকর্ম বন্ধ। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে আছে।’
বহুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘৯ ডিসেম্বরের সংঘর্ষের পর বহুলিতে আওয়ামী লীগের চারজন নেতা-কর্মীর বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের নেতা-কর্মীরা এলাকায় থাকতে পারছেন না।’
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তেয়াসিয়া ও কান্দাপাড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার সংখ্যালঘুদের অনেকগুলো ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা তপন সরকার ও গোপাল চন্দ্র সরকারের তাঁতের কারখানা। তপন সরকার বলেন, ‘মামলা করার সাহসও পাচ্ছি না। এলাকার হিন্দুরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।’
বেলকুচি উপজেলার কল্যাণপুর, সর্বতুলসী ও মবুপুর গ্রাম তিনটি জামায়াত-অধ্যুষিত। এই তিনটি গ্রাম থেকেই এনায়েতপুর, বেলকুচি ও কামারখন্দ উপজেলায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানো হয় বলে পুলিশসহ বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। অবরোধ চলাকালে এই গ্রামগুলোতে পুলিশও ঢুকতে পারেনি। এখানকার আওয়ামী লীগের নেতারা সবাই এলাকাছাড়া। বেলকুচির চরধুল গ্রামে আওয়ামী লীগের কর্মী আবদুল মজিদের বাড়িতে গত বৃহস্পতিবার রাতে আগুন দেওয়া হয়েছে। তিনিও এখন এলাকাছাড়া।
বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক গতকাল বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে ওই গ্রামগুলোতে আমাদের নেতা-কর্মীরা চরম আতঙ্কে আছেন। পুলিশ সেভাবে ব্যবস্থা নিতে পারছে না।’
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও এখন চরম আতঙ্কে আছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামসহ অনেক নেতা-কর্মীর বাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়েছে। উল্লাপাড়া সদর ইউপির চেয়ারম্যান আকমল হোসেনের দোতলা একটি তেলের মিল ও তিন ট্রাক মালামাল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল চৌকিদহ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া ভবনটি কোনোরকমে দাঁড়িয়ে আছে।
উল্লাপাড়ার সংখ্যালঘুরাও চরম আতঙ্কে আছে। ১২ ডিসেম্বর রাতে উল্লাপাড়া পৌর শহরের পাটবন্দর এলাকায় সমর কুণ্ডুর পাটের গুদামটি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। হামলা হয়েছে বেশ কটি হিন্দুবাড়িতে। বড়হর ইউপির চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ শফিকুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর, দোকানপাট সব জায়গায় হামলা ও আগুন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এসব ঘটনায় কোনো আসামি গ্রেপ্তার হচ্ছে না। আমি নিজে পুলিশের কাছে তালিকা দিয়েছি। রাস্তাঘাট থেকে কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে। কিন্তু যারা হামলা চালায়, সেই জামায়াত-শিবিরের কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছে না।’
সিরাজগঞ্জের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার এস এম এমরান হোসেন বলেন, ‘সিরাজগঞ্জে কারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, আমরা তাদের তালিকা করেছি। তবে অবরোধের কারণে পুলিশ এখন ব্যস্ত আছে। অবরোধ শেষ হলেই যৌথ অভিযান চালাব।’
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর গত ২৬ নভেম্বর থেকে সিরাজঞ্জে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘুদের দুই শতাধিক বাড়িঘর, দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। এর মধ্যে বেলকুচি উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অন্তত ৫০টি বাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। সদর উপজেলার চণ্ডীদাসগাঁতিতে ২৫টি বাড়ি ও ১০টি দোকান, বহুলী ইউনিয়নে ২০টি দোকান ও বাড়ি এবং উল্লাপাড়া উপজেলায় অর্ধশত দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলা হয়েছে।
এ ছাড়া অবরোধ ও কাদের মোল্লার রায় কার্যকরকে কেন্দ্র করে সিরাজগঞ্জে ৫২টি গাড়ি ভাঙচুর ও ২১টিতে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম হোসেন আলী বলেন, জামায়াত-শিবির একাত্তরের মতোই বর্বরতা চালাচ্ছে।

মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জে ইয়াবা-হেরোইনসহ দুই মহিলা আটক



সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মাহমুদপুর মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ১৭০ পিচ ইয়াবা ও ৩৫০ গ্রাম হেরোইন সহ দুই মহিলা মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে র‌্যাব।
আটককৃত মাদক ব্যবসায়ীরা হলেন, মাহমুদপুর মহল্লার আব্দুল করিমের স্ত্রী রন্তা খাতুন (২৫) ও একই মহল্লার আব্দুস সালামের স্ত্রী আন্না বেগম (৩৫)।

সিরাজগঞ্জ র‌্যাব-১২ এর এএসপি মো: শরিফুল ইসলাম ও সিরাজগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার (এসপি) অশোক কুমার পাল জানান, মঙ্গলবার বিকালে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মাহমুদপুর মহল্লায় অভিযান চালিয়ে ১৭০ পিচ নেশা জাতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট ও ৩৫০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। এ সময় দুই মাদক সম্রাজ্ঞী আন্না ও রত্মাকে আটক করা হয়।

পরে তাদের সিরাজগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। উদ্ধারকৃত হেরোইনের আনুমানিক মূল্য ৩৫ লাখ ও ইয়াবা ট্যাবলেটের আনুমানিক ৫১ হাজার টাকা।

এব্যাপারে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকসাবড়িতে হরতালের সকালে পুলিশের গাড়িতে ছোড়া হাতবোমায় আহত হয়েছেন তিন পুলিশ সদস্য। 

হরতালকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকে রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত সেতুর পাটাতন তুলে ফেলার পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন এলাকায় যানবাহনে আগুন, ভাংচুর, লুটপাট ও বোমাবাজি করেছে জামায়াত-শিবির ও যুবদল।যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে রোববার দেশব্যাপী এই হরতাল করছে তার দল জামায়াতে ইসলামী। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জ জেলা যুবদলও জেলা সদরে হরতাল করছে।সদর থানার এসআই ফারুক হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে খোকসাবড়িতে সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর সড়কে পুলিশের পিকআপে হাতবোমা ছোড়ে পিকেটাররা। এতে আহত হন পিকআপে থাকা তিন কনস্টেবল।দ্রুত অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে গিয়ে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়লে হামলাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।বোমার স্প্লিন্টারে আহত কনস্টেবল সোহেল, মাহবুব ও জুয়েলকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক জানান।  হরতাল শুরুর আগে রোববার ভোরে বঙ্গবন্ধু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে সাতটি ট্রাকে ভাংচুর চালায় পিকেটাররা।জামায়াত-শিবির সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ সড়কের তেলকুপিতে হরতালের সমর্থনে মিছিল করে। এ সময় তারা সড়কের ওপর আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। শহরের বাজার এলাকায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে পিকেটিং করে যুবদল।এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হরতালকারীরা সিরাজগঞ্জ-কড্ডা সড়কের কোনাগাঁতি বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন তুলে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে নাশকতাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে জানান সদর থানার এসআই বদিউজ্জামান।  পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ-মুলিবাড়ি বাইপাস সড়কের বাঐতারা এলাকায় দুর্বৃত্তরা একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বেকুচি উপজেলার মুকুন্দগাঁতী বাজার ও বসুন্ধরা বংশী পাড়া এলাকায় জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল ও বোমাবাজি করে।স্থানীয়রা জানান, মিছিলকারীরা বংশীপাড়ায় অন্তত ১০টি দোকানপাট ভাংচুর ও তিনটি দোকানের মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে। মুকুন্দগাতী বাজারে দুটি মালবোঝাই ট্রাক ভাংচুর করে।এ সময় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে গেলে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ক্ষতিগ্রস্থ বাঐতারা ও কোনাগাতি ব্রীজ ‘সড়ক ও জনপথ বিভাগ’র লোকজন মেরামত করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে র‌্যাব, পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন ও টহল জোরদার করা হয়েছে। এদিকে সন্ধ্যার পর শহরের লক্ষ্মী সিনেমা হলের সামনে, কালীবাড়ি ও গোশালা এলাকায় যুবদলের নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল করে এবং হাতবোমা ফাটায়।বেলকুচি থানার ওসি আব্দুল হাই ও সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এসব এলাকায় পুলিশ যাওয়ার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৩

দেশজুড়ে তাণ্ডব

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দলীয় নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর আরো সহিংস হয়ে উঠেছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা-কর্মীদের তাণ্ডবে কমপক্ষে ৬ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া নোয়াখালী, পিরোজপুর ও যশোরে সহিংসতায় তিন জন মারা গেছে। এছাড়া গতকাল রাতে খুলনা মহানগরীর নিরালা পুলিশ ফাঁড়িতে শিবিরের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক আখ ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টা এক মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর থেকে গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই তাণ্ডব চলে।

এসময় বিভিন্ন জেলায় প্রতিপক্ষ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায় জামায়াতসহ ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা। সেনবাগে এক আওয়ামী লীগ নেতার হাত ও পা কেটে ফেলা ছাড়াও এক বিচারকের বাড়িতে ককটেল হামলা চালায় তারা।

নারায়ণগঞ্জে দুই পুলিশকে পিটিয়ে জখম করে। জয়দেবপুর রেলস্টেশনে আগুন দিলে ট্রেন পরিচালনা কক্ষটি ভস্মীভূত হয়। এ সময় এক নারী গার্মেন্টকর্মী গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হন। বগুড়ায় সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ ও শত শত গাছ কেটে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তারা। এতে রেল ও সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়। এছাড়া শেরপুরে স্থানীয় এমপি হাবিবুর রহমানের বাসায় বোমা নিক্ষেপ করার খবর পাওয়া গেছে। খবর ইত্তেফাক প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের।

সাতক্ষীরা: জেলার কলারোয়ায় দুই আ'লীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে জামায়াত শিবির কর্মীরা। কলারোয়া থানার ওসি শাহ-দারা খান ও নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে কলারোয়া উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকার ৬নং ওয়ার্ড আ'লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমার আজুর বাড়ীতে হামলা চালায় জামায়াত শিবির। এ সময় আজু দৌড়ে পালাবার চেষ্টা করলে তাকে ধরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর পর রাত দুইটার দিকে একই উপজেলার যুবলীগ কর্মী জজমিয়ার সরসকাটি বাড়ীটি ঘেরাও করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। জজমিয়া বেরিয়ে আসলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর সমস্ত রাস্তায় গাছের গুঁড়ি থাকায় ঘটনা স্থলে পৌঁছাতে পারেনি পুলিশ । সকালে লাশ দুটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়।

এদিকে রাতে দেবহাটা উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার এবং সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর রহমানের বাড়িতে আগুন দিয়েছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়ি ঘর ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের খবর খবর পাওয়া গেছে।

চৌমুহনী (নোয়াখালী): বেগমগঞ্জ-সোনাইমুড়ি সড়কের আফানিয়া নামক স্থানে বৃহস্পতিবার রাতে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবির। রাত ১১টার দিকে র্যাব সদস্যরা গাছের গুঁড়ি সরানোর চেষ্টা করলে অবরোধকারীরা র্যাব সদস্যদের ওপর ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় র্যাব পাল্টা গুলি চালায়। এতে বেগমগঞ্জের মিরালিপুর গ্রামের খোরশেদ আলম (৪০) ও ইমাম উদ্দিন (৩০) গুলিবিদ্ধ হন। তাদের নোয়াখালী প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে খোরশেদ আলম চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান।

একই সময় বেগমগঞ্জের গোপালপুর বাজারে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা আগুন ধরিয়ে দিলে ১০/১২টি দোকান ভস্মীভূত হয়।

বেগমগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের কেন্দুরবাগ থেকে বাংলাবাজার পর্যন্ত এবং বাংলাবাজার থেকে চন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত কয়েক শত গাছ কেটে সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে।

পিরোজপুর অফিস: বৃহস্পতিবার রাতে জিয়ানগরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা ১৮ দলের মিছিলে গুলি চালালে জামায়াত সমর্থক একজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তির নাম শুকুর আলী (২২)। আহতরা হলেন, নাহিদ, শফিকুল, তৌহিদুল, সিদ্দিক ও লুত্ফর। স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তোবারক আলী মিছিলে গুলি চালিয়েছেন বলে বিএনপি অভিযোগ করলেও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ভান্ডারিয়ার ওসি (তদন্ত) মোঃ সুলতান মাহমুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, শুক্কুর আলীর লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা যায়, রাত ১টার দিকে জামায়াত-বিএনপির কয়েকশ' লোক ইন্দুরকানীর আউড়া পোলস্ট্যান্ডে এসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ৭টি দোকান, একটি ক্লাব ঘর, ৮টি রিক্সা ও একটি টমটম ভাংচুর করে।

এসময় বাজারের দুর্গা মন্দিরের মূর্তিও ভাংচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ হাওলাদার অভিযোগ করেন, মিছিলটি ঘোষেরহাট বাজার অতিক্রম করার সময় পেছন থেকে পত্তাশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তোবারক আলী হাওলাদার বন্দুক দিয়ে ৫ রাউন্ড গুলি করেন। তার গুলিতেই একজন নিহত ও ৬-৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার এসএম আক্তারুজ্জামান জানান, ভিকটিমদের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না পাওয়ায় সার্বিক তথ্য পুলিশের জানা নাই। ভান্ডারিয়ার পুলিশ স্থানীয় হাসপাতাল থেকে গুলিবিদ্ধ এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে। বন্দুকের ছররা গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে। এদিকে নিহত শুকুর আলীর পিতা সিদ্দিকুর রহমান হাওলাদার (৬০) জানান, ৬ মাস হয়েছে আমার ছেলে বিয়ে করেছে। দেড় মাস পর গত সোমবার সাগর থেকে মাছ ধরে বাড়ি এসেছিল সে।

যশোর অফিস: জেলার বাঘারপাড়ায় ট্রাকে আগুন দিতে গিয়ে ট্রাক চাপায় নিহত হয়েছেন আশরাফুল (২০) নামে এক জামায়াত কর্মী। শুক্রবার ভোরে উপজেলার বাঘারপাড়া-চাড়াভিটা সড়কের বোলতেঘাটা মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আশরাফুল বাঘারপাড়া উপজেলার মহিরন গ্রামের মকবুল দর্জির ছেলে। এ ঘটনার পর জামায়াত কর্মীরা ওই এলাকায় দুটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে।

