শহীদ এম মনসুর আলী ছিলেন এক জন খাঁটি বাঙ্গালী। এক জন খাঁটি দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব। সাধারন মানুষের প্রতি তাঁর ছিল অকৃত্রিম ভালোবাসা। এই মহান নেতার শততম জন্ম বার্ষিকী পালন এক ঐতিাসিক ঘটনা। ১৯৭৫-এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মতো আরো একজন শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারিয়েছে। রাজনীতির এ শূন্যতা পূরণ হবার নয়। শহীদ এম মনসুর আলীর শততম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল জনসমাবেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এসব কথা বলেছেন।
প্রধান বক্তা শহীদ এম মনসুর আলীর রাজনৈতিক উত্তরসুরী স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তাঁর পিতার প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের ভালবাসায় আবেগ আপ্লুত হয়ে গর্ববোধ করে বলেছেন- আমার শহীদ পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং দেশের সাথে বেঈমানী করেননি, তা তিনি জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন। শহীদ এম মনসুর আলীর কাজীপুর এখনও নৌকার ঘাটি। তার শহীদ পিতার জন্য তিনি গর্ববোধ করে বলেছেন “বাবার শেষ বারের মতো মুখটাও দেখতে পারিনি। তারপরও এই মহান ব্যাক্তির সন্তান হিসেবে আমি গর্বিত।
এর আগে শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু সহ কুড়িপাড়ায় শহীদ এম মনসুর আলীর ভিটে বাড়িতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন। প্রধান অতিথি শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু শহীদ এম মনসুর আলীর স্মৃাতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে ১৯৭৫ সালে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে কি নির্মমভাবে শহীদ এম মনসুর আলীসহ জাতীয় চার নেতা হত্যা করা হয়েছিল তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে দেন। তিনি আরো বলেছেন, বাংলার ইতিহাসে যে মহাপুরুষগণ তাদের অসামান্য কৃর্তিও জন্য অবিস্মরনীয় হয়ে রয়েছেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ ও সফল সংগঠক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর জাতীয় চার নেতার অন্যতম স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শহীদ এম মনসুর আলী ছিলেন। মনসুর আলীর সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সখ্যতা, অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস ছিল নজির বিহীন। এ জন্যই বঙ্গবন্ধু শহীদ এম মনসুর আলীকে দেশের প্রধান মন্ত্রীত্বসহ ১৬ টি মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাই জাতীয় নেতা, সাবেক প্রধান মন্ত্রী শহীদ এম মনসুর আলীর শততম জন্ম বার্ষিকী পালন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।
শহীদ এম মনসুর আলীর শততম জন্ম বার্ষিকীতে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় শহীদ মনসুর আলী কল্যাণ ট্রাষ্ট, মনসুর আলী স্মৃতি সংসদ, মনসুর আলী পরিষদ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ২দিন ব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এলাকার বিভিন্ন সড়ক সমূহে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, শহীদ এম মনসুর আলী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আমির হোসেন আমু এবং মোহাম্মদ নাসিমের ছবি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল রং বেরঙের তোরণ। কাজীপুরের ইউনিয়ন, গ্রাম থেকে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে উৎসবের আমেজে দলীয় নেতাকর্মীসহ মনসুর ভক্ত সাধারন মানুষ দলে দলে এসে জনসমাবেশে যোগ দেন। বিকেল তিনটার মধ্যেই গান্ধাইল হাই স্কুল মাঠ কানায কানায় বরে যায়। জনসমাবেশ যেন জনসমুদ্রে রুপ নেয়। সিরাজগঞ্জ সদরের কুড়িপাড়ায় শহীদ এম মনসুর আলীর জন্ম হলেও কাজীপুর তাঁর নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় জন্ম শত বার্ষিকীতে গোটা কাজীপুরের মানুষ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে তা পালন করেছেন। গোটা কাজীপুরেই ছিল উৎসবের আমেজে মূখর।
শহীদ মনসুর আলী স্মৃতি সংসদ আয়োজিত এ বিশাল জনসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংসদের আহবায়ক ও সিরাজগঞ্জ চেম্বার কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র প্রেসিডেন্ট আবু ইউসুফ সুর্য্য। জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, প্রধান বক্তা স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, গাজী আমজাদ হোসেন মিলন এমপি, বেগম লায়লা নাসিম সাবেক এমপি তানভীর শাকিল জয়, সেলিনা বেগম স্বপ্না এমপি, অ্যাডভোকেট কে,এম হোসেন আলী হাসান ও বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন প্রমুখ।