সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের উপ-নির্বাচনকে ঘিরে নড়েচড়ে বসেছে অত্র এলাকার রাজনৈতিক অঙ্গন। এ নিয়ে সম্প্রতি দৈনিক যমুনা প্রবাহ পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে হুদু চাচার এমপি হওয়ার ছড়া। নিম্নে এর ৭টি পর্ব তুলে ধরা হলো।
সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের এমপি হওয়ার ছড়া
---হুদু চাচা
ইসহাক এমপি মরেছে, খুবতো মজা হয়েছে
পাছার কাপড় মাথায় তুলে কেউ নাচতে শুরু করেছে।
ডজন দেড়েক প্রার্থী এখন মনোনয়নের করছে লবিং
পাতি শিয়াল, চুনোপুটি, গুদা চিংড়ি, ছিচকে ফড়িং
সবাই পাখা মেলেছে।
এদ্দিন এরা তলে তলে কিইনা খেলাই খেলেছে।
সবছিল তো ভেজা বিড়াল, ভাজা মাছটাও নাড়ে না।
যার দয়াতে শিখলো সাঁতার, এখন তার কাউরেও আর ছাড়ে না।
কে হবে তাই এমপি এখন, দিবা স্বপ্নে রয় বিভোর
প্রেস রিলিজের চলছে ঘটা, ঢালছে কড়ি সব ভূঁইফোর।
পাড়ার লোকই চেনেনা যারে, এমন লোকও প্রার্থী এবার
এমপি হয়ে বাজাবে বারো, করবে দলের কম্ম-কাবার।
আর কিছু এদের নাইবা থাকুক, যোগ্যতা তো আছে টাকায়
জোচ্চুরি আর কালোবাজারি, সুদ, দালালির-কমিশন ভারি,
সব মিলিয়ে পাহাড় সমান সম্পদ আর কেনা সম্মান
ব্যবসা ভারি আলীসান বাড়ি, গৈ-গেরাম আর শহর ঢাকায়।
তাই এদেরে এমপি হতে, কার বাপের ক্ষ্যাম এবার ঠেকায়।
লাগেনা আর দেশভক্ত, ভাল রক্ত, আর উচ্চশিক্ষা
নেতা হতে লাগে টাকা ও লাঠি, তাই এখন সৎ রাজনীতি মাটি
হীনেরা দিচ্ছে হায় রঙ্গিন দীক্ষা।
সত্যকথা একারণে আজ কইতে মানা
কে বুঝবে, আর দাম কে দেবে, বড় পাগলেরা জেনে অজানা।
কৃতজ্ঞতাবোধ, মায়া- মমতা ছাড়াই এখন নিউ পলিট্রিক্স
‘উন্নয়ন- টিকা’ জনতার কপালে এরাই এখন করবে ফিক্স।
সারাদেশের খবর জানিনা-কী হচ্ছে তার খবরও রাখিনা।
এইটুকু জানি-আহা সিরাজগঞ্জ-তিন
নিয়ে নাচছে এমপি প্রার্থীরা তা ধিন ধিন।
এমপি হতে কী যোগ্যতা লাগে তাও জানে না অনেকেই
ভাবছে তারা এটা পুতুল খেলা, সাঙ্গ হবে এমনিতেই।
ভাতিজীরে বলি-দল বাাঁচাও আর দেশ বাঁচাও
যুগ যুগ যে দলকে দিল, দেশকে দিল-
তার দিকে চেয়ে এলাকা বাঁচাও:
দেশ বাঁচাতে দল বাাঁচাতে সৎ লোককে মনোনয়ন দাও।
সিরাজগঞ্জ-৩ নিয়ে তিন সত্যি করে বলে যাই আজ সবার মাঝে
নায়ে নয়া মাঝি তারেই সাজে যে হেলপার হয়েছে সকাল-সাঁঝে।
নতুবা ডুববে এই প্রাচীন নাও
বাচবে না কেউ বাঁচবে না গাঁও।
আমি হুদু, বুড়ো যুদু বুদু, করে দিবেন ক্ষমা-
সুযোগ পেলে আমিও মনোনয়নপত্র দিতে পারি জমা।
(২)
সিরাজগঞ্জ-৩ আসন শূন্য
কতদিনের পুণ্য
করেছিলাম আমরা
এবার রাস্তা পরিস্কার
এমপি হওয়া সহজ ব্যাপার
মনোনয়নও পাক্কা
আছে টাকা-কাক্কা
শুধু একটু ধাক্কা
পেলেই রাস্তা ফাঁক্কা।
নইলে হবো স্বতন্ত্র
জানি সে সব মন্ত্র
নাইকো এবার কোনো ছাড়
গুরু ভবে নাইকো আর
কিসের তাহার পরিবার
নিজের আখের আগে চিনি
তারপরেতে দলকে জিনি।
সবাই বলে এমপি হলে
পড়বো আমি ফেরে
হুদু আমি লেখা পড়ায়
মাথা আমার ঘোরে
ক্যামন করে পড়বো অত
ইং বং সব লেখা
জানে না ওরা রাখবো পিএস
পিএসডি পাশ ছেলে
যে বুঝাবে সকল কাগজ
ইজি হেসে খেলে
যার কাছে মোর এক নিমিষেই
হয়ে যাবে সব শেখা।
কেউ বলে হুদু, তুমি তো আর
বোঝোনা রাজনীতি
ক্যামন করে চালাবে সংসদ
ক্যামনে হবে উন্নতি।
জানেনা ওরা, আমি এমপি হলে
পরে ওরাই হবে হুদু
আমি তখন পরাণ ভরে
মজা লুটবো শুধু।
রাজনীতি মোর দরকার নেই
করবো ভাগাভাগি
বেছে বেছে হাতে রাখবো
যারা সন্ত্রাসীতে দাগি।
পাবলিক তখন ক্যামন হুদু হবে
এবার ভাবো
আমি তখন রাজবাহারী
জীবন বেছে নেবো।
এই ভরসায় নেমেছি মাঠে
টাকা ছড়াচ্ছি হাটে-ঘাটে
সবাই দিবে ভোট
শুধু গিন্নি আমার বিট্রে করে
বেঁধেছে পৃথক জোট।
কথাটি আমি রেখেছি এখনো
কষ্ট করে গোপন
জানতে পারলে ভোটাররা আমার
ঘুঁচিয়ে দিবে এমপি হওয়ার স্বপন।
(৩)
দিনে দিনে যাচ্ছে সময়
বাড়ছে প্রার্থী এমপি হওয়ার
চলছে হিড়িক কোলাকুলির
আদাব ছালাম গলাগলি
গলার ঘাম আর বুকের ঘাম
লাগিয়ে জামা করছে লোপাট।
লবিং গ্র“পিং করার সাথে
কেউ খুলেছে টাকার কপাট।
কেউবা তুলছে তোলা-চাঁদা
কেউবা সুদে করছে ধার
মনোনয়ন নিতে কেউ
মানছে নাকো এবার হার।
প্রবীন দল আর নবীন দল
ছাও দলেরও কর্মী যত
ভাবছে লবিং করলে পড়েই
মনোনয়ন অবধারিত।
তিন দিনেরই কর্মী যারা
তারাই যদি ভাবে এমন
সারা জীবন যে দেশকে দিল
তবে, তাহার জন্য বিধান কেমন ?