এদিকে ভোরে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়কের শতাধিক গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। মহাসড়কের মালঞ্চী থেকে নতুনহাট পর্যন্ত এসব গাছ কাটা হয়।

গাজীপুর:শুক্রবার সকালে জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ট্রেন পরিচালনা কক্ষ (রিলে রুম) শিবিরের পেট্রোল বোমায় ভস্মীভূত হয়েছে। এতে ওই কক্ষের কম্পিউটারাইজড সিগন্যাল বোর্ড, টেলিফোন, কম্পিউটার, ফাইবার ক্যাবল, আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে গেছে। এসময় ট্রেনের জন্যে অপেক্ষারত যাত্রী পোশাক শ্রমিক শামসুন্নাহার (৩০) আগুনে দগ্ধ হয়েছেন। হামলাকারীদের লাঠির আঘাতে স্টেশন মাস্টার জিয়াউদ্দিন সরদার আহত হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে ওই স্টেশন হয়ে ট্রেনচলাচল সাময়িক বন্ধ থাকে।

আগুনে দগ্ধ শামসুন্নাহারকে গাজীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি গাজীপুরের তিন সড়ক এলাকার ইন্টারমেক্স সোয়েটার কারখানার অপারেটর। তিনি বেতনের টাকা নিয়ে গ্রামের বাড়ি গফরগাঁও যাচ্ছিলেন। তার দুই পা, হাত ও মুখের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।

স্টেশন মাস্টার জিয়া উদ্দিন সর্দার জানান, হামলার সময় তিনি পুলিশ বা রেলওয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের কাউকে ঘটনাস্থলে দেখেন নি। আগুনে রিলে রুম ভস্মীভূত হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবে ট্রেন চলাচল আপাতত বন্ধ রয়েছে।

সিলেট অফিস:বিক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা বৃহসপতিবার রাতে মোগলাবাজার রেলস্টেশনে আগুন দেয়। একই সাথে তারা জালালাবাদ থানা কমপাউন্ডেও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। একপর্যায়ে এই থানার আওতাধীন টুকেরবাজার এলাকার বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং একজন যুবলীগ নেতার স'মিলে ভাংচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। দক্ষিণ সুরমার শ্রীরামপুর চৌরাস্তা থেকে হেতিমগঞ্জ চৌরাস্তা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তায় তারা গাছ ফেলে অবরোধের সৃষ্টি করে। জালালাবাদ থানার ওসি গৌছুল আলম ঘটনায় সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বগুড়া: জেলার সাথে সারাদেশের সড়ক ও রেলপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। গতকাল দুপুরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ও আকিজ গ্রুপের ডিপোতে। সকাল থেকে দুই দফা শহরতলীর এরুলিয়া ও চারমাথা এলাকায় জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এছাড়া শেরপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতার মার্কেটে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। শাজাহানপুরের ফটকি ব্রিজে দুটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে তারা ।

গতকাল বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দীঘলকান্দির মাঝিপাড়া এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক কেটে ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। এছাড়া শেরপুর উপজেলার মহিপুর থেকে শাজাহানপুর উপজেলার নয়মাইল পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশের গাছ কেটে অবরোধ করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।

বোনারপাড়া-সান্তাহার রেলপথে বগুড়ার সাবগ্রামসহ একাধিক স্থানে রেললাইনের ওপরে গাছ কেটে ফেলে রাখে তারা। এছাড়া কাহালু উপজেলার পাঁচপীর এলাকায় রেল লাইন উপড়ে ফেলে এবং গাবতলীতে বেশ কিছু স্প্যাণ্ডেল ক্লিপ খুলে ফেলে।

নারায়ণগঞ্জ:ফতুল্লার পঞ্চবটিতে শুক্রবার সকালে তাণ্ডব চালিয়েছে শিবিরের লোকজন। এসময় তারা ৪টি গাড়িতে আগুন ও আরো অন্তত ২০টি যানবাহন ভাংচুর করে। ওই সময়ে শিবিরের লোকজন ট্রাফিক পুলিশের ২ সদস্যকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। এরা হলেন হাকির হোসেন ও রফিক। শিবিরের তাণ্ডবের কারণে প্রায় পৌনে ১ ঘণ্টা ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

পরশুরাম: শুক্রবার দুপুরে ফেনীতে জামায়াত-শিবির কর্মীরা শহরের এসএসকে সড়কস্থ বিটিসিএল অফিস, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যাপক গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসময় মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তরা মার্কেন্টাইল ব্যাংক, বাংলাদেশ বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ড, ইসলামী ব্যাংক, গাজী হোটেলে হামলা চালায় ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। রাতে ফেনী পল্লীবিদ্যুত্ অফিসের সামনে পুলিশের সাথে শিবির কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল ও রামপুর রাস্তার মাথা নামক স্থানে রাতে ৭টি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ৩টি প্রাইভেট কারে অগ্নিসংযোগসহ ১৫/২০টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়।

নোয়াখালী: সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শুক্রবার দুপুরে সোনাইমুড়ি উপজেলার সোনাপুর বাজারে সাহদাত ও রাজন নামের দুই শিবির কর্মীর পায়ের রগ কেটে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তরা সদর উপজেলা ও রামগতি সড়কের ছাইয়াখালীর বেইলি ব্রিজের প্লেট খুলে ফেলে। এতে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সেনবাগ:আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের কাবিলপুর গ্রামের বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে বোমা হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে রাত পৌনে ১টার দিকে। এসময় ঘটনাস্থলে মোতায়েনকৃত পুলিশ সদস্য ও দুর্বৃত্তদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে রাতে সেনবাগ পৌর শহরে ছাত্রলীগ নেতা আফসার হোসেনকে (২৬) পিটিয়ে আহত করে জামায়াত কর্মীরা। পরে মুক্তিযোদ্ধা হাসমত উল্যা চৌধুরীর (৭৮) বাড়িতে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর করে এবং তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এছাড়া গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে পৌর শহরের ফাতেমা টি স্টলের সামনে উপজেলার কাদরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ডা. আবদুল হাইয়ের (৪৭) উপর হামলা চালিয়ে তার ডান হাতের কব্জি ও ডান পা কেটে দিয়েছে তারা।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি ও উল্লাপাড়াতে অন্তত ৩০টি বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার শত শত গাছ কেটে মহাসড়কে ফেলে ও সিরাজগঞ্জ-বগুড়া আঞ্চলিক সড়কের শিয়ালকোল ইউনিয়নের বেইলী ব্রীজের ৪টি পাটাতন এবং নলকায় বেইলী ব্রীজের ৪টি পাটাতন তুলে যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে জামায়াত কর্মীরা। এতে শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের সঙ্গে বগুড়া, নাটোর, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে।

নীলফামারী: বৃহস্পতিবার ১০টার পরে সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শ্যাম চরনের বাড়িতে আগুন দেয় স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। একই সময়ে লক্ষ্মীচাপ বাজারের প্রায় ৫০টি দোকানে হামলা চালিয়ে লাখ লাখ টাকার মালামাল লুট করে তারা।

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম): উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের পাশাপাশি নাপোড়ায় বাঁশখালী প্রধান সড়কের বেইলি ব্রিজটির পাটাতন খুলে ফেলা হয়েছে। কালীপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গফুরের ফার্মেসী ও ইউপি সদস্য সাইরাজ উদ্দিনের তেলের দোকানসহ ১০-১২টি দোকান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া অংশের উপর শত শত গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করে। রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল শুরু হয়নি।

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর: বৃহস্পতিবার রাতে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা চিরিরবন্দর উপজেলার ভূষিরবন্দরে দিনাজপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ভবানী শংকর আগরওয়ালার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করে। তারা ৫টি বাস, একটি পাজেরো জীপ, একটি পিক-আপ ও ২টি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুনীল কুমার সাহার বাড়ী ও মিলেও হামলা চালায়। তারা চিরিরবন্দরের কাঁকড়া ব্রিজের পাটাতন খুলে দিনাজপুর চিরিরবন্দর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।

ফুলবাড়ি (দিনাজপুর): দিনাজপুর-৬ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আজিজুল হক চৌধুরীর পেট্রোল পাম্পে অগ্নিসংযোগসহ বাসভবন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টায় ফুলবাড়ির পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জের ভাদুরিয়া বাজার সংলগ্ন চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে এ হামলা চালানো হয়।

রাজশাহী অফিস:বৃহস্পতিবার রাতভর নগরীজুড়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি'র বাড়িতে পেট্রোল বোমা হামলা চালায়। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রাতেই নগরীর ২৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় শিবির কর্মীরা। এসময় তারা একটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে শিবির কর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ১০ জন আহত হয়।

গাজীপুর:কোনাবাড়িতে শুক্রবার রাতে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা তিনটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এসময় তারা মহাসড়কে তাণ্ডব চালিয়ে অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাংচুর করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মনির (২৮) নামে এক শিবির কর্মীকে আটক করা হয়েছে।

রংপুর প্রতিনিধি:বৃহস্পতিবার রাতে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দের গেট থেকে শঠিবাড়ী পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এবং রাণীপুকুর থেকে ভেন্ডাবাড়ি ১৭ কিলোমিটার এলাকায় সড়কের দু'পাশের গাছ কেটে অবরোধ গড়ে তোলে। উপজেলার জায়গীরহাট এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে ফেলে অগ্নিসংযোগ করে। এর ফলে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ওই এলাকার বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া রংপুর-সুন্দরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের হাউদারপাড় এলাকায় ৩ ফিট সড়ক কেটে দিলে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। নগরীর পুরাতন বেতারপাড়া এলাকায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। এদিকে পীরগাছা উপজেলার হাউদারপাড় নামক স্থানে ১টি এ্যাম্বুলেন্স, ২টি পিকআপ ও ১টি মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে তারা।

