অত্যন্ত গরীব পরিবারে সংসারপাতা নুরজাহান। তার স্বামী ছানোয়াকে সাহয্য করতে করতে সক্রিয় রাজাকার হয়ে ওঠে। লুট, ধর্ষন, খুন সবকিছুর পেছনে ও সামনে দুতরফেই অংশগ্রহণ ছিল নুরজাহান রাজাকারের। গোপীনাথপুর গ্রামে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কোন পাকিস্তানী মিলিটারি আসেনি। কিন্তু রাজাকারদের দুঃসহ পদচারনা ছিল। নুরজাহান আর ছানোয়ারের মতো সুযোগ সন্ধানী
স্বার্থপরদের সহায়তায় গোপীনাথপুরে লুট আর হত্যা যজ্ঞ চালিয়েছিলো রাজাকার ও আলবদর বাহিনী। ১৯৭১ এর যুদ্ধকালীন পুরো সময় গোপীনাথপুর গ্রামটি নরকে পরিনত হয়েছিল। যর প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে ছিলো নুরজাহান রাজাকার। এসবের মধ্যেও ঐ গ্রামের দামাল ছেলেরা যুদ্ধে গিয়েছিল। পাকিস্থানী মিলিটরিদের সাথে গেরিলা ও সম্মুখযুদ্ধে লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছে। ফিরে আসা মুক্তিযোদ্ধারা ছানোয়ার রাজাকারের বিচার নিশ্চিত করলেও নুরজাহান রাজাকারের বিচার হয়নি। তার সঙ্গীদের হারানোর বেদনা নুরজাহান রাজাকারের প্রতিশোধের তান্ডব আজো মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে।
উক্ত পটভুমিতে তৈরি নাটক ‘‘অসমাপ্ত’’ দর্শকদের হৃদয় স্পর্শ করেছে। বিশেষ করে নুরজাহানের চরিত্রে তরুণ অভিনেত্রী নিলা রহমানের অনবদ্য অভিনয় বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়া রাজাকারের চরিত্রে ফরিদুল ইসলাম সোহাগ, খালেক মাওলনার চরিত্রে আসাদ উদ্দিন পবলু, ওসমানের চরিত্রে ইমরান হোসেনের অভিনয় দর্শকদের দীর্ঘদিন মনে থাকবে। অন্যান্য চরিত্রে সুমন, তাহমিনা কলি, আয়শা নাসরিন এমিলি, জান্নাতুল ফেরদৌস কেয়া, যুগান্তর রন্টি, তুহিন রহমান, পিদিম, শান্ত, শাকিল, অনিক, আসাদ, মৌ, মোহনী, মীম, কেয়া, খ.ম. আখতার হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, পাপ্পু, বাবু, হাসান, মনোয়ার, আবীর, অনিক, শাকিল, মোনা, সুইটি ও কনা ভাল অভিনয় করে দর্শকদের প্রশংসা অর্জন করেছে। দেশের অন্যতম বরেন্য নাট্যকর ডঃ মাহফুজা হিলালী নাটকটি রচনা করেছেন এবং পরিচালনায় ছিলেন প্রথিতযশা নাট্য পরিচালক আমিনুল রহমান মুকুল ও সহযোগি ছিলেন এ.কে আজাদ। দীর্ঘদিন পর সিরাজগঞ্জের একটি গ্রামের মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটে যাওয়া কাহিনী নিয়ে রচিত নাটকটি সিরাজগঞ্জের মানুষকে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে যুদ্ধের সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথা। আজকের প্রজন্মের মানুষের কাছে যুদ্ধের সেইগুলোকে তুলে ধরায় প্রয়াস দারুন ভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। নাটক মঞ্চায়ন শেষে প্রতিদিনই নাট্য দর্শকগণ অনুভুতি প্রকাশ করছেন। বিশিষ্ট নাট্য ও সংস্কৃতিক ব্যক্তিদের মধ্যে আনু ইসলাম, আছির উদ্দিন মিলন, হেলাল আহমেদ, মাহবুব এ খোদা টুটুল, ইমরান মুরাদ, নাটকটি উচ্ছসিত প্রসংশা করেছেন এবং শুধু সিরাজগঞ্জেই নয় দেশের সর্বত্র এবং দেশের বাইরেও নাটকটি মঞ্চস্থ করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।