শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

সীমান্তপথে ঢুকছে অবৈধ অস্ত্র, গন্তব্যস্থল রাজধানী

সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধ অস্ত্র প্রবেশের পর তা খুব সহজেই পৌঁছে যায় রাজধানীতে। ছোট বড় অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসায়ীরা বলছেন সীমান্তে বিজিবির চোখ এড়িয়ে, বিভিন্ন চেক পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সখ্য গড়ে এবং কখনও কখনও সাংসদদের গাড়ি ব্যবহার করে অবৈধ অস্ত্র দেশের ভেতরে আনছে তারা।

অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, বেনাপোল, শার্শা এবং সোনামসজিদ সীমান্তকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে প্রধানত অবৈধ অস্ত্র দেশের ভেতরে আনা হয়। এছাড়াও ব্যবহার করা হয় যশোর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা এবং রাজশাহী সীমান্ত। সেখান থেকে পণ্য পরিবহনের গাড়িতে করে সেগুলো আনা হয় রাজধানীতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী জানায়, 'যমুনা সেতু পর্যন্ত আসে একটা আশ্রয়ে, এরপর সেখান থেকে নৌকা পার হয়ে এপারে আসার পর একেকজন গাবতলী, যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ এদিকে নেমে যায়। বেশিরভাগ অস্ত্রই আসে ভারত থেকে। বর্ডার থেকে অনেক এ কে ৪৭ পাচার হয়েছে, এগুলোর মধ্যে দুই থেকে তিন হাজার অস্ত্র গত ছয় মাসে ঢাকায় ঢুকেছে। নাইন এম এম ৪শ' থেকে ৫শ' টি, ফাইভ স্টার ৫০ থেকে ১শ' টি অস্ত্র এসেছে এর মধ্যে ফাইভ স্টারের চাহিদা কম।'
অবৈধ অস্ত্র বহনের নির্ভরযোগ্য মাধ্যমগুলো হচ্ছে: চিনির বস্তা, তেলের কন্টেইনার, মাছের ট্রাক, বাঁশের গাড়ি।
অবৈধ অস্ত্রের গন্তব্যস্থল: গাবতলী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, মিরপুর, বাড্ডা, রামপুরা, খিলগাঁও এবং বস্তি এলাকা।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অবৈধ অস্ত্র এমন কৌশলে পরিবহন করা হয় যে কারো পক্ষেই এ ব্যাপারে সন্দেহ করা সম্ভব হয় না। দাপুটে সরকারি গাড়ির ব্যবহারের কারনেই এটা হয়ে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী আরো জানায়, 'মন্ত্রী মিনিস্টারের পিএস মিএস যারা আছে তাদের মাধ্যমেই আসে। দলীয় প্রভাবে কিছু বলতেও পারে না, মন্ত্রী মিনিস্টারের লোকেরা পিএস'রা বলে, টেলিফোন করে ফলে যে কোন লোক ছেড়ে দেয়।'

অতীতেও অপরাধীরা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেছে স্বীকার করে, ডিএমপি মূখপাত্র মনিরুল ইসলাম জানান, এক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

ডিএমপি মূখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, 'ইতিপূর্বে কতিপয় সরকারি কর্মকর্তার কিছু গাড়ির ড্রাইভারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ অর্থাৎ তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসাও হয়েছে। তবে এই বিষয়টি আমরা ভবিষ্যতে আরও বেশি নজরদারির মধ্যে নিয়ে আসবো।'

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এটিএম হাবিবুর রহমান বলেন, 'আমাদের আভিযানিক কার্যক্রম চালানোর জন্য যে পরিমাণ গোয়েন্দা তথ্য আমাদের দরকার, সে পরিমাণ গোয়েন্দা তথ্য আমরা পাই এবং এ পরিমান গোয়েন্দা তথ্য চালানোর জন্য যে পরিমাণ গোয়েন্দা কার্যক্রম চালানো দরকার সেই পরিমাণ গোয়েন্দা কার্যক্রম চালাই।'

অবৈধ অস্ত্র সরবরাহকারীদের কাছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্রেরও সন্ধান মিলেছে। যা কিনা বিগত দিন গুলোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সহিংসতায় খোয়া গেছে।

সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।