দেশের বিভিন্ন জেলায় নাশকতা প্রবণ তিন শতাধিক স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকার চল্লিশটিসহ দুই শতাধিক স্পটে বসানো হয়েছে গোপন সিসি ক্যামেরা। আর মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৯৯৩। চলমান এসএসসি পরীক্ষার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত কয়েকদিন ধরেই কর্ডন পদ্ধতিতে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত জেলাগুলোতে। অভিযানে সারাদেশ থেকে দুই শতাধিক পেশাদার নাশকতাকারী ও শতাধিক বোমা সরবরাহকারী এবং বোমাবাজদের অর্থদাতা গ্রেপ্তার হয়েছে। যেকোন ধরনের অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে র্যাবের হেলিকপ্টার। নাশকতা প্রবণ স্পট, মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের আশপাশে অবস্থিত অফিস, আদালত, বাসাবাড়ি, বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন এবং পেট্রলপাম্পগুলোতে থাকা সিসি ক্যামেরাগুলো সচল রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, দেশের যেসব এলাকায় বস্তি ও জামায়াত-শিবিরের প্রভাব বেশি সেসব এলাকায় নাশকতার ঘটনা বেশি ঘটছে। এসব এলাকায় পেট্রলবোমা ও ককটেল দিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে। জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত নাশকতা প্রবণ জেলাগুলোÑ চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, কুমিল্লা, দিনাজপুর, বগুড়া, গাজীপুর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, হবিগঞ্জ, সিলেট, পাবনা, ফেনী, নীলফামারী, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার। এছাড়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া, মাতুয়াইল কাঠেরপুল, ভাঙ্গাপ্রেস, কাজলা, ডগাইর, পারডগাইর, শ্যামপুর, নামাশ্যামপুর, ফতুল্লা, কমলাপুর রেলওয়ে বস্তি, মতিঝিল টিটিপাড়া বস্তি, রামপুরা, বনশ্রী, নতুনবাড্ডা, মধ্যবাড্ডা, বাড্ডার সাঁতারকুল, ভাটারা, মহাখালীর আমতলী মোড়, আব্দুল্লাহপুর, পল্লবীর কালশী নতুন রাস্তার মোড়, মিরপুর বেড়িবাঁধের চটবাড়ি ও দিয়াবাড়ি, আশুলিয়া মোড়, গাবতলী, আমিনবাজার, শ্যামলী টেকনিক্যাল মোড় ও মোহাম্মদপুর বেঁড়িবাধ এলাকা বোমাবাজি প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে অন্তত ৪০ স্পটে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ ও র্যাবের তরফ থেকে গোপন সিসি ক্যামেরা বসানো আছে। আরও সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। এগুলো বসানো হয়েছে অত্যন্ত গোপন জায়গায়, যা বাইরে থেকে দেখা যায় না। বিভিন্ন বাসাবাড়ির ছাদে, দেয়ালে বা সুবিধাজনক জায়গায় এসব গোপন ক্যামেরা বসানো আছে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অনেক বোমাবাজ ও তাদের ম“দাতারা বোমাবাজির আগে পুরো এলাকা রেকি করছে। বোমাবাজরা টার্গেটকৃত স্থানগুলোতে সিসি ক্যামেরা আছে কিনা তা আগাম জানার চেষ্টা করছে। বোমাবাজদের নির্দেশদাতারা তাদের টার্গেটে দৃশ্যমান সিসি ক্যামেরা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে। তথ্য সংগ্রহকারীদের সিসি ক্যামেরাগুলো ব্যক্তিগত তরফ থেকে লাগানো হয়েছে বলে অফিস-আদালত বা বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে জানানো হচ্ছে। এমনকি সিসি ক্যামেরা অধিকাংশ সময়ই বন্ধ রাখা হয় বলেও সিসি ক্যামেরা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহকারীদের জানানো হয়ে থাকে। রাজধানীতে আরও সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যের বুকে বডিওর্ন ক্যামেরা লাগিয়ে রাস্তায় নামানো হয়েছে। এসব ক্যামেরা দীর্ঘ সময় বিভিন্ন জায়গার ভিডিওফুটেজ সংগ্রহ করতে সক্ষম। এসব ক্যামেরা বেশিরভাগই লাগানো হচ্ছে সাদা পোশাকে থাকা পুলিশ সদস্যের গায়ে। গোপনে ভিডিও করতেই এমন কৌশল।