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম): বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি, সড়ক কেটে ও ব্রিজ ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা চালালে পুলিশ ও বিজিবি'র সাথে জামায়াত শিবির কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একই রাতে উপজেলার ছদাহা রোয়াজর পাড়া এলাকায় সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হুমাইয়ুনের বাড়িতে হামলা চালায় জামায়াত শিবির।

কুমিল্লা:জেলা পরিষদের প্রশাসক ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো. ওমর ফারুকের নগরীর ঠাকুরপাড়াস্থ বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ২টি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর টমছমব্রীজ এলাকায় কমিউনিটি পুলিশ বক্স এবং ভোরে জেলার চৌদ্দগ্রামের বাতিশা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও মিয়াবাজারের শুয়ারখিল সড়কে 'মুজিব সেনা ক্লাব' আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

পাবনা:এক আওয়ামী লীগে নেতার বাড়িসহ চারটি বাড়ি ভাঙচুর ও একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা ছাড়াও জামায়াত সমর্থকরা পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের ৬ টি যানবাহনে আগুন দিয়েছে।

গাইবান্ধা:গতকাল বিকালে জামায়াত-শিবির হামলা চালিয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহারিয়া খাঁন বিপ্লব ও বণিক সমিতির সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। হামলাকারীরা এসময় তাদের দু'টি মোটর সাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। দুপুরে জেলার পলাশ বাড়িতে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে ১৮ দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছে ১৮ দলের ৩ কর্মী। বৃহস্পতিবার রাতে পলাশবাড়ি সড়ক ও জনপথের (সওজ) একটি পাজেরো জীপসহ ২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সুন্দরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে আগুন দেয় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। একইসময়ে জেলার গোবিন্দগঞ্জে ও সুন্দরগঞ্জে আ'লীগ নেতার কয়েকটি দোকান ও বাড়ি ভাংচুর করেছে ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক কেটে এবং রাস্তার ধারের বড় গাছ কেটে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তারা।

লালমনিরহাট: জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকায় দুটি ওষুধের দোকান, একটি কাপড়, একটি ডেকোরেটর ও একটি মুদির দোকানসহ স্থানীয় বুড়িমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসা আলীর বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে জামায়াত কর্মীরা।

জয়পুরহাট: জামায়াত-শিবির কর্মীরা সদর উপজেলার ভাদসা-দুর্গাদহ ও হিচমী-আমদই ইউনিয়নের বাইপাস সড়কের কিছু অংশ কেটে দেয়। এ সময় হিচমী বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমান উল্লাহ আমানের একটি মাইক্রোবাস ও গদি ঘর এবং জয়পুরহাট-আক্কেলপুর সড়কের পাইকরতলীতে একটি ট্রাক ও মোটর সাইকেলে আগুন দেয় তারা।

মহেশপুর (ঝিনাইদহ): উপজেলার সামন্তা বাজারে ও গ্রামে জামায়াত শিবির হামলা চালিয়ে ৪টি দোকানে আগুন, ৭টি বসতবাড়িও দু'টি বাস ভাংচুর করে লুটপাট করেছে।

হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ): ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের বৈডাঙ্গা বাজারের নিকটে শিবির ৬টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। সাগান্না ইউনিয়ন ও এর আশপাশের ২০টি গ্রামে ঘটনার পর থেকে প্রায় ১২ ঘণ্টা বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর): উপজেলা পরিষদের পাঁচটি অফিস, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাংলো ভাংচুর ও রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়ক কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

ফকিরহাট (বাগেরহাট): দুর্বৃত্তরা মহাসড়কে সরকারি গাছ কেটে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সসহ অর্ধশতাধিক যানবাহন ভাংচুর করেছে। এতে চালক গুরুতর আহত হয়েছে। নাম জিলানি শেখ (৩৭)।

হবিগঞ্জ: বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারে আওয়ামী লীগ ও ১৮ দলীয় জোট নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ উপজেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান নানুকে সংকটাপন্ন অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ছাতক (সুনামগঞ্জ):উপজেলায় একটি পুলিশ বক্স ভাংচুর করেছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা।

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ):বৃহস্পতিবার রাতে জামায়াত বিএনপিসহ ১৮ দল শিবগঞ্জের রসুলপুর মোড় থেকে সোনামসজিদ পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ও রাস্তা খুঁড়ে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। সোনামসজিদ বালিয়াদিঘি বাজারে মহিলাদের দিয়ে বিজিবির উপর হামলার চেষ্টা করে। কানসাট বাজারের ৪টি দোকান, পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কমিশনার এমানীর বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে ও ছত্রাজিতপুর বাজারের পেট্রোল পাম্পে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে। একই সময়ে মোবারকপুর ইউনিয়নের টিকরী বাজার ও গ্রামে ৮টি বাড়ি ও ৩০/৩৫টি দোকানে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে তারা।

বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ):উপজেলা সদরে সোহাগ সিনেমা হলসহ ১৯টি বাড়ি ও দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এছাড়া অর্ধশতাধিক বাড়িতে বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর):উপজেলার হরিপাড়া হাট, ডুগডুগিরহাট ও ঘোড়াঘাট বন্দরে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটেছে।

বানিয়াচং (হবিগঞ্জ):উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগে পুড়ে গেছে মূল্যবান জিনিসপত্র ও ল্যান্ডফোন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে জ্বানালার কাঁচ ভেঙ্গে দুর্বৃত্তরা পেট্রোলের বোতল ছুঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

কাউখালী (পিরোজপুর):কাউখালী-ভান্ডারিয়া সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা রাস্তায় গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। ফলে কাউখালীর শিয়ালকাঠী চৌরাস্তা থেকে ভান্ডারিয়া পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া উপজেলার চৌরাস্তা, বেলতলা, তালুকদার হাটের দুই পাশের গাছ কেটে এবং ব্রিজের পাটাতন তুলে সড়ক অবরোধ করে তারা।

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর):উপজেলার ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও ৭নং পশ্চিম বড়কুল ইউনিয়নের ঝাকনি আওয়ামী লীগের কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা।

অবরুদ্ধ পুলিশ, সংঘর্ষ

রাত আটটার দিকে আমাদের বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়া-রংপুর মহাসড়কে মোকামতলা বন্দরের অদূরে পাকুড়তলা নামক স্থানে পুলিশের সাথে জামায়াত-শিবির ও এলাকাবাসীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবির কর্মীরা ১টি কোচ, ১টি পিক-আপ ও ১টি ট্রাকে আগুন ধরিয় দেয়। এছাড়া ভাংচুর করে আরো ২০টি যানবাহন। এক পর্যায় তারা পুলিশকে প্রায় ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় গ্রামের মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে এগিয়ে আসতে বলা হলে শত শত নারী -পুরুষ লাঠিসোটা নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেয়। পরে বগুড়া শহর থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

খুলনা অফিস জানায়, খুলনা মহানগরীর নিরালা পুলিশ ফাঁড়িতে ককটেল ও পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়েছে জামায়াত-শিবির। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নাইম (১৮) নামে এক আখের রস বিক্রেতা নিহত হয়েছে। এসময় নিরালা আবাসিক এলাকা ও শেরে-বাংলা রোড এলাকায় ককটেল, বোমা ও পেট্রোল বোমা ফাটিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা।

আগামী ১০ম জাতীয় নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের ৬টি আসনের ৫টিতে বেসরকারীভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত ঘোষনা

আগামী ১০ম জাতীয় নির্বাচনে মনোনায়ন পত্র বাতিল ও প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সিরাজগঞ্জের ৬টি আসনের ৫টিতেই আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীরা বেসরকারীভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেন।

নির্বাচিতরা হলেন।






সিরাজগঞ্জ-১ (সদরের ৪টি ইউনিয়ন ও কাজিপুর)মোহাম্মদ নাসিম,
সিরাজগঞ্জ-২(সদর ও কামারখন্দ) প্রফেসর হাবিবে মিল্লাত মুন্না,
সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) গাজী ইসহাক হোসেন তালুকদার,
সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া)  তানভীর ইমাম 
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহাজাদপুর) হাসিবুর রহমান স্বপন।

অপরদিকে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে আ'লীগ মনোনিত প্রার্থী মজিদ মন্ডল, স্বতন্ত্র সোনিয়া সবুর, স্বতন্ত্র আতাউর রহমান, জাতীয় পার্টির আবুল হাসনাত গোফরান ও একই দলের আবু বকর সিদ্দিকী বৈধ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।উল্লেখ্য, ৬টি আসনে ২৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।

আজ সন্ধ্যার পর জেলা প্রশাসক রির্টানিং অফিসার মোঃ বিল্লাল হোসেন প্রধান নির্বাচন অফিস থেকে সিদ্ধান্ত ও মতামত নেবার পর তাদেরকে বেসরকারীভাবে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত ঘোষনা করেন।

এদিকে, ঘোষনার পর পরই সিরাজগঞ্জ-২ আসনের নবনির্বাচিত এমপি চিকিত্সক মুন্না জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুল ইসলাম, জেলা আ'লীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডঃ কে.এম.হোসেন আলী হাসান, জাসদ প্রত্যাহার প্রার্থী আবু বকর ভূইয়া, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দগ্ধ মানুষের আর্তনাদ শুনতে কি পাও বাংলাদেশ

দগ্ধ মানুষের আর্তনাদ  শুনতে কি পাও বাংলাদেশ

সারি সারি পোড়া মানুষ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ের জন্য বিরোধীদলের কর্মসূচিতে পুড়ছে যানবাহন, ধ্বংস হচ্ছে সম্পদ, মরছে মানুষ৷ হরতাল-অবরোধের নামে পোড়ানো অনেকে এখনো যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ নম্বর বার্ন ইউনিট এখন হরতাল-অবরোধের নামে পোড়ানো জীবিকার তাগিদ কিংবা দৈনন্দিন প্রয়োজনে রাস্তায় নামা মানুষে ভরে গেছে৷

