বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

পিকনিকে গিয়ে খুন সিরাজগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মনতোষঃ লাশ মিলল নদীর কচুরিপানায়

সিরাজগঞ্জের  বেলকুচিতে নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পর মনতোষ কুমার সরকার (২৮) নামে এক সিরাজগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবারসকালে   উপজেলার   বিশ্বাসবাড়ী   গ্রামে   হুড়াসাগর   নদীতে কচুরিপানার ভেতর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত মনতোষ কুমার উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের খাস সোনামুখী গ্রামেরমঙ্গল চন্দ্র সরকার ওরফে মংলা  ও বনবালা সরকারের ছেলে। এলাকা ও স্থানীয়বাসীরা জানায়, জোকনালা গ্রামে মনতোষ কুমারসরকারের মৃত্যুর খবর শুনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং বাড়িতেচলছে শোকের মাতম। মনতোষ কুমার সরকার ছোট কাল থেকেই ছাত্র ছিলমেধাবী। সে খাস সোনামুখী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাস করেখাস সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ভাল ফলাফল করে সিরাজগঞ্জ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে   উচ্চ মাধ্যমিক ভর্তি হয়  বানিজ্য বিভাগ নিয়ে। মনতোষ কুমার  সরকার কলেজ জীবন নিজের জীবনকে লক্ষ্যমাত্রায় পৌছানোর জন্য অনার্সে ভর্তি একই বিশ্ববিদ্যালয় এন্ড কলেজে। সেখান থেকে ২০১৭ সালের ফলাফলে ম্যানেজম্যান্ট বিষয় নিয়েএম. কম প্রথম বিভাগে পাশ করে। মঙ্গল চন্দ্র সরকার ওরফে মংলা ও বনবালা সরকারের দুই ছেলে। তার মধ্যে মনতোষ কুমার সরকার বড় এবং দ্বিতীয়ছেলে দীপক কুমার সরকার মনুষিক রুগী ।  আজ পাগল ছেলে রয়ে গেল, চলে গেলমেধাবান ছেলে মনতোষ কুমার সরকার। 

এদিকে বেলকুচি থানা পুলিশ নিহত মনতোষ কুমার সরকারকে হত্যারসাথে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে। আটকরা হলেন, কামারখন্দউপজেলার   বলরামপুর   গ্রামের   গিয়াস   উদ্দিনের   ছেলে   শিপন   (৩২)বেলকুচি উপজেলার খাস সোনামুখী গ্রামের দেওয়ান কুমারের ছেলেসুজন কুমার। বেলকুচি থানার উপ-পরিদর্শক শামীম রেজা জানান,মনতোষ সোমবার রাতে নিখোঁজ হন। মঙ্গলবার দুপুরে তার কাকাতোভাই   অচিন্ত্য   কুমার   থানায়  অভিযোগ   দায়ের   করেন।   অভিযোগেরপ্রেক্ষিতে শিপন ও সুজনকে রাতেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।তাদের দেয়া তথ্যমতে বুধবার সকালে বিশ্বাসবাড়ী হুড়াসাগর নদীতেকচুরি পানার ভেতরে লুকানো মনতোষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন খাস সোনামুখী গ্রামের দেওয়ান কুমারের ছেলে সুজন কুমার ও জেলার কামারখন্দ উপজেলার বলরামপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে শিপন (৩২)।

নিহত যুবকের চাচাতো ভাই অচিন্ত কুমার সরকার জানান, সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রতিবেশী সুজনের সঙ্গে পিকনিকে যাওয়ার কথা বলে বলরামপুর গ্রামে শিপনদের বাড়ি যান মনতোষ। এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি। পরে রাত ৩টার দিকে এক ব্যক্তি মনতোষের ভাই কৃষ্ণ কুমারকে ফোন করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণের টাকা কীভাবে, কোথায় দিতে হবে তা নিয়ে রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় কথা হয়। তারপরও মনতোষের সন্ধান মিলছিল না। পরে দুপুরে থানায় অভিযোগ করা হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সকালে নদীতে তার মরদেহ পাওয়া গেলো।

বেলকুচি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আলীম জানান, অভিযোগ পেয়ে রাতেই শিপন ও সুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের দেয়া তথ্য মতে বুধবার সকালে বিশ্বাসবাড়ী হুড়াসাগর নদীতে কচুরিপানার ভেতরে লুকানো মনতোষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি আরো জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।