রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জেসাংবাদিকদের নামে কুৎসা রটনা করে শিবিরের নামে চিঠি সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ, শিবিরের না, প্রকৃত পত্রদাতাদের উন্মোচন দাবী

সিরাজগঞ্জে প্রখ্যাত সাংবাদিকদের নামে কুৎসা রটনা করে শিবিরের নামে চিঠি সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ, শিবিরের না, প্রকৃত পত্রদাতাদের উন্মোচন দাবী
সিরাজগঞ্জের প্রখ্যাত সাংবাদিকদের নামে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্যাড ব্যবহার করে চিঠি দেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে সিরাজগঞ্জ শহর ও দুদিন আগে উল্লাপাড়া শিবিরের নাম, প্যাড, সিল ব্যবহার করে এসব পত্র দেয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। যদিও শিবির এ সব পত্রের কথা অস্বিকার করে বলেছে তাদের নাম ব্যবহার করে অন্যকেউ এসব পত্র দিয়েছে । এ নিয়ে সিরাজগঞ্জের সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সিরাজগঞ্জে কর্মরত বেসরকারী টেলিভিশন ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় কর্মরত ৫ জন সাংবাদিকের নামে ডাক যোগে একটি পত্র দেয়া হয়। ঐ পত্রে একটি টিভি’র স্থানীয় অফিসকে আওয়ামীলীগ পন্থি বলে অভিহিত করা হয়। অন্য সাংবাদিকদেরও আওয়ামীলীগের পন্থী হিসেবে জামাত এর নামে এ চিঠিতে ৫ সাংবাদিক ও তাদের অফিসে হামলা হতে পারে বলে জানান দেয়া হয়েছে। এসব সাংবাদিকদের সাথে জামাত শিবিরের কোন পর্যায়ে ব্যাক্তিগত ও রাজনৈতিক মতবিরোধ মনমালিণ্য না হলেও শিবিরের নামে দেয়া এ চিঠি নিয়ে সাংবাদিক মহলে হৈচৈ পড়ে যায়। সিরাজগঞ্জের সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বস্তুনিষ্ঠ ও পেশাগত সততা ধরে রাখার পরও এরকম চিঠিতে সাংবাদিকদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভ তৈরী হয়েছে। এ চিঠির ক্ষত শেষ না হতেই গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ডাক যোগে সিরাজগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের হাতে আবারো একটি পত্র হস্তগত হয়। পত্রটি দেয়া হয়েছে উল্লাপাড়া উপজেলা ছাত্রশিবিরের নাম প্যাড ও সিল ব্যবহার করে। এচিঠিতে সিরাজগঞ্জের বিশিষ্ট দুজন সাংবাদিকের নামে মিথ্যে, বানোয়াট, কাল্পনিক, অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্ঠা করা হয়েছে। যে সব বিষয় আইন দিয়ে সমাধান হয়েছে, যে সব বিষয় সাধারন মানুষের এখতিয়ার বহির্ভুত নয় তা ঐ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এ পত্র পেয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরী হয়েছে। বিষয়টি জামাত শিবিরের দায়িত্বশীলদের কাছে পৌছার পর সিরাজগঞ্জ শহর শাখার শিবির ও উল্লাপাড়ার শিবিরের নেতৃবৃন্দ উম্মা প্রকাশ করে বলেছেন, এসব পত্র ও পত্রের ভাষার সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই এমনকি এসব পত্র দারা সাংবাদিকদের সাথে তাদের সম্পর্ক বিনষ্ট করার চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কোন এক কুচক্রী মহল বিশেষের ষড়যন্ত্রের নিন্দা জানিয়ে এসব মিথ্যে প্রচারনায় বিভ্রান্ত না হবার জন্য সংশ্লিস্ট সকলকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। শিবিরের পক্ষ থেকে পত্র দাতাকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করা হয়েছে। শিবিরের পক্ষ থেকে তাদের নামে দেয়া পত্রের প্রতিবাদ নিন্দা জ্ঞাপন করার পর সাংবাদিকদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তাহলে ঐ সব পত্র দাতা কারা?। এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সভাপতি বেসরকারী টেলিভিশন বাংলা ভিশনের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি হারুন অর রশিদ খান হাসান বলেন, এই ধরনের বেনামের পত্র এর আগেও সাংবাদিকদের নামে দেয়া হয়েছে, মানবাধিকার কমিশন, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী, প্রশাসন এমনকি জাতীয় পর্যায়ের সকল প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া অফিসেও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নামে পত্র দেয়া হয়েছে। কতিপয় অসামাজিক লোক এসব পত্র প্রদানের সাথে যুক্ত। সাংবাদিক নামধারী কতিপয় চিহ্নিত ব্যাক্তিরা অন্যের যোগ্যতার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব পত্র প্রদান করে প্রকৃত সাংবাদিকদের অসন্মান করতে চায়। তাদের মনে রাখা উচিৎ নিজের অযোগ্যতার জন্য যোগ্য ও সন্মানীত লোকদের বিরুদ্ধাচারন করা যায়না। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হয়। অন্যের যোগ্যতা থামিয়ে দিয়ে নয়। সিরাজগঞ্জ টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি ও চ্যানেল আই’য়ের স্টাফ রিপোর্টার ফেরদৌস রবিন বলেন, এধরনের পত্রের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সিরাজগঞ্জের প্রখ্যাত সাংবাদিকদের নামে এরকম কুৎসা রটনা অব্যাহত থাকলে প্রয়োজনে সাংবাদিক সমাজ আন্দোলন করতে বাধ্য হবে। সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক, দৈনিক যুগের কথার সম্পাদক, দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও দেশ টেলিভিশনের সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি হেলাল উদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, সাংবাদিকরা জাতীর বিবেক। মহান মুক্তিযুদ্ধে সাংবাদিকদের উজ্জল ভুমিকা রয়েছে। মাতৃভাষা আন্দোলনে সাংবাদিকরা অগ্রভাগে থেকেছে। দেশের গনতন্ত্র ও স্থানীয় সরকারকে টেকসই করতে আমরা অগ্রনী ভুমিকা রেখে যাচ্ছি। স্থানীয় পর্যায়ে সকল গণতান্ত্রীক আন্দোলনে সিরাজগঞ্জের সাংবাদিকরা অগ্রনী ভুমিকা রেখেছে। সিরাজগঞ্জের উন্নয়নে আমাদের উজ্জল দৃস্টান্ত রয়েছে। সেই সময় কতিপয় কুচক্রী মহল সাংবাদিকদের সন্মান নস্ট করার জন্য নামে বেনামে সরকারী বেসরকারী বিভাগে পত্র দিয়ে আমাদের লজ্জিত করছে। এরা দির্ঘদিন থেকে একাজ করছে, সাংবাদিকদের কাছে এরা সকলেই চিহ্নত। এদের চরিত্র ইতিমধ্যে নানাভাবে প্রশাসন ও জনগন জেনে গেছে। এদের প্রকৃত চরিত্র খুব শিঘ্রই উন্মোচিত করতে হবে। দৈনিক কালের কন্ঠ ও এনটিভি সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি অসীম মন্ডল এ প্রসঙ্গে বলেন, সাংবাদিদের নামে এরকম পত্র প্রদান অশালীন কর্মকান্ডের মধ্যে পরে। এর সাথে যুক্তরা সমাজের নিকৃস্ট মানুষ। এর আগে মিথ্যে এবং অসত্য তথ্য দিয়ে পোষ্টারিং করে সাংবাদিকদের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। জনগণের সামনে সাংবাদিকদের সুনাম নষ্টের জন্য দুষ্টচক্র নোংরামী করছে।
 

সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।