শিশুর কষ্ট বোঝেনা তারা
কোলের শিশুও বাঁচতে পারছেন না জ্বালাও-পোড়াওয়ে হাত থেকে৷ প্রতিপক্ষের আদর্শকে ভুল প্রমাণ করে শ্রেয়তর আদর্শ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নয়, প্রতিপক্ষকে আঘাত করে, হত্যা করে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা অনেক দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ৷ স্বাধীন দেশে নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে পোড়ানোও দেখতে হচ্ছে৷ ৩ নভেম্বর আট বছরের সুমি দাদীর সঙ্গে নেত্রকোনা থেকে ঢাকা আসছিল৷ জয়দেবপুর চৌরাস্তায় তাদের বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়৷

বোবা কান্না.
 নির্মমতার আরেকটি ছবি হয়ে আছে মজিবরের পোড়া শরীর৷ মজিবর বাকপ্রতিবন্ধী৷ কুমিল্লার দেবিদ্বারের এক ট্রাকের হেলপার৷ পিকেটারদের বোমা হামলায় বাসের সঙ্গে তাঁর শরীরও পুড়েছে৷ সবাই শুনে বুঝবে এমনভাবে কথা তিনি বলতে পারেন না, বোবা কান্নায় শুধু পারেন অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে, আর্তনাদ করতে আর এ অন্যায়ের প্রতিকার আশা করতে৷


মেয়েকে দেখতে গিয়ে মা হাসপাতালে
জাহানারা বেগম৷ বয়স ৫২৷ পেশা – ফেরি করে কাপড় বিক্রি করা৷ হরতাল-অবরোধ থাকলে বিক্রি কমে যায় বলেই হয়তো সেদিন কাপড় নিয়ে বাড়ি বাড়ি না ঘুরে জাহানারা গিয়েছিলেন শ্যামপুরে৷ সেখানে তাঁর মেয়ের বাড়ি৷ মেয়েকে দেখে অটো রিক্সায় ফেরার সময়েই বিপদ৷ বিরোধী দলের কিছু সমর্থক সেই অটোরিক্সাতেও ছুড়ে মারে পেট্রোল বোমা৷ সন্তানের প্রতি অপত্য স্নেহের মূল্য আগুনে পুড়ে চুকাচ্ছেন জাহানারা বেগম!

তালহার অসহায়ত্ব
২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা৷ শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় আবু তালহা সেই থেকে ১ নম্বর বার্ন ইউনিটে৷




রাজমিস্ত্রী
রাজমিস্ত্রী ও ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদের শরীর পুড়েছে গত ১২ নভেম্বর৷ সেদিন ঢাকার রায়েরবাগেও একটি চলন্ত বাসে ছোড়া হয় পেট্রোল বোমা৷ সেই থেকে তাঁরও ঠিকানা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ১ নম্বর বার্ন ইউনিট৷




বাসচালক
২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় শাহবাগে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পোড়ানো সেই বাসটি চালাচ্ছিলেন মাহবুব৷ যাত্রীদের মতো তাঁর শরীরও পুড়েছে৷ তাঁর দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময়, অর্থাৎ ১৯৭১ সালেই জন্ম মাহবুবের৷ স্বাধীনতার ৪২ বছর পর দেশ পুড়ছে, তিনিও পুড়েছেন৷



ঘুমের মাঝেই আগুন.
৭ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া ফেরিঘাটে বাসে ঘুমাচ্ছিলেন হেলপার আলমগীর৷ থামানো বাসেই দেয়া হয় আগুন৷ পোড়া দেহ নিয়ে এখন তিনি হাসপাতালে৷




লেগুনার যাত্রী
১০ নভেম্বর ঢাকার লক্ষীবাজারে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পোড়ানো হয় একটি লেগুনা৷ লেগুনা পুড়ে শেষ, লেগুনার যাত্রী কামাল হোসেন ভাগ্যগুণে বেঁচে গেছেন৷ তবে শরীরের ৩৫ ভাগেরও বেশি অংশ পুড়ে গেছে৷ ৩৬ বছরের এ তরুণ লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে৷ চিকিৎসকদের চেষ্টা এবং সুস্থ মানসিকতার প্রতিটি মানুষের শুভকামনায় তিনি শিগগিরই হয়তো ফিরবেন স্বাভাবিক জীবনে৷ কিন্তু এই দুর্ভোগ, এই দুঃস্বপ্নের দিনগুলো কি কোনোদিন ভুলতে পারবেন?

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শুভও ছিলেন রায়েরবাগের সেই বাসে৷ তাই ১২ নভেম্বর থেকে তিনিও পোড়া শরীর নিয়ে পড়ে আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিছানায়৷



সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।