সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মেধাবী ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রুপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সিরাজগঞ্জে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠন।
শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে স্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্য নব কুমার কর্মকারের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি রাশেদ ইউসুফ জুয়েল, জেলা জুয়েলারি মালিক সমিতি ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু, সিরাজগঞ্জ প্রসুন থিয়েটারের সভাপতি অ্যাড. মাহবুব এ খোদা টুটুল, সামাজিক সংগঠক দীপা, শাহনেওয়াজ খান রাজন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের মামুনুর রশিদ মামুন, যুগ্ন সম্পাদক সালমান হক শিবলী, সিরাজগঞ্জ সাংস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ গৌড়, নাট্যলোকের আতাউল্লাহ খান রাজু ও সাংবাদিকরা।
এ সময় বক্তারা বলেন, দেশে যে হারে সহিংসতা বেড়ে গেছে তাতে নারীদের ঘরের বের হওয়াই দুষ্কর। নারীদের নিরাপত্তার জন্য পুরুষদেরই এগিয়ে আসতে হবে। নারীদের নিরাপত্তা দেবার দাযিত্ব সরকারের। কিন্তু বারবার দেশে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটলেই বিচার বিলম্বিত হবার কারণে অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। রুপা হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।
সিরাজগঞ্জে ১০টি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের আযোজনে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ আরো উপস্থিত ছিল সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি রাশেদ ইউসুফ জুয়েল, মোমিন হাসান, রাজু আহম্মেদ সহ প্রমুখ। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তা মোড়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর ময়মনসিংহ ঢাকা মহাসড়কের পঁচিশ মাইল এলাকার চলন্ত বাসে ধর্ষণ ও হত্যা করে রুপাকে সুমী নার্সারির নিকট রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায়। পরে অজ্ঞাত লাশ হিসাবে উদ্ধার করে রুপার ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ শনিবার বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইলের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে রুপার মরদেহ দাফন করেন।
ঘটনার তিন দিন পর গত সোমবার ছবি দেখে লাশ শনাক্ত করেন নিহতের বড় ভাই মো. হাফিজুর রহমান। এদিকে এ ঘটনায় রাতেই মধুপুর থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় ছোয়া বাসের চালক হেলপারসহ ৫ নরপশু ধর্ষক। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
পরে হত্যার ৬ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রুপার মরদেহ তার নিজ গ্রাম সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আসানবাড়ী আনা হয় এবং আসানবাড়ী জামে মসজিদ কবরস্থানে তার বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।