

সম্প্রতি জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আগামী ২৫ শে মার্চ দেশে প্রথমবারের মত গণহত্যা দিবস পালন করা হবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ২৫ মার্চ তারিখে গণহত্যা দিবস প্রথমবারের মতো পালন করতে যাচ্ছে। এ স্বল্প সময়ের মধ্যে এবার কাঙ্ক্ষিত ব্যাপক কর্মসূচিতে এ দিবস পালন করা সম্ভব না হলেও, বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ইতিহাসে এ ঘটনা মাইলফলক হয়ে থাকবে।
তিনি জানান, ওইদিন ‘রক্তাক্ত ২৫ শে মার্চ : গণহত্যা ইতিবৃত্ত’ শিরোনামে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ সংলগ্ন স্থানে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় এ দিবস উপলক্ষে ২৫ মার্চ আলোচনা সভা ও গণহত্যা এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণহত্যা দিবস পালন করতে যাচ্ছি।
দেশের বাইরে দূতাবাসগুলোতে দিবসটি পালনের কোনো সিদ্ধান্ত আছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দূতাবাসগুলোতে আমরা এ বছর নির্দেশনা দেইনি। কারণ, সেখানে একটা সভা আয়োজন করতে হলে বিভিন্ন লোককে দাওয়াত করতে হয়। দাওয়াত করতে গেলে দূতাবাসের যে একটা নিয়ম আছে, সেই নিয়মটি পালন করতে ন্যূনতম সাতদিন লাগে। সেই সময়টা আমাদের এ বছর হাতে ছিল না দেখে দূতাবাসগুলোতে আমরা বলিনি।
তবে বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে এ দিবসটি পালনের চেষ্টা করা হবে এবং ভবিষ্যতে দূতাবাসগুলোতে অবশ্যই এ দিবস পালন করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশকে একটি শান্তিপ্রিয় দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল লক্ষ্য। তবে বাঙালি কখনো অন্যায় ও অবিচারকে মেনে নেয়নি। আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। কিন্তু আমাদের ওপর কোনো ধরনের হামলা হলে তার সমুচিত জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
রবিবার চট্টগ্রাম নৌ জেটিতে দু’টি সাবমেরিন ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবহরে কমিশনিং করেন তিনি। এ সময় তিনি সাবমেরিন দু’টির কমিশনিং ফরমান অধিনায়কদের হাতে তুলে দেন এবং নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশের সাবমেরিন যুগে প্রবেশের ঘটনাকে ইতিহাসের একটি স্মরণীয় মুহূর্ত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও আমাদের নৌবাহিনীর সাবমেরিন ছিল না। অত্যাধুনিক এই সাবমেরিন যুদ্ধ জাহাজ যুক্ত হয়ে আমাদের নৌবাহিনীর সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়েছে। আক্ষরিকভাবেই এখন বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে প্রথম ধাপ ছিল নৌবাহিনীর জন্য আকাশসীমা উন্মোচন। বর্তমান সরকারের আমলে হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট নিয়ে গঠিত হয় নেভাল এভিয়েশন। শিগগিরই এতে আরো মেরিটাইম এয়ারক্রাফট ও অত্যাধুনিক সমরক্ষমতা সম্পন্ন হেলিকপ্টার সংযোজিত হবে। এর ফলে বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্বল্প সময়ে বিশাল সমুদ্র এলাকায় টহল এবং পর্যবেক্ষণ সক্ষমতা অর্জন করেছে যা সমুদ্রসীমা ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে সাবমেরিন অন্তর্ভুক্তির ফলে দেশের জলসীমায় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সার্বিক সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি তেল, গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকসমূহে অধিকতর নিরাপত্তাসহ সার্বিকভাবে দেশের ব্লু ইকনমি উন্নয়নে এই সাবমেরিন দু’টি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য দু’টি সাবমেরিনের আধুনিকায়ন, ক্রু-দের প্রশিক্ষণ ও কারিগরী প্রশিক্ষণের জন্য চীন সরকার, নৌবাহিনী ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, প্রথমবারের মত বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হলো দীর্ঘ প্রতিক্ষীত আধুনিক দু’টি সাবমেরিন ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল।