সোমবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না আটক

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আটক করেছে পুলিশ।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী মেহের নিগার।  মঙ্গলবার ভোর রাতে বানানী থেকে তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

রবিবার ইউটিউব ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্নার ফোনালাপের অডিও টেপ ফাঁস হয়।  চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ওই টেপে দুই নেতাকে বিশদ কথা বলতে শোনা যায়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে আন্দোলন বেগবান করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নাশকতা ঘটানো ও লাশ ফেলার বিষয়ে খোকাকে পরামর্শ দেন মান্না।  এই অডিও টেপ ফাঁস হওয়ার পর এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনার ঝড় উঠেছে।

এক সময়ের বামধারার ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না আশির দশকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। তখন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর পদ হারান মান্না।  এর পর নাগরিক ঐক্য নামে একটি দল গঠন করেন নিজেই।


উল্লাপাড়ায় ১৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নতুন ক্যাম্প স্থাপন


সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ১৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নতুন ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলা চত্বরে ক্যাম্প স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

১৪ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর ইকবাল আকতার  জানান, জেলার বেলকুচি, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর এবং বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়ক এলাকায় নৈরাজ্য ও নাশকতা ঠেকাতে দুই প্লাটুন বিজিবি সদস্য নিয়ে উল্লাপাড়ায় এ নতুন ক্যাম্পটি স্থাপন করা হলো।

জুনিয়র কমিশন কর্মকর্তা(জেসিও) সুবেদার আহসান হাবিবের নেতৃত্বে ৪০জন বিজিবি সদস্য নিয়ে সেখানে কাজ করবেন। তাদের সার্বিক কার্যক্রম সিরাজগঞ্জ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলেও তিনি জানান।

বৃহস্পতিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

হারিয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ

সৌরভ নেই- নেই তেমন কোন আকর্ষণ। তবে আবহমান গ্রামবাংলার শিমুল ফুলের গাছের সারি সারি চিরন্তন এক রুপ আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। শিমুল ফুল ড্রইং রুমের ফুলের তোড়ায় স্থান পাবার যোগ্যতা কোনদিনই ছিল না। কোন দিন হবেও না। কিন্ত শিমুল গাছ গ্রামবাংলার মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনয়নে এক বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে।

সারিবদ্ধভাবে বা বিক্ষিপ্তভাবে কাঁটাযুক্ত শিমুল গাছ গ্রামবাংলার সর্বত্রই কমবেশি নজরে পড়ে। তবে লালচে তাম্র বর্ণের মাটিতে টিলা আকারের স্থানে শিমুল গাছ বেশি জন্মে থাকে। বীজ থেকে চারা ফুটে বের হবার পর থেকে ৭/৮ বছরের মধ্যেই শিমুল গাছে ফুল ফোটে ও ফল ধরে। তবে গাছের বয়োপ্রাপ্তি হয় ১০/১২ বছর পর। এসময় থেকেই শিমুল গাছ থেকে অর্থনৈতিক উপযোগিতা পাওয়া যায়। এর ফুল গুচ্ছ আকারের কিঞ্চিত লালচে বর্ণের হয়ে থাকে। এ ফুলের তেমন কোন আকর্ষিত করবার মতো সৌরভ না থাকলেও পথচারীরা ক্ষণিকের তরে হলেও এর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ না করে পারে না। 

শিমুল গাছ সাধারণ ৭০/৮০ হাত লম্বা ও ৬/৭ হাত বা তদুর্ধ মোটা আকারের হয়ে থাকে। বন্যার পানি বা খরায় এর কোন ক্ষতি হয়না। বাঁচেও শতাব্দির পর শতাব্দি কাল পর্যন্ত। মাঘ ফাল্গুন মাসে এ গাছে ফুল ধরে। আগুন ঝরা এই ফাগুনে শিমুল ফুল অন্যরকম আবহ সৃষ্টি করে। চৈত্র বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ে ফল পরিপক্ক হয়। এগুলি সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে নিলে এর ভিতর থেকে বেড়িয়ে আসে সাদা ধবধবে তুলা। একটি বড় আকারের শিমুল গাছ থেকে বছরে কমপক্ষে ৩/৪ মন এমনকি তারও বেশি তুলা পাওয়া যায়। বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি শিমুল তুলা ৩শ’ ৫০ টাকা কেজি হিসাবে যার বাজার মূল্য দাঁড়ায় ৩৬ হাজার থেকে ৪৮ হাজার টাকা।

