সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৩

নির্বাচনকালীন সরকারের সময়েই ১৩টি নতুন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন পেতে যাচ্ছে

নির্বাচনকালীন সরকারের সময়েই ১৩টি নতুন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন পেতে যাচ্ছে, যাদের মালিক ও সুপারিশকারীদের মধ্যে একজন মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন উপদেষ্টা ও কয়েকজন সাংসদ এবং বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধানের ছেলেও রয়েছেন। Print Friendly and PDF 3 14 1308 এর আগে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই ১৮টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অনুমোদন পেয়েছে। নতুন ১৩টি লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যসচিব মরতুজা আহমেদ বিষয়টি অস্বীকার করেননি। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে পরে কথা বলা যাবে।” নতুন টেলিভিশন লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। পরে ফোন করতে বললেও এই প্রতিবেদকের ফোন তিনি আর ধরেননি। তবে তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “১৩টি বেসরকারি টেলিভিশনকে লাইসেন্স দেয়ার বিষয়টি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।” এ বিষয়ে তথ্য সচিবের দপ্তর থেকে মতামতসহ একটি সারসংক্ষেপ মন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। নির্বাচনকালীন সরকারের সময়ে লাইসেন্স দেয়া বিধিসম্মত ও যৌক্তিক হবে কি-না, তা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে ওই সার সংক্ষেপে। তালিকায় আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নামের পাশে তাদের পক্ষে সুপারিশকারীদের নামও রয়েছে। ১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গ্রিন মাল্টিমিডিয়া লিমিটেডের ‘গ্রিন টিভি’র চেয়ারম্যান নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সাংসদ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা গাজী গোলাম দস্তগীর। এই আবেদনে বন ও পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের নাম সুপারিশকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের ‘নিউজ টোয়েন্টিফোর’ চ্যানেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে রয়েছে সায়েম সোবহানের নাম, যিনি বসুন্ধরা গ্রুপের প্রধান আহমেদ আকবর সোবহানের ছেলে। মিলেনিয়াম মিডিয়া লিমিটেডের ‘তিতাস টিভির’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ধানাদ ইসলাম দীপ্ত; সুপারিশকারী হিসাবে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলাম। ঢাকা বাংলা মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন লিমিডেটের ‘ঢাকা বাংলা টেলিভিশন’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর নাম। এছাড়া মিলেনিয়াম মাল্টিমিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ‘মিলেনিয়াম টিভি’র এমডি নূর মোহাম্মদ; সুপারিশকারী সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ মমতাজ বেগম। নিউজ অ্যান্ড ইমেজের ‘নিউ ভিশন টিভির’ আবেদনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে শাহ আলমগীরের নাম। এ প্রতিষ্ঠানের সুপারিশকারী হিসাবে রয়েছেন মুন্সীগঞ্জের সাংসদ সুকুমার রঞ্জন। বারিন্দ মিডিয়া লিমিটেডের রেনেসাঁ টিভির চেয়ারম্যান ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ শাহরিয়ার আলম। রংধনু মিডিয়া লিমিটেডের রংধনু টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচ এম ইব্রাহিম; সুপারিশকারী আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংসদ খালিদ মাহমুদ। এছাড়া বিএসবি ফাউন্ডেশনের ক্যামব্রিয়ান টেলিভিশন (চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার), জাদু মিডিয়া লিমিটেডের জাদু মিডিয়া টিভি (চেয়ারম্যান আনিসুল হক), ব্রডকাস্ট ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ লিমিটেডের চ্যানেল টোয়েন্টি ওয়ান (ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন কৌশিক), মিডিয়া বাংলাদেশ লিমিটেডের আমার গান টিভি (চেয়ারম্যান তরুণ দে) এবং এটিভি লিমিটেডের এটিভির (চেয়ারম্যান আব্বাস উল্লাহ) নামও রয়েছে এই তালিকায়। এর আগে গত ২০ অক্টোবর চ্যানেল বায়ান্ন নামে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন দেয় সরকার। এরপর গত ৬ নভেম্বর অনুমোদন পায় বাংলা টিভি। ২০০৯ সালের অক্টোবরে একই দিনে ৭১, মোহনা, চ্যানেল ৯ (নাইন), সময় , গাজী টিভি (জিটিভি), ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন, মাছরাঙা, এটিএন নিউজ, মাইটিভি ও বিজয় টিভির লাইসেন্স দেয় সরকার। এর আগে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর, এপ্রিলে এসএ টিভি, ২০১১ সালের জুনে এশিয়ান টিভি, অক্টোবরে গানবাংলা টিভি, ডিসেম্বরে দীপ্তবাংলা টিভি এবং ১ অক্টোবর চ্যানেল বায়ান্নর লাইসেন্স দেয়া হয়। স্থগিত থাকা যমুনা টিভির লাইসেন্সও গত ২৯ জুলাই ফিরিয়ে দেয় সরকার। নতুন করে লাইসেন্স পেতে প্রায় দুইশ আবেদন তথ্য মন্ত্রণালয়ের জমা পড়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।