শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৩

সিরাজগঞ্জে সিভিল সার্জনসহ ১১ জনের নামে মামলা পাল্টা মামলায় গ্রেপ্তার ১।

সিরাজগঞ্জের খবর
বিধিবহির্ভূতভাবে দরপত্রের কার্যাদেশ প্রদান করার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জনসহ ১১ সদস্যের বিরুদ্ধে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে

বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য সিভিল সার্জনকে আদেশ প্রদান করেছেন। আদালতের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার পর সিভিল সার্জন নিজেকে আড়াল করার জন্য নিজে বাদি হয়ে ঠিকাদার নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সদর থানায় পাল্টা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সিভিল সার্জনের দায়েরকৃত মামলার অভিযুক্ত আসামি নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে।

সিএস অফিস সূত্রে প্রকাশ, সিভিল সার্জন ডা. মাঈন উদ্দিন মিঞা চলতি অর্থবছরে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও খোকশাবাড়ী পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি রোগীদের পথ্য সরবরাহ, কাপড় ধোলাই কার্যক্রম ও স্টেশনারীসামগ্রী সরবরাহ করার জন্য ৮ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহবান করেন।

দরপত্রের নীতিমালা অনুযায়ী পণ্যের দাম অবশ্যই বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে মর্মে শর্ত আরোপ করা হয়। এ দরপত্রে ১১টি প্রতিষ্ঠানে ৩০টি আইটেমের পণ্যসামগ্রী, ১৩ আইটেমের কাপড় ধোলাই এবং ৮৮ আইটেমের স্টেশনারীসামগ্রী সরবরাহের জন্য দরপত্র দাখিল করে। সিভিল সার্জন অনুমোদিত কর্মকর্তা হয়ে নিজেই আবার দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি নিযুক্ত হন। যা পিপিআর ২০০৮ এর বিধি-৩৬(২) এর পরিপন্থি। তিনি জেলা প্রশাসকের একজন প্রতিনিধিকে এ কমিটির সদস্য অন্তর্ভুক্ত করার নিয়ম থাকলেও প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় গঠিত কমিটিতে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করার পর তৃতীয় দফায় তার নাম বাদ দিয়ে পছন্দের সদস্যকে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেন।

সিএসসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার বাদি নুরুল ইসলাম বাজার দর কমিটির যাচাই করা দরের সাথে সংগতি রেখে দরপত্র দাখিল করেন। কিন্তু দরপত্র কমিটি তা আমলে না নিয়ে তড়িঘড়ি করে অসৎ উদ্দেশে দাখিলকৃত পছন্দের লোক মেসার্স অনামিকা এন্টারপ্রাইজ এর অনুকূলে গত ২৯ অক্টোবর এ কার্যাদেশ প্রদান করেন। নিয়মবহির্ভূতভাবে অনামিকা এন্টারপ্রাইজের নামে কার্যাদেশ প্রদান করায় এ আদেশ বেআইনী ঘোষণার দাবিতে ৩১ অক্টোবর নুরুল ইসলাম বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

আদালতের আদেশ ওই দিন দুপুরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছলে নিজেকে আড়াল করতে রাত সাড়ে দশটার দিকে সিভিল সার্জন ডা. মাঈন উদ্দিন মিঞা জোরপূর্বক অফিসে প্রবেশ করে দরপত্রর কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়া ও তাকে ভয়ভীতি দেখানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে নুরুল ইসলাম ও তার ভাই লিটনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ নুরুল ইসলামকে সকালে সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করে।

আদালতের দায়েরকৃত মামলার অন্যান্য বিবাদিরা হলেন, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডাক্তার উদয় নারায়ণ মোহন্ত, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বেগম লায়লা আক্তার, গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী তাজ উদ্দিন হাসান, জেলা মার্কেটিং অফিসার আইয়ুব আলী, উল্লাপাড়া হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার আনসার আলী, সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার ফরিদুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার তানভির রহমান, অনামিকা এন্টারপ্রাইজের প্রো. নাজমুল হুদা, হোসেনপুর মহল্লার সেলিনা ইসলাম ও আলতাব হোসেন।

সিরাজগঞ্জের সর্বশেষ সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।