জীবনবাজি রেখে যেজন
দেশ স্বাধীন করে আনলো সুখ
নাইকো সেজন মোদের মাঝে
তবুও তার নানান কাজে
কৃতজ্ঞতায় দেখো সে মুখ।
তাহার যোগ্য মাঠের সাথী
রক্তমাংসে যার রাজনীতি
তারপরেও সে প্রিয় সবার
তার যোগ্যতা কী কম এমপি হবার।
যোগ্য তাহার পুত্র বটে
হাটে মাঠে তার সুনাম রটে
জনদরদী স্বভাব কোমল
শিক্ষিত সৎ অতি পরিমল।
তার তরে যদি কাজ করো ভাই
তবেই খুশি হবে বিধাতা
নইলে হবে অনাসৃষ্টি
হবে ভারি বেঈমানীর খাতা।
জনতার কাছে ঘৃণিত হবে
ভাতিজীর কাছে রেকর্ড রবে।
এমন কান্ড করে দু’একজন
পচে গেছে আজ দলের কাছে
ফিউচার তাদের ঘোলাটে বড়
তারপর আরো গান তো আছে...।
(৪)
বসন্তেরই কোকিল এখন সিরাজগঞ্জের -৩ আসনে
কুহু ডাকে তারা মাতিয়ে বেজায় চলছে মাঠ ময়দানে।
বর্ষাকালের অকালে আর যায়না পাওয়া এদের দেখা
তাইতো মাঠে ঘুরছে এরা জনতাহীন একা একা।
কোকিল কুলের কেউ মাঝে মধ্যে গ্রামে থাকেন দু’এক রাত
ঈদ ও পুজা নানা পাবনে করে থাকেন দান খয়রাত।
নগদ কিছু পাওয়ার আশায় লোকজন তাই ভিড় যে করে
তাতেই খুশি ঐ নেতারা, তার জনপ্রিয়তা মনে করে।
টাকার লোভে ভূয়া কিছু লোক ঘুরছে এদের পিছে দেখি
তারা তাদের সমর্থক নয় বুঝবে শেষে আসল মেকি।
এসব নেতা থাকেন বেহুশ জেলা, বিভাগ আর শহর ঢাকায়
রাজনীতি আর আদর্শ না থাক আছেন বড় বিপুল টাকায়।
ইসহাক মরে ফিরেছে হুশ, এমপি হওয়ার সখ জেগেছে।
টাকার জোরেই এমপি হবে, তবে মহা ভুল ভেবেছে।
কেউ বলছে হাই চ্যানেলে মনোনয়ন পাবেই এবার
এমন ভুল করলে ‘ভাতিজী’ দলের হবে কম্ম-কাবার।
জীবনবাজি রেখে যবে দেশ-স্বাধীনের মরণপণে
ঝাঁপিয়ে পড়ে পাক-বাহিনীর সঙ্গে লড়েন রণাঙ্গনে
বঙ্গবন্ধুর সেই সৈনিক ইসহাক ছিলেন সৎ আদর্শ নেতা
তার স্থলেতে এসব কোকিল নয় তো কভূ যোগ্য যথা।
ইসহাক ছিলেন মাটির মানুষ, আম জনতার প্রিয় ভাজন
তার স্থানেতে ‘সিজোনাল নেতা’ পাবেনা কভূ মনোনয়ন।
উপযুক্ত পুত্র তাহার আছেন মাঠে জনতার পাশে
মনোনয়ন সেই তো পাবে, জনতা আছে আশার আশে।
(৫)
এখনো শোকার্ত এমপির যত ভক্তÑস্বজন
আগে করো তাদের যতন, তবেই খুশি হবে জনগণ
খোদাও খুশি হবেন দেখে
কৃতজ্ঞতার পরিধি মেপে।
সে খবরে হবে ভাতিজী খুশি, তাতেই সবার কল্যাণ আছে
না হলে তো দেখেবে শেষে চেয়ার খানি সরে গেছে।
নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে যে দেশ দলের সেবা করে
সেইতো রবে চিরস্থায়ী, নেতার পদে, গণ-অন্তরে।
মনে সবার থাকার কথা, দুই হাজার একের নির্বাচনে
কি হয়েছিল মনোনয়নে।
ইসহাকের স্থলে এক বড় নেতা নিয়ে এলেন মনোনয়ন
ইসহাক কোন কইলনা কথা
হাসি মুখে ইসহাক ঘুরলো সেই নেতার সাথে
দোরে দোরে ভোট ভিক্ষায়
তাতেই তার বাড়লো মান
আরো বিশ্বাসীর পাইলো স্থান।
ভাতিজীর হৃদয়ে রইল গাঁথা।
তারপরেতে কত কথা, সদর আর সংগোপনে
হলো গত মনোনয়নে।
ইসহ্কা বিনে কেউ পেলনা দিবারাত্র যুদ্ধ করে।
ভাতিজী তারেই দিল সিগন্যাল দীর্ঘদিনের ভরসা করে।