এক বিঘা পরিমান পতিত জমিতে লাইন করে প্রায় ৩০টি শিমুল গাছ লাগানো যেতে পারে। এর সবগুলিতে ফল দেয়া শুরু করলে তা থেকে তুলা সংগ্রহ করে বিক্রি করলে বছরে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা হতে পারে। এই জনপদে বেশকিছু পরিবার রয়েছে শিমুলের সংগৃহিত তুলা বিক্রি করে পরিবার- পরিজন নিয়ে সংসার চালান। এছাড়া শিমুল গাছ বড় আকারের হওয়ায় এর নিচে শাক-সবজি, মরিচ, বেগুন, পিঁয়াজ- রসুন, হলুদ ইত্যাদি আবাদ করায়ও কোন অসুবিধা হয়না। তবে অত্রাঞ্চলের এক শ্রেনীর অলস প্রকৃতির লোকজনের অবহেলার দরুণ শিমুল গাছ থেকে যথাসময়ে ফল সংগ্রহ না করার কারণে বিপুল মূল্যের তুলা গাছে থাকা অবস্থাতেই আকাশে উড়ে যায়। 

শিমুল তুলা যে শুধু মাথায় দেয়া বালিশের কাজে ব্যবহৃত হয় তাই নয়- শিমুল গাছের ছালও বিষফোঁড়া নিরাময়ে ধরন্তরী মহৌষধ। কবিরাজগণ পুরনো শিমুল গাছের ছাল চূর্ণ করে তাতে পুরানো গাওয়া ঘি মিশ্রিত করে বিষফোঁড়ার উপর প্রলেপ দিয়ে থাকে। তাছাড়া শিমুল মুলের কুচি কুচি চূর্ণ রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে গুড়সহ খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হয়। এমনকি বলবর্দ্ধকও বটে- মন্তব্য কবিরাজগণের। শিমুলের কচি কাঠ দিয়াশলাইয়ের কাঠি তৈরিতে উৎকৃষ্ট উপাদান হিসাবে বিবেচিত। শিমুলের পাতাও উৎকৃষ্ট জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শিমুল তুলার বীজ থেকে কোন ভোজ্য তেল তৈরি সম্ভব কিনা তাও পরীক্ষা- নিরীক্ষার দাবি রাখে।


সিরাজগঞ্জে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা নিপে ঃ দগ্ধ ৪

 সিরাজগঞ্জে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, দগ্ধ ৪ 
সিরাজগঞ্জে মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে দৃর্বৃত্তদের দেয়া পেট্রোল বোমার আগুনে ৪ যাত্রী দগ্ধ হয়েছে। তবে আহতরা সবাই শংকমুক্ত বলে পুলিশ জানিছেন। এদেরকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড়ের একটি বেসরকারী কিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। দগ্ধরা হলেন, টাঙ্গাইলের শখিপুরের চান্দু মিয়ার ছেলে খলিলুর রহমান (৩১), মির্জাপুরের জাকির হোসেনের ছেলে সজীব হোসেন (২৭), গাইবান্দার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার  রাখালপুর কান্দিপাড়ার মৃত, মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে রস্তুম আলী (৪০) ও একই উপজেলার মহির উদ্দিনের ছেলে মহসিন হোসেন। এ ঘটনায় আহত ৬জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

সাকোওয়াত মেমোরিয়াল হসপিটালের কতব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শংকর জানান, রাত ৮টার পর আহতরা কিনিকে আসে। এদের মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ৬জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আর ৪জন বেশী দগ্ধ হওয়ায় তাদের কিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এদের খলিলুর রহমান মাথায় আঘাত পেয়েছে এবং চোখের নিচে কেটে গেছে। বাকি ৩জনের হাত-পা ও শরীরের কয়েকটি স্থান পুড়ে গেছে।

