Israil Babu
আজ ১৪ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ মুক্ত দিবস। মিত্র বাহিনীর সহায়তা ছাড়াই দীর্ঘ
আটমাস হানাদার বাহিনীর কাছে অবরুদ্ধ থাকার পর ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে
শত্রু মুক্ত হয় এই জেলা। এদিন স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে উৎসবে মেতে
উঠেছিল শৃংখল মুক্ত সিরাজগঞ্জবাসী।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে পরবর্তী ১
মাস তৎকালীন সিরাজগঞ্জ মহুকুমা ছিল হানাদার বাহিনী মুক্ত। এপ্রিল মাসের
শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানী বাহিনী সিরাজগঞ্জে প্রবেশ করে। এ সময়
মুক্তিযোদ্ধারা বাঘাবাড়ি, ঘাটিনা সহ বিভিন্ন স্থানে
প্রতিরোধ গড়ে তুলেও ব্যর্থ হয়। পরবর্তী মাসগুলো ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের
গৌরবমাখা স্বর্ণোজ্জল অধ্যায়। এ সময় সিরাজগঞ্জের বড়ইতলী, বাগবাটি,
ব্রম্মগাছা, নওগা, বারুহাস, কৈগাড়ি, ভদ্রঘাট বিভিন্ন স্থানে
মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধে বিপুল সংখ্যক পাকসেনা নিহত হয়।
১২
ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ শহর থেকে খানিকটা উত্তরে শৈলাবাড়ি ও ছোনগাছায় বিপুল
সংখ্যক মুক্তিবাহিনী সমবেত হয়। খবর পেয়ে পাক বাহিনীও সেখানে ছাউনি ফেলে।
রাতেই মুক্তিবাহিনীরা হামলা চালায় শত্রু শিবিরে। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা
সুলতান, সামাদ ও সোহরাব হোসেন শহীদ হন। রাতভর যুদ্ধ শেষে পরাজিত পাকবাহিনী
গুলি ছুড়তে ছুড়তে শহরের দিকে পিছু হটে। এ সময় মুক্তিবাহিনীর বিপুল গেরিলা
সদস্য শহরের উত্তর পশ্চিম ও পূর্ব দিক থেকে পাকসেনাদের অবরুদ্ধ করে রাখে।
১৩ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন
ইঞ্জিনিয়ার আহসান হাবিব। এ যুদ্ধে পাকবাহিনী পরাজিত হয়ে রাতেই ট্রেনযোগে
উল্লাপাড়া রেলষ্টেশন হয়ে নগরবাড়ির দিকে পালিয়ে যায়।
১৪ ডিসেম্বর সকালে
মিত্র বাহিনীর বিমান সিরাজগঞ্জ জেলার উপরে টহল দেয়। পরিত্যাক্ত শত্রু শিবির
লক্ষ্য করে বিমান থেকে গুলি ছোড়া হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা
সিরাজগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে। শহরের বি.এ কলেজ ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে উড়ায়
স্বাধীন দেশের পতাকা। এরপর ঘরে ঘরে উত্তোলিত বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা
জাতীয় পতাকা।