সেই সনদ আজো অটুট আছে, দলের খাতায়Ñ ইতিহাসে
এরই ধারায় তার যোগ্য সুরির মনোনয়ন হবে অনায়াসে।
এটা না জেনে যারা যতই করবে হোথায় লবিং গ্র“পিং
ভবিষ্যতে তাদের রাজনীতি নিচের দিকে হবে জাম্পিং।
সারাদেশেতে যা হয়েছে, যেভাবে যা অন্য আসনে
উপ-নির্বাচনের মনোনয়নে এখানেও তার হবে না ত্র“টি
ভাতিজী দেখবেনা কারো ভ্রুকুটি
বঙ্গবন্ধুর সেনা যারা মানবে তারা এই ধারা
মানবে না যে পড়বে খাদে
চলবে দল তাকে বাদে
তাই তো সময় আছে এখনো ঢের
সঠিক পথে চাচাজীরা শিঘ্র তোরা ফের।
(৬)
নির্বাচনকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জ -৩ আসনে প্রার্থীরা সব প্রচারণায়, ব্যস্ত ভোটার সম্মোহনে:
গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় সাঁটছে নানা পোস্টার ব্যানার
গাঁয়ের চাষাভূষা লোকও পাচ্ছে এখন ভিষণ অনার।
মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ছাড়ছে নানা আজব বুলি
হ্যান করেঙ্গা, ত্যান করেঙ্গা, ভরা বস্তার ফাঁকা গুলি।
সবাই এখন দামী নেতা, কেন্দ্রে ভাল দখল আছে
অথচ, অনেকের নাম গন্ধের লেশ নেইকো ‘ভাতিজী’র কাছে।
দলে দলে মিডিয়ার সাথে করছেন সভা প্রার্থীরা সব
নিজের ঢাক নিজে বাজিয়ে করছে জাহির স্বগৌরব।
ঝুলিতে কিছু থাক বা না থাক মুখে রাজনীতির তুবড়ি ওড়ে
কত কিই না করে তারা দেশ দিয়েছে উদ্ধার করে।
আক্ষেপ করে বলে অনেকে- ‘ছিয়াশি থেকে থেকে দুই হাজার চৌদ্দ
এমপি ইসহাকের জন্য পাইনি, ফুর্তি করার কোনো বরাদ্দ’।
স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, মসজিদ, গীর্জা, মন্দির যত
রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার চাকচিক্যে করেছে বাহার
অথচ আমরা কর্মী তাহার ভূখা রয়েছি অবিরত।
এবার মহা সুযোগ এসেছে, খাই খাইরা জোট বাঁধবে
মনোনয়ন পেলেই ...হয়ে এমপি, কোষাগার ‘এমটি’ করে ছাড়বে।
কী যে মজা হবে খাওয়ার
সেলামী-নজরানা পাওয়ার।
দিন গুনছে প্রার্থী সবাই উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের
কবে হবে তপশীল ঘোষণা, হবে ব্যবস্থা মনোনয়নের...।
ভাতিজীকে ভুলাতে জোর তদ্বির চালানো হচ্ছে রাজধানী চষে
যদি মনোনয়ন যায়গো কেনা ! দেখছে কঠিন হিসাব কষে।
এজন্য ঢাকার নেতাদের বাসায় এখন প্রার্থীর বেজায় ভিড়
খাবি খাচ্ছে ছুটাছুটি করে, পাচ্ছেনা তারা খুঁজে কোন তীর।
ভারে দাবছে নেতাদের বাড়ি মোজাইক নষ্ট জুতা-ঘর্ষণে
নেতাদের পা চিপ্চিপে ভেজা লাগাতার সরিষার তেল মর্দনে।
এতই পিছল হয়ে গেছে পা, কখন যে ফস্কে যাবে দুই হাত
তবে তো আম ছালাও গেল খাই খাই এমপি হওয়া বরবাদ...।
(৭)
দলের ছিলাম ছোট্ট কর্মী
নিভৃত এক পল্লী গ্রামে
এখন আমি বিশাল নেতা
সবাই চেনে এক নামে।
রূপ চেহারা আছে ভাল
টাকা কড়ির অভাব নাই
যে কোন দামে নেবো সংঙ্কেত
এমপি এবার হওয়াই চাই।
অকালেতে ইসহাক মরে
কপাল বুঝি ফেরে এবার.....
