দেশে অব্যাহত সহিংসতা ঘটাতে শিবির আর মাঠে নামবে না। গত বছরের নভেম্বর থেকে এ বছরের শেষ পর্যন্ত শিবির টানা সহিংসতার ইতি টানল।
তাদের কথা, বিএনপি মাঠে না নামলে তারা আর মাঠে নামবে না। তারা অযথা আর প্রাণ ঝরাবে না। সোমবার শিবিরের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, ‘বহু প্রাণ গেছে, আর নয়। অনেক ছাত্রকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। চোখ হারাতে হয়েছে। পুলিশ কাছে থেকে গুলি করেছে। চোখ উপড়ে ফেলেছে ।এখন বিএনপি যদি প্রাণ উৎসর্গের মতো ত্যাগ স্বীকার করে, তবেই তারা আবার মাঠে নামার প্রস্তুতি নেবেন বলে জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখা ছাত্রশিবিরের উচ্চ পর্যায়ের আরেক নেতা জানান, শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলোয়ার হোসাইনকে মেরে হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
তিনি এখনো জেলে চিকিৎসাধীন। দক্ষিণ শাখা ছাত্রশিবিরের অনেক নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। রিমান্ড থেকে বাঁচার জন্য পুলিশকে টাকা দিতে গিয়ে অনেক পরিবার পথে বসে গেছে। অনেকের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। এজন্য এখন আর এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে কৌশলে আগাবেন বলে জানান তিনি।
শিবিরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক নেতা বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ আমরা পালন করেছি। সারা দেশে আন্দোলনকে আমরাই টিকিয়ে রেখেছি। অনেক নেতার জীবন বিসর্জন দেওয়ার মাধ্যমে দেশে আন্দোলন টিকে রয়েছে।’ তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বিএনপির কর্মীদের মাঠে দেখা না গেলেও তারা টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজি ঠিকই করবে।’ তাই তার মতে, একা আর কোনো আন্দোলন নয়। বিএনপি মাঠে নামলেই কেবল শিবির রাজপথে থাকবে বলে জানান শিবিরের ওই নেতা।
এ বিষয়ে ডিএমপি পুলিশের (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, পুলিশের কঠোর নজরদারি ও ব্যাপক তল্লাশির কারণে শিবির কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তারা সুযোগ পেলেই মাঠে নামবে আবার। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও বোমা ও দেশীয় অস্ত্রসহ শিবিরের নেতা-কর্মীরা ধরা পড়ছে বলে জানান ডিএমপির এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। পাশাপাশি ১৮ দলীয় জোটের আন্দোলনে বিএনপির বদলে শিবিরই মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, এ কথাও স্বীকার করেন তিনি।