বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বঙ্গবন্ধু ঘাঁটিতে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে রোববার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিমানবাহিনীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
‘‘একটি স্বাধীন জাতির আকাশসীমাকে নিরাপদ ও শত্রুমুক্ত রাখাই সেদেশের বিