সরকারের ‘শেখার মাধ্যমে আয়’ (লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং) কর্মসূচিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) দেশের বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) মাধ্যমে প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং প্রশিক্ষণার্থীকে ল্যাপটপ ক্রয়ে ঋণ সহায়তা দেবে।
বুধবার পিকেএসএফ মিলনায়তনে শেখার মাধ্যমে আয় বিষয়ক এক কর্মশালায় সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবদুল করিম এ কথা জানান।
এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তথ্য ও যোযোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে দুই জন এবং পিকেএসএফ থেকে দুই জনকে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে মনোনীত করা হয়।
কর্মশালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম খান শেখার মাধ্যমে আয় প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশে ফ্রিল্যান্সার থেকে উদ্যোক্তা এবং উদ্যোক্তা থেকে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট তৈরির কর্মপরিকল্পনা নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের শেখার মাধ্যমে আয় প্রোগ্রামের মাধ্যমে নয় মাসে ১৫ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরি হয়েছে। যারা আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অনলাইনে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন।
এ দুইটি অনলাইন মার্কেট প্লেসে দেশের ফ্রিল্যান্সারদের অবদানের কথা উল্লেখ করে আইসিটি সচিব বলেন, ওডেস্কে পাকিস্তান, রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সারদের কাজের প্রবৃদ্ধি বিগত নয় মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে একশ দুই শতাংশ। ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং খাত থেকে বাংলাদেশের আয় এবছর ৪০ মিলিয়ন মার্কিং ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এন আই খান বলেন, আগামী বছর শেখার মাধ্যমে আয় প্রোগ্রামের মাধ্যমে ৪৫ হাজার ফ্রিল্যান্সার তৈরি করা হবে। সরকারের লক্ষ্য প্রথমে ফ্রিল্যান্সার তৈরি করা। পরে এসব ফ্রিল্যান্সারের মধ্য থেকে উদ্যোক্তা এবং শেষে এসব উদ্যোক্তার মধ্য থেকে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) বা আইটি ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট তৈরি করা হবে।
সচিব বলেন, ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র (ইউআইএসসি) থেকে বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার তরুণ-তরুণী কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের লিভারেজিং আইসিটি প্রকল্প থেকে ৩৪ হাজার আইটি পেশাজীবী তৈরি হচ্ছে। এছাড়া স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট এবং স্ব-উদ্যোগে প্রচুর সংখ্যক কম্পিউটার প্রশিক্ষিত মানুষদের টার্গেট করে শেখার মাধ্যমে আয় প্রোগ্রামকে উপজেলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হবে। এ ব্যাপারে বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) সহযোগিতা কামনা করছি।’
শেখার মাধ্যমে আয় এর মতো উদ্ভাবনী কর্মসূচির প্রশংসা করে পিকেএসএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত মেধাবী। তাদের আয়ের পথ দেখিয়ে দিলে নিজেরাই আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলবে।’
তিনি বলেন, এ কর্মসূচি তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে বেসরকারি সংস্থাগুলোর সম্পৃক্ততার প্রয়োজন রয়েছে। খুব শিগগিরই আইসিটি মন্ত্রণালয় পিকেএসএফ এর এনজিও কর্মকর্তাদের নিয়ে বড় আকারে কর্মশালার উদ্যোগ নেবে।
কর্মশালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মোবাইল অ্যাপস কর্মসূচির পরিচালক ড. মোহাম্মদ আবুল হাসান, লিভারেজিং আইসিটি প্রকল্পের কমিউনিকেশন কনসালট্যান্ট অর্জিত কুমার সরকার ও টেকনিকেল স্পোশালিস্ট খালিদ নোমান হুসাইনী ও পিকেএসএফ এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদেরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।