বৃহস্পতিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

চলমান আন্দোলন কর্মসূচি এখন মিডিয়ানির্ভর

সিরাজগঞ্জ জেলায় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের চলমান আন্দোলন কর্মসূচি এখন মিডিয়ানির্ভর হয়ে পড়েছে। মাঠে-ময়দানে এসব দলের নেতাকর্মীদের দেখা না মিললেও জেলার যেকোনো স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ও চোরাগোপ্তা হামলা হলেই মিডিয়াকর্মীদের কাছে ফোন চলে আসছে। দলের পক্ষ থেকে ওই সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের জন্য অনেক সময় পীড়াপীড়িও করা হচ্ছে।

প্রশাসনের কড়া নজরদারির কারণে দীর্ঘ এক মাস ধরে চলা অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি চলাকালে জেলায় তেমন বড় ধরনের নাশকতা হয়নি। এই সময়ে মহাসড়কে তিনটি ট্রাকে অগ্নিসংযোগ এবং শহরের রামগাতিতে একটি অটোরিকশায় পেট্রলবোমায় এক পান ব্যবসায়ী গনেশ দাস নিহতের ঘটনা ঘটেছে।

আন্দোলনের শুরুতে ২০ দল জেলা ও উপজেলা সদরগুলোতে ঝটিকা মিছিল ও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটালেও ক্রমশ তারা শহরতলী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। জেলার সিরাজগঞ্জ সদর, উল্লাপাড়া ও বেলকুচি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এদের কিছু কিছু কার্যক্রম চোখে পড়লেও ৯ উপজেলার মধ্যে বাকিগুলোতে এদের কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে।

জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দীর্ঘদিন ধরে মাঠে না থাকায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে বলে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করেছেন। আবার দলের নেতাকর্মীরা মামলার কারণে গা-ঢাকা দিয়ে থাকার কারণেও এমনটি হচ্ছে বলে কেউ কেউ দাবি করেছেন।

এ অবস্থায় জেলার কোথাও তুচ্ছ কোনো ঘটনা ঘটালেও সেটি মিডিয়ায় প্রচারের মাধ্যমে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়ার জন্য গুটিকয়েক নেতাকর্মী মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। সেটি মিডিয়ায় প্রচার না হলেও চলে নানা তদবির ও পীড়াপীড়ি। এ অবস্থায় ঘটনার সত্যতা জানতে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে ফোন করলেও অনেক সময় মিডিয়াকর্মীদের বিব্রত অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।

এ সব বিষয়ে জানতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিএনপি এবং জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোনে বৃহস্পতিবার বারবার চেষ্টা করেও অনেকের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। আবার যাদের ফোন খোলা ছিল তারা বর্তমান প্রেক্ষাপটের কথা বিবেচনায় বক্তব্য দিতেও রাজি হননি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, শীর্ষ নেতারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উৎসাহ হারিয়ে ফেলায় তারাও মাঠে নামতে সাহস পাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী আজিজুর রহমান দুলাল ঢাকাটাইমসকে জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রতিটি নেতা ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মীদের নামে একাধিক মামলা থাকায় দল পরিচালনায় অনেকটা কৌশলী হতে হচ্ছে। অনেকে আত্মগোপনে থেকে দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে মাঠে নেতাকর্মীদের দেখা যাচ্ছে না।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার এস,এম এমরান হোসেন ঢাকাটাইমসকে জানান, পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করাও হত্যাকাণ্ড। যারা আত্মগোপনে থেকে নির্দেশনা দিয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তাদের বিষয়ও নজরদারিতে রয়েছে। অপরাধ করে কেউ রক্ষা পাবে না। আইনের আওতায় তাকে আসতেই হবে। নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করে যদি কাউকে মামলায় পড়ে পালিয়ে থাকতে হয় এর জন্য তারাই দায়ী।   

সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।