ঢাকা থেকে রংপুরগামী চলনবিল টান্সর্পোট নামের একটি বাস রাত ৮টার দিকে মহাসড়কের ঝাঐল ওভারব্রীজের কাছে পৌছলে দূর্বৃত্তরা তাতে পেট্রোল বোমা নিপে করে। এতে বাসের চালকের কাছের লম্বালম্বি সিটে বসে থাকা লোকজনের উপর পড়ে। বোমাটি একটি টিভি বক্সের পড়ায় য়তি কম হয়েছে। তবে আগুনে টিভিটি পুড়ে গেছে বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন।  

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, সংবাদ পেয়ে তাৎনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। আহতরা সবাই আশংকামুক্ত রয়েছে। আমরা চিকিৎসার দেখভাল করছি। বাসটির তেমন তি হয়নি।

বঙ্গবন্ধু সেতু অন্ধকারে নিমজ্জিত জেনারেটর দিয়ে চলছে টোল আদায়

বঙ্গবন্ধু সেতু অন্ধকারে নিমজ্জিত,  জেনারেটর দিয়ে চলছে টোল আদায়
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের সদর উপজেলার মূলিবাড়িতে পল্লী বিদ্যুতের একটি খুটি ভেঙ্গে পড়ায় পুরো সেতু অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। তবে জেনারেটর দিয়ে সেতুর টোলপ্লাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।

সেতু রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে সেতুর সংযোগ মহাসড়কের মুলিবাড়িতে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে রাস্তার পাশে পল্লী বিদ্যুতের একটি খুটিতে ধাক্কা মারে। এতে খুটিটি উপড়ে পরে গেলে বিদ্যুতের তার ছিড়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই সেতুতে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ অবস্থায় পুরো সেতুটি অন্ধকারে রয়েছে। তবে বিকল্প হিসাবে জেনারেটর দিয়ে সেতুর উভয় প্রান্তের টোল প্লাজায় বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে যানবাহনের টোল আদায় করা হচ্ছে। কিছুটা সমস্যা হলেও সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক অব্যাহত রয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নাসিমুল গনি জানান, কড্ডার মোড় থেকে সেতুর দিকে যেতে ৪৫ ফুট লম্বা একটি পোল সন্ধ্যার আগে দ্রুতগামী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা খেয়ে ভেঙ্গে যায়। সেটি মেরামতে চেষ্টা চলছে। শুক্রবার সকালের আগে সেটি পাল্টানো সম্ভব নয়।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (সিরাজগঞ্জ)  উল্লাপাড়ার সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক তুষার ক্রান্তি দেবনাথ জানান, একটি পরিবহন চালকের ভুলের কারনে এ দুর্ঘটনা। এ ঘটনার সাথে আমাদের কেউই জড়িত নয়। বিদুৎ সংযোগ ঠিক করতে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

মঙ্গলবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

আবারও মাইশার মায়ের কান্না

মেয়ে আর স্বামীকে হারানো মাইশার মায়ের কান্না এবার আর একা কাঁদলেন না, তার কান্না কাঁদালো সবাইকে। সব হারানো বেদনা জানা যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ‍চোখ জলে ভরে ছিলো আগে থেকেই। মাইশার মায়ের কান্নায় তাকে চোখ মুছতে হয়েছে বার বার। আর জাতীয় জাদুঘরের মিলনায়তনে কয়েক শ’ মানুষের প্রত্যেককেই কাঁদিয়েছে সে কান্না।

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় জাদুঘরে চলমান হরতাল-অবরোধে বিএনপি-জামায়াতের নৃশংসভাবে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা ও সহিংসতা নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও আলোচনা সভায় এই পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-বিভাগ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছিলেন সরকারের মন্ত্রীরা, সংসদ সদস্যরা, বিদেশি কূটনীতিক, দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, সাংবাদিক আর রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। তাদের মাঝেই কথা বলছিলেন মাইশার মা মাফরুহা বেগম।
মাইশা এক কিশোরী। বাবা মায়ের সঙ্গে কক্সবাজারে আনন্দভ্রমণ শেষে ঢাকা ফেরার পথে এই পরিবারটি গভীর রাতে আক্রান্ত হয় আরও কিছু মানুষের সঙ্গে। পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে সে ঘটনায় প্রাণ হারান ১১ জন, আহত হন ৩০ জন। মাইশা ও তার বাবা নুরুজ্জামান প্রাণ হারান, কিন্তু শরীরে বিভিন্ন স্থানে দগ্ধ হয়েও প্রাণে বেঁচে যান মাফরুহা বেগম। তিনি বলেন, আমার কোলে একটু আগেও ঘুমিয়ে ছিলো মেয়েটি। ঘুমন্ত অবস্থায়ই দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারাতে হলো আমার ফুলের মতো মেয়েটিকে। প্রিয়তম স্বামী নূরুজ্জামানের কথা বলতে গিয়ে মাফরুহ‍া বেগম, আরেক দফা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার মৃত্যুতে বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবারের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন। জানান, ধর্মপ্রাণ স্বামী তার পুড়ে ছাই হয়ে গেছেন, কিন্তু মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তার বুক পকেটের তসবিহটি অক্ষত থেকেছে। ষোল কোটি মানুষের প্রতিনিধি হয়ে মাফরুহা বেগম বলেন, যারা পেট্রোল বোমা মেরে, আগুন জ্বালিয়ে মানুষ পুড়ে মারছেন তাদের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি, আর অনুরোধ করছি আপনারা এই অপরাজনীতি বন্ধ করুন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যারা আমার ফুলের মতো মেয়েটিকে পুড়িয়ে মারলো তাদের আপনি ধরুন, শাস্তি দিন। রাজনৈতিক শক্তিগুলোর প্রতি মাফরুহা বেগমের আহ্বান, আসুন আমরা দেশটাকে ভালোবাসি, দেশের জনগণকে ভালোবাসি। 

হাজির হয়েছিলো সুমন নামের ছোট্ট ছেলেটিও। জানালো পেট্রোল বোমার আগুন তারা মা ও ছোট বোনকে পুড়ে মেরেছে। তার বাবার দু হাত পুড়ে ছাই করেছে। সুমন জানিয়েছে সে অসহায়। কিভাবে বাঁচবে জানে না। কথা বলছিলেন যাত্রাবাড়িতে আগুনে পুড়ে মৃত নূর আলমের স্ত্রী চম্পা। তিনিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন। চম্পা বলেন, এই আগুনে যারা পুড়ছে তাদের কষ্ট আমি বুঝি। আমি আমার স্বামীর চিৎকার দেখেছি। আমার স্বামীই সে কথা বলেছে। নিজের কষ্ট সহ্য করেছে আর বলেছে, এই আগুনে যেনো আর কেউ না পোড়ে। 

সে কথাই বলছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষকে ধোকা দিতে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর সদস্যরা এভাবে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েই হামলা চালাতো। তিনি বলেন, এই অপশক্তির হাতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের অমর্যাদা হতে দেওয়া যায় না। আর অনুষ্ঠানের সঞ্চালক আসাদুজ্জামান নূরের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়, রাজনীতির নামে মানুষ হত্যা আর সহ্য করা হবে না। অস্রু আজ ক্রোধে পরিণত হয়েছে। এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতেই হবে। তিনি বলেন, এরা সন্ত্রাসী, এরা হত্যাকারী এরা জঙ্গি, এরা অগ্নিসংযোগকারী। এদের প্রতিহত করবোই।

রবিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বসানো হয়েছে গোপন সিসি ক্যামেরা


দেশের বিভিন্ন জেলায় নাশকতা প্রবণ তিন শতাধিক স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকার চল্লিশটিসহ দুই শতাধিক স্পটে বসানো হয়েছে গোপন সিসি ক্যামেরা। আর মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৯৯৩। চলমান এসএসসি পরীক্ষার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত কয়েকদিন ধরেই কর্ডন পদ্ধতিতে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত জেলাগুলোতে। অভিযানে সারাদেশ থেকে দুই শতাধিক পেশাদার নাশকতাকারী ও শতাধিক বোমা সরবরাহকারী এবং বোমাবাজদের অর্থদাতা গ্রেপ্তার হয়েছে। যেকোন ধরনের অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে র‌্যাবের হেলিকপ্টার। নাশকতা প্রবণ স্পট, মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানের আশপাশে অবস্থিত অফিস, আদালত, বাসাবাড়ি, বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন এবং পেট্রলপাম্পগুলোতে থাকা সিসি ক্যামেরাগুলো সচল রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, দেশের যেসব এলাকায় বস্তি ও জামায়াত-শিবিরের প্রভাব বেশি সেসব এলাকায় নাশকতার ঘটনা বেশি ঘটছে। এসব এলাকায় পেট্রলবোমা ও ককটেল দিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে। জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত নাশকতা প্রবণ জেলাগুলোÑ চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, যশোর, কুমিল্লা, দিনাজপুর, বগুড়া, গাজীপুর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, হবিগঞ্জ, সিলেট, পাবনা, ফেনী, নীলফামারী, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার। এছাড়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া, মাতুয়াইল কাঠেরপুল, ভাঙ্গাপ্রেস, কাজলা, ডগাইর, পারডগাইর, শ্যামপুর, নামাশ্যামপুর, ফতুল্লা, কমলাপুর রেলওয়ে বস্তি, মতিঝিল টিটিপাড়া বস্তি, রামপুরা, বনশ্রী, নতুনবাড্ডা, মধ্যবাড্ডা, বাড্ডার সাঁতারকুল, ভাটারা, মহাখালীর আমতলী মোড়, আব্দুল্লাহপুর, পল্লবীর কালশী নতুন রাস্তার মোড়, মিরপুর বেড়িবাঁধের চটবাড়ি ও দিয়াবাড়ি, আশুলিয়া মোড়, গাবতলী, আমিনবাজার, শ্যামলী টেকনিক্যাল মোড় ও মোহাম্মদপুর বেঁড়িবাধ এলাকা বোমাবাজি প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে অন্তত ৪০ স্পটে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ ও র‌্যাবের তরফ থেকে গোপন সিসি ক্যামেরা বসানো আছে। আরও সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। এগুলো বসানো হয়েছে অত্যন্ত গোপন জায়গায়, যা বাইরে থেকে দেখা যায় না। বিভিন্ন বাসাবাড়ির ছাদে, দেয়ালে বা সুবিধাজনক জায়গায় এসব গোপন ক্যামেরা বসানো আছে।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, অনেক বোমাবাজ ও তাদের ম“দাতারা বোমাবাজির আগে পুরো এলাকা রেকি করছে। বোমাবাজরা টার্গেটকৃত স্থানগুলোতে সিসি ক্যামেরা আছে কিনা তা আগাম জানার চেষ্টা করছে। বোমাবাজদের নির্দেশদাতারা তাদের টার্গেটে দৃশ্যমান সিসি ক্যামেরা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে। তথ্য সংগ্রহকারীদের সিসি ক্যামেরাগুলো ব্যক্তিগত তরফ থেকে লাগানো হয়েছে বলে অফিস-আদালত বা বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে জানানো হচ্ছে। এমনকি সিসি ক্যামেরা অধিকাংশ সময়ই বন্ধ রাখা হয় বলেও সিসি ক্যামেরা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহকারীদের জানানো হয়ে থাকে। রাজধানীতে আরও সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। এছাড়া পুলিশ সদস্যের বুকে বডিওর্ন ক্যামেরা লাগিয়ে রাস্তায় নামানো হয়েছে। এসব ক্যামেরা দীর্ঘ সময় বিভিন্ন জায়গার ভিডিওফুটেজ সংগ্রহ করতে সক্ষম। এসব ক্যামেরা বেশিরভাগই লাগানো হচ্ছে সাদা পোশাকে থাকা পুলিশ সদস্যের গায়ে। গোপনে ভিডিও করতেই এমন কৌশল।

সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।