জামায়াত-বিএনপির সরকারি বিরোধী আন্দোলনে বেকায়দায়
সিরাজগঞ্জ প্রশাসন। কিছু কিছু এলাকা চলে যাচ্ছে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের
বাইরে।
মূলত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় ঘোষণার পর থেকে সিরাজগঞ্জ
জেলা উত্তপ্ত হতে থাকে। সরকারি বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপি-জামায়াত
নেতাকর্মীরা গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ, সড়ক-মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি,
যানবাহন, বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মতো অসংখ্য ঘটনা ঘটাচ্ছে।
মারপিট করা হচ্ছে কর্তব্যরত পুলিশকে। ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে পুলিশের
পিকআপভ্যান। মারপিট থেকে বাদ পড়ছে না মিডিয়াকর্মীরাও।
এ সকল ঘটনা
নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশও হয়ে উঠছে বেপরোয়া। এ পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ সদরে ৫,
বেলকুচিতে ৪, এনায়েতপুরে ১ ও উল্লাপাড়ায় ১ জন মিলে মোট ১১ জনের প্রাণহানি
ঘটেছে। এদের মধ্যে সিরাজগঞ্জের চণ্ডিদাসগাতিতে পিকেটারদের হামলায় সলঙ্গার
যুবলীগকর্মী মাসুদ নিহত হন। বাকিরা সবাই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী।
বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার চন্ডিদাসগাতিতে ৩ দফায় ৬
জন জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মী নিহত হওয়ার পর থেকে মূলত ওই এলাকাগুলো সরকার
বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। স্বল্প পরিসরে প্রশাসন এসব এলাকায় অভিযান
চালাতে পারছে না। মাঝে মধ্যে র্যাব-পুলিশের বিশাল বহর নিয়ে অভিযান চালালেও
তা কোন কাজে আসছে না। প্রায়ই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এসব এলাকা।
সর্বশেষ সোমবার
জামায়াতের ডাকা হরতাল চলাকালে দুপুরে সদর উপজেলার বহুলী বাজারে পুলিশ ও
জামায়াতকর্মীদের সংঘর্ষে একই এলাকার নির্মাণ শ্রমিক আনোয়ার হোসেনের ছেলে ও
৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র সুমন (৯) নিহত হয়। এলাকাটি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিপুল
সংখ্যক পুলিশ অবস্থা বেগতিক দেখে এলাকা ত্যাগ করে নিরাপদে চলে যায়। এমন সময়
ওই বাজারের একটি সেলুনে গিয়ে আনোয়ার হোসেনকে চুল কাটাতে দেখা যায়।
কিছুক্ষণ আগে তার ছেলেও এখান থেকে চুল কাটিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিল।
সাংবাদিকের ক্যামেরায় তোলা মৃত শিশুটির ছবি দেখিয়ে তার পরিচয় জানতে চাওয়া
হলে আনোয়ার হোসেন চিৎকার দিয়ে বলে ওঠেন, ‘এ আমার ছেলে সুমন।’ এ সময় তার
আর্তচিৎকারে আশাপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
এলাকায় পুলিশ না থাকায়
বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা আবারও লাঠিসোটা নিয়ে বহুলী বাজারে জমায়েত হয়ে
বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় তারা এক পথচারীর মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ২
সাংবাদিককে বহনকারী একটি মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি বসতবাড়ি ভাঙচুর করে। হতাহতের
ঘটনায় দায়িত্ব পালনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী দলগুলোর
দাবি, কোন কারণ ছাড়াই পুলিশ বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করায় বারবার প্রাণহানির ঘটনা
ঘটছে।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার এস এম এমরান হোসেন জানান, কর্তব্যরত পুলিশের
উপর হামলা করলে পুলিশতো বসে থাকবে না। সোমবার বহুলীতে ককটেল নিক্ষেপ করে
সদর থানার সেকেন্ড অফিসার নুরুল ইসলামকে আহত করা হয়েছে। বিরোধী দলের
নেতাকর্মীরা বেপরোয়াভাবে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর বারবার আক্রমণ করায়
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটছে।
এদিকে, সিরাজগঞ্জ পুলিশ
সুপার এস এম এমরান হোসেন জানান, কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হামলা করলে পুলিশ তো
বসে থাকবে না। সোমবার বহুলীতে ককটেল নিক্ষেপ করে সদর থানার সেকেন্ড অফিসার
নুরুল ইসলামকে আহত করা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা বেপরোয়াভাবে
কর্তব্যরত পুলিশের ওপর বারবার আক্রমণ করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে
হতাহতের ঘটনা ঘটছে।