সেই সারিতে আছে যত
পিছন সারির নেতার হাতা
জনতা বলে যতই বাড়ো
করো যতই লম্ফ ঝম্প
ভোট তো দেবো তার বাক্সেই
যে রক্তে মোদের আছে বিশ্বাস
তাই আমরা করছি আশা
থাকতে দেহে শেষ নিঃশ্বাস।
এই বিশ্বাসে জনমনে
আছেন জেগে ইমনভাই
উচ্চশিক্ষা সৎ বংশ
ভাল কাজে তার জুড়ি নাই।
এলাকাবাসী বুক বেঁধেছে
মনোনয়ন পাবেন ইমনভাই
দলাদলি থাকবেনা তাতে
এলাকা হবে রোশনাই।
সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের এমপি হওয়ার ছড়া
---হুদু চাচা
ইসহাক এমপি মরেছে, খুবতো মজা হয়েছে
পাছার কাপড় মাথায় তুলে কেউ নাচতে শুরু করেছে।
ডজন দেড়েক প্রার্থী এখন মনোনয়নের করছে লবিং
পাতি শিয়াল, চুনোপুটি, গুদা চিংড়ি, ছিচকে ফড়িং
সবাই পাখা মেলেছে।
এদ্দিন এরা তলে তলে কিইনা খেলাই খেলেছে।
সবছিল তো ভেজা বিড়াল, ভাজা মাছটাও নাড়ে না।
যার দয়াতে শিখলো সাঁতার, এখন তার কাউরেও আর ছাড়ে না।
কে হবে তাই এমপি এখন, দিবা স্বপ্নে রয় বিভোর
প্রেস রিলিজের চলছে ঘটা, ঢালছে কড়ি সব ভূঁইফোর।
পাড়ার লোকই চেনেনা যারে, এমন লোকও প্রার্থী এবার
এমপি হয়ে বাজাবে বারো, করবে দলের কম্ম-কাবার।
আর কিছু এদের নাইবা থাকুক, যোগ্যতা তো আছে টাকায়
জোচ্চুরি আর কালোবাজারি, সুদ, দালালির-কমিশন ভারি,
সব মিলিয়ে পাহাড় সমান সম্পদ আর কেনা সম্মান
ব্যবসা ভারি আলীসান বাড়ি, গৈ-গেরাম আর শহর ঢাকায়।
তাই এদেরে এমপি হতে, কার বাপের ক্ষ্যাম এবার ঠেকায়।
লাগেনা আর দেশভক্ত, ভাল রক্ত, আর উচ্চশিক্ষা
নেতা হতে লাগে টাকা ও লাঠি, তাই এখন সৎ রাজনীতি মাটি
হীনেরা দিচ্ছে হায় রঙ্গিন দীক্ষা।
সত্যকথা একারণে আজ কইতে মানা
কে বুঝবে, আর দাম কে দেবে, বড় পাগলেরা জেনে অজানা।
কৃতজ্ঞতাবোধ, মায়া- মমতা ছাড়াই এখন নিউ পলিট্রিক্স
‘উন্নয়ন- টিকা’ জনতার কপালে এরাই এখন করবে ফিক্স।
সারাদেশের খবর জানিনা-কী হচ্ছে তার খবরও রাখিনা।
এইটুকু জানি-আহা সিরাজগঞ্জ-তিন
নিয়ে নাচছে এমপি প্রার্থীরা তা ধিন ধিন।
এমপি হতে কী যোগ্যতা লাগে তাও জানে না অনেকেই
ভাবছে তারা এটা পুতুল খেলা, সাঙ্গ হবে এমনিতেই।
ভাতিজীরে বলি-দল বাাঁচাও আর দেশ বাঁচাও
যুগ যুগ যে দলকে দিল, দেশকে দিল-
তার দিকে চেয়ে এলাকা বাঁচাও:
দেশ বাঁচাতে দল বাাঁচাতে সৎ লোককে মনোনয়ন দাও।
সিরাজগঞ্জ-৩ নিয়ে তিন সত্যি করে বলে যাই আজ সবার মাঝে
নায়ে নয়া মাঝি তারেই সাজে যে হেলপার হয়েছে সকাল-সাঁঝে।
নতুবা ডুববে এই প্রাচীন নাও
বাচবে না কেউ বাঁচবে না গাঁও।
আমি হুদু, বুড়ো যুদু বুদু, করে দিবেন ক্ষমা-
সুযোগ পেলে আমিও মনোনয়নপত্র দিতে পারি জমা।
(২)
সিরাজগঞ্জ-৩ আসন শূন্য
কতদিনের পুণ্য
করেছিলাম আমরা
এবার রাস্তা পরিস্কার
এমপি হওয়া সহজ ব্যাপার
মনোনয়নও পাক্কা
আছে টাকা-কাক্কা
শুধু একটু ধাক্কা
পেলেই রাস্তা ফাঁক্কা।
নইলে হবো স্বতন্ত্র
জানি সে সব মন্ত্র
নাইকো এবার কোনো ছাড়
গুরু ভবে নাইকো আর
কিসের তাহার পরিবার
নিজের আখের আগে চিনি
তারপরেতে দলকে জিনি।
সবাই বলে এমপি হলে
পড়বো আমি ফেরে
হুদু আমি লেখা পড়ায়
মাথা আমার ঘোরে
ক্যামন করে পড়বো অত
ইং বং সব লেখা
জানে না ওরা রাখবো পিএস
পিএসডি পাশ ছেলে
যে বুঝাবে সকল কাগজ
ইজি হেসে খেলে
যার কাছে মোর এক নিমিষেই
হয়ে যাবে সব শেখা।
কেউ বলে হুদু, তুমি তো আর
বোঝোনা রাজনীতি
ক্যামন করে চালাবে সংসদ
ক্যামনে হবে উন্নতি।
জানেনা ওরা, আমি এমপি হলে
পরে ওরাই হবে হুদু
আমি তখন পরাণ ভরে
মজা লুটবো শুধু।
রাজনীতি মোর দরকার নেই
করবো ভাগাভাগি
বেছে বেছে হাতে রাখবো
যারা সন্ত্রাসীতে দাগি।
পাবলিক তখন ক্যামন হুদু হবে
এবার ভাবো
আমি তখন রাজবাহারী
জীবন বেছে নেবো।
এই ভরসায় নেমেছি মাঠে
টাকা ছড়াচ্ছি হাটে-ঘাটে
সবাই দিবে ভোট
শুধু গিন্নি আমার বিট্রে করে
বেঁধেছে পৃথক জোট।
কথাটি আমি রেখেছি এখনো
কষ্ট করে গোপন
জানতে পারলে ভোটাররা আমার
ঘুঁচিয়ে দিবে এমপি হওয়ার স্বপন।
(৩)
দিনে দিনে যাচ্ছে সময়
বাড়ছে প্রার্থী এমপি হওয়ার
চলছে হিড়িক কোলাকুলির
আদাব ছালাম গলাগলি
গলার ঘাম আর বুকের ঘাম
লাগিয়ে জামা করছে লোপাট।
লবিং গ্র“পিং করার সাথে
কেউ খুলেছে টাকার কপাট।
কেউবা তুলছে তোলা-চাঁদা
কেউবা সুদে করছে ধার
মনোনয়ন নিতে কেউ
মানছে নাকো এবার হার।
প্রবীন দল আর নবীন দল
ছাও দলেরও কর্মী যত
ভাবছে লবিং করলে পড়েই
মনোনয়ন অবধারিত।
তিন দিনেরই কর্মী যারা
তারাই যদি ভাবে এমন
সারা জীবন যে দেশকে দিল
তবে, তাহার জন্য বিধান কেমন ?
জীবনবাজি রেখে যেজন
দেশ স্বাধীন করে আনলো সুখ
নাইকো সেজন মোদের মাঝে
তবুও তার নানান কাজে
কৃতজ্ঞতায় দেখো সে মুখ।
তাহার যোগ্য মাঠের সাথী
রক্তমাংসে যার রাজনীতি
তারপরেও সে প্রিয় সবার
তার যোগ্যতা কী কম এমপি হবার।
যোগ্য তাহার পুত্র বটে
হাটে মাঠে তার সুনাম রটে
জনদরদী স্বভাব কোমল
শিক্ষিত সৎ অতি পরিমল।
তার তরে যদি কাজ করো ভাই
তবেই খুশি হবে বিধাতা
নইলে হবে অনাসৃষ্টি
হবে ভারি বেঈমানীর খাতা।
জনতার কাছে ঘৃণিত হবে
ভাতিজীর কাছে রেকর্ড রবে।
এমন কান্ড করে দু’একজন
পচে গেছে আজ দলের কাছে
ফিউচার তাদের ঘোলাটে বড়
তারপর আরো গান তো আছে...।
(৪)
বসন্তেরই কোকিল এখন সিরাজগঞ্জের -৩ আসনে
কুহু ডাকে তারা মাতিয়ে বেজায় চলছে মাঠ ময়দানে।
বর্ষাকালের অকালে আর যায়না পাওয়া এদের দেখা
তাইতো মাঠে ঘুরছে এরা জনতাহীন একা একা।
কোকিল কুলের কেউ মাঝে মধ্যে গ্রামে থাকেন দু’এক রাত
ঈদ ও পুজা নানা পাবনে করে থাকেন দান খয়রাত।
নগদ কিছু পাওয়ার আশায় লোকজন তাই ভিড় যে করে
তাতেই খুশি ঐ নেতারা, তার জনপ্রিয়তা মনে করে।
টাকার লোভে ভূয়া কিছু লোক ঘুরছে এদের পিছে দেখি
তারা তাদের সমর্থক নয় বুঝবে শেষে আসল মেকি।
এসব নেতা থাকেন বেহুশ জেলা, বিভাগ আর শহর ঢাকায়
রাজনীতি আর আদর্শ না থাক আছেন বড় বিপুল টাকায়।
ইসহাক মরে ফিরেছে হুশ, এমপি হওয়ার সখ জেগেছে।
টাকার জোরেই এমপি হবে, তবে মহা ভুল ভেবেছে।
কেউ বলছে হাই চ্যানেলে মনোনয়ন পাবেই এবার
এমন ভুল করলে ‘ভাতিজী’ দলের হবে কম্ম-কাবার।
জীবনবাজি রেখে যবে দেশ-স্বাধীনের মরণপণে
ঝাঁপিয়ে পড়ে পাক-বাহিনীর সঙ্গে লড়েন রণাঙ্গনে
বঙ্গবন্ধুর সেই সৈনিক ইসহাক ছিলেন সৎ আদর্শ নেতা
তার স্থলেতে এসব কোকিল নয় তো কভূ যোগ্য যথা।
ইসহাক ছিলেন মাটির মানুষ, আম জনতার প্রিয় ভাজন
তার স্থানেতে ‘সিজোনাল নেতা’ পাবেনা কভূ মনোনয়ন।
উপযুক্ত পুত্র তাহার আছেন মাঠে জনতার পাশে
মনোনয়ন সেই তো পাবে, জনতা আছে আশার আশে।
(৫)
এখনো শোকার্ত এমপির যত ভক্তÑস্বজন
আগে করো তাদের যতন, তবেই খুশি হবে জনগণ
খোদাও খুশি হবেন দেখে
কৃতজ্ঞতার পরিধি মেপে।
সে খবরে হবে ভাতিজী খুশি, তাতেই সবার কল্যাণ আছে
না হলে তো দেখেবে শেষে চেয়ার খানি সরে গেছে।
নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে যে দেশ দলের সেবা করে
সেইতো রবে চিরস্থায়ী, নেতার পদে, গণ-অন্তরে।
মনে সবার থাকার কথা, দুই হাজার একের নির্বাচনে
কি হয়েছিল মনোনয়নে।
ইসহাকের স্থলে এক বড় নেতা নিয়ে এলেন মনোনয়ন
ইসহাক কোন কইলনা কথা
হাসি মুখে ইসহাক ঘুরলো সেই নেতার সাথে
দোরে দোরে ভোট ভিক্ষায়
তাতেই তার বাড়লো মান
আরো বিশ্বাসীর পাইলো স্থান।
ভাতিজীর হৃদয়ে রইল গাঁথা।
তারপরেতে কত কথা, সদর আর সংগোপনে
হলো গত মনোনয়নে।
ইসহ্কা বিনে কেউ পেলনা দিবারাত্র যুদ্ধ করে।
ভাতিজী তারেই দিল সিগন্যাল দীর্ঘদিনের ভরসা করে।
সেই সনদ আজো অটুট আছে, দলের খাতায়Ñ ইতিহাসে
এরই ধারায় তার যোগ্য সুরির মনোনয়ন হবে অনায়াসে।
এটা না জেনে যারা যতই করবে হোথায় লবিং গ্র“পিং
ভবিষ্যতে তাদের রাজনীতি নিচের দিকে হবে জাম্পিং।
সারাদেশেতে যা হয়েছে, যেভাবে যা অন্য আসনে
উপ-নির্বাচনের মনোনয়নে এখানেও তার হবে না ত্র“টি
ভাতিজী দেখবেনা কারো ভ্রুকুটি
বঙ্গবন্ধুর সেনা যারা মানবে তারা এই ধারা
মানবে না যে পড়বে খাদে
চলবে দল তাকে বাদে
তাই তো সময় আছে এখনো ঢের
সঠিক পথে চাচাজীরা শিঘ্র তোরা ফের।
(৬)
