বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জে পুনরুদ্ধার হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকার জমি

সিরাজগঞ্জে পুনরুদ্ধার হচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকার জমিসিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পাইলট ড্রেজিং এর ফলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে উত্তর পশ্চিমের গাইড বাঁধের কোল ঘেঁষে প্রায় সাড়ে আট বর্গকিলোমিটার এবং সেতুর উজানে শৈলাবাড়ি এলাকায় আরও আট বর্গ কিঃমি মোট সাড়ে ১৬ বর্গ কিঃমিটার জমিতে পলি পড়েছে। যা আগামী দু’বছরের মধ্যেই ফসল উৎপাদন করা যাবে। বর্তমান বাজার দরে জমির মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

বঙ্গবন্ধু সেতুর কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা শিল্প পার্কে শিল্প প্লট হিসেবে এই জমি ব্যবহার করা যাবে। ড্রেজিং করা বালি দিয়ে নদীর ভেতরে বিভিন্ন পরিমাপের চারটি ক্লোজার বা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এই ক্লোজার যেমন দর্শনীয় স্থান হিসেবে পর্যটকদের আকর্ষণ করবে তেমনি গাইড বাঁধ হিসেবেও কাজ করবে। তবে তা প্রতিবছর রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে নতুবা এর সুফল থেকে বঞ্চিত হবে সিরাজগঞ্জবাসী।

পানি উন্নযন বিভাগ এই বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রায় ২৫৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সিরাজগঞ্জবাসী প্রত্যাশা করে যমুনা থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকার জমি উদ্ধার করে তা রক্ষা করতে তিনশ’ কোটি টাকা খরচ খুব একটি বেশি বলে মনে হয় না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের এক জরিপ অনুযায়ী প্রতিবছর যমুনায় দু’বিলিয়ন টন পলি জমে। এর ফলে নদীর তলদেশের উচ্চতা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এতে পানির ধারণ ক্ষমতা কমে প্রতি বছরই অতিবন্যা এবং নদীর উভয়পাড়ে ভাঙ্গন দেখা দেয়। ভাঙ্গনে লণ্ডভন্ড হয়ে যায় গ্রাম জনপদ। যমুনার করালগ্রাসে কমতে থাকে আবাদী জমি, দুর্দশা বাড়ে মানুষের। প্রমত্তা যমুনা বিচিত্র গতি প্রকৃতির নদী। সিরাজগঞ্জের কাছে গড়ে ১৬ কিঃমিঃ প্রশস্থ এই যমুনা এঁকে বেঁকে বহুধা স্রোতধারায় প্রবাহিত হচ্ছে। কখনও পশ্চিমে আবার কখনও পূর্বদিকে ধাবিত হচ্ছে। জেগে ওঠছে বিশাল আকারের ডুবো চর। এতে স্বাভাবিক নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নদীর তলদেশে পলি জমে ভরাট হচ্ছে। স্রোতধারা শীর্ণকায় হয়ে পানির উচ্চতা বাড়ছে। এ কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহ বাড়লেই অতিবন্যায় গ্রাম জনপদ পানিতে সয়লাব হয়ে জনভোগান্তি বাড়ে।

সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, যমুনায় ক্যাপিটাল ড্রেজিং শেষ হয়েছে এবং ড্রেজিং করা বালি মাটি দিয়ে চারটি ক্রস বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এ বাঁধ রক্ষা করা গেলে জমি পুনরুদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে।

পানি উন্নয়ন বিভাগের (পওর) নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্র শীল জানান, আগামি ডিসেম্বর থেকে রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং শুরু হবে। ড্রেজিং করা বালি মাটি দিয়ে যমুনায় চারটি ক্রস বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় সাড়ে ১৬ বর্গ কিঃমি জমি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই জমি আগামী দু’ বছরের মধ্যে ব্যহার উপযোগী হবে। বর্তমান বাজার দরে এই জমির মূল্য প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রায় দু’ শো ৫৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হযেছে। ২০১৩- ১৪ অর্থ বছরে তা বাস্তবায়ন করার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।