হরতালকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকে রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত সেতুর পাটাতন তুলে ফেলার পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন এলাকায় যানবাহনে আগুন, ভাংচুর, লুটপাট ও বোমাবাজি করেছে জামায়াত-শিবির ও যুবদল।যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে রোববার দেশব্যাপী এই হরতাল করছে তার দল জামায়াতে ইসলামী। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জ জেলা যুবদলও জেলা সদরে হরতাল করছে।সদর থানার এসআই ফারুক হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে খোকসাবড়িতে সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর সড়কে পুলিশের পিকআপে হাতবোমা ছোড়ে পিকেটাররা। এতে আহত হন পিকআপে থাকা তিন কনস্টেবল।দ্রুত অতিরিক্ত পুলিশ সেখানে গিয়ে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়লে হামলাকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।বোমার স্প্লিন্টারে আহত কনস্টেবল সোহেল, মাহবুব ও জুয়েলকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলেও পুলিশ কর্মকর্তা ফারুক জানান। হরতাল শুরুর আগে রোববার ভোরে বঙ্গবন্ধু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে সাতটি ট্রাকে ভাংচুর চালায় পিকেটাররা।জামায়াত-শিবির সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ সড়কের তেলকুপিতে হরতালের সমর্থনে মিছিল করে। এ সময় তারা সড়কের ওপর আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। শহরের বাজার এলাকায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে পিকেটিং করে যুবদল।এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হরতালকারীরা সিরাজগঞ্জ-কড্ডা সড়কের কোনাগাঁতি বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন তুলে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়ে নাশকতাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে জানান সদর থানার এসআই বদিউজ্জামান। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ-মুলিবাড়ি বাইপাস সড়কের বাঐতারা এলাকায় দুর্বৃত্তরা একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বেকুচি উপজেলার মুকুন্দগাঁতী বাজার ও বসুন্ধরা বংশী পাড়া এলাকায় জামায়াত-বিএনপি নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল ও বোমাবাজি করে।স্থানীয়রা জানান, মিছিলকারীরা বংশীপাড়ায় অন্তত ১০টি দোকানপাট ভাংচুর ও তিনটি দোকানের মালামাল ও নগদ টাকা লুট করে। মুকুন্দগাতী বাজারে দুটি মালবোঝাই ট্রাক ভাংচুর করে।এ সময় আওয়ামী লীগ সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে গেলে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ক্ষতিগ্রস্থ বাঐতারা ও কোনাগাতি ব্রীজ ‘সড়ক ও জনপথ বিভাগ’র লোকজন মেরামত করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে র্যাব, পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন ও টহল জোরদার করা হয়েছে। এদিকে সন্ধ্যার পর শহরের লক্ষ্মী সিনেমা হলের সামনে, কালীবাড়ি ও গোশালা এলাকায় যুবদলের নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল করে এবং হাতবোমা ফাটায়।বেলকুচি থানার ওসি আব্দুল হাই ও সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এসব এলাকায় পুলিশ যাওয়ার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।