নির্বাচনকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জ -৩ আসনে প্রার্থীরা সব প্রচারণায়, ব্যস্ত ভোটার সম্মোহনে:
গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় সাঁটছে নানা পোস্টার ব্যানার
গাঁয়ের চাষাভূষা লোকও পাচ্ছে এখন ভিষণ অনার।
মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ছাড়ছে নানা আজব বুলি
হ্যান করেঙ্গা, ত্যান করেঙ্গা, ভরা বস্তার ফাঁকা গুলি।
সবাই এখন দামী নেতা, কেন্দ্রে ভাল দখল আছে
অথচ, অনেকের নাম গন্ধের লেশ নেইকো ‘ভাতিজী’র কাছে।
দলে দলে মিডিয়ার সাথে করছেন সভা প্রার্থীরা সব
নিজের ঢাক নিজে বাজিয়ে করছে জাহির স্বগৌরব।
ঝুলিতে কিছু থাক বা না থাক মুখে রাজনীতির তুবড়ি ওড়ে
কত কিই না করে তারা দেশ দিয়েছে উদ্ধার করে।
আক্ষেপ করে বলে অনেকে- ‘ছিয়াশি থেকে থেকে দুই হাজার চৌদ্দ
এমপি ইসহাকের জন্য পাইনি, ফুর্তি করার কোনো বরাদ্দ’।
স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, মসজিদ, গীর্জা, মন্দির যত
রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার চাকচিক্যে করেছে বাহার
অথচ আমরা কর্মী তাহার ভূখা রয়েছি অবিরত।
এবার মহা সুযোগ এসেছে, খাই খাইরা জোট বাঁধবে
মনোনয়ন পেলেই ...হয়ে এমপি, কোষাগার ‘এমটি’ করে ছাড়বে।
কী যে মজা হবে খাওয়ার
সেলামী-নজরানা পাওয়ার।
দিন গুনছে প্রার্থী সবাই উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের
কবে হবে তপশীল ঘোষণা, হবে ব্যবস্থা মনোনয়নের...।
ভাতিজীকে ভুলাতে জোর তদ্বির চালানো হচ্ছে রাজধানী চষে
যদি মনোনয়ন যায়গো কেনা ! দেখছে কঠিন হিসাব কষে।
এজন্য ঢাকার নেতাদের বাসায় এখন প্রার্থীর বেজায় ভিড়
খাবি খাচ্ছে ছুটাছুটি করে, পাচ্ছেনা তারা খুঁজে কোন তীর।
ভারে দাবছে নেতাদের বাড়ি মোজাইক নষ্ট জুতা-ঘর্ষণে
নেতাদের পা চিপ্চিপে ভেজা লাগাতার সরিষার তেল মর্দনে।
এতই পিছল হয়ে গেছে পা, কখন যে ফস্কে যাবে দুই হাত
তবে তো আম ছালাও গেল খাই খাই এমপি হওয়া বরবাদ...।
(৭)
দলের ছিলাম ছোট্ট কর্মী
নিভৃত এক পল্লী গ্রামে
এখন আমি বিশাল নেতা
সবাই চেনে এক নামে।
রূপ চেহারা আছে ভাল
টাকা কড়ির অভাব নাই
যে কোন দামে নেবো সংঙ্কেত
এমপি এবার হওয়াই চাই।
অকালেতে ইসহাক মরে
কপাল বুঝি ফেরে এবার.....
সেই সারিতে আছে যত
পিছন সারির নেতার হাতা
জনতা বলে যতই বাড়ো
করো যতই লম্ফ ঝম্প
ভোট তো দেবো তার বাক্সেই
যে রক্তে মোদের আছে বিশ্বাস
তাই আমরা করছি আশা
থাকতে দেহে শেষ নিঃশ্বাস।
এই বিশ্বাসে জনমনে
আছেন জেগে ইমনভাই
উচ্চশিক্ষা সৎ বংশ
ভাল কাজে তার জুড়ি নাই।
এলাকাবাসী বুক বেঁধেছে
মনোনয়ন পাবেন ইমনভাই
দলাদলি থাকবেনা তাতে
এলাকা হবে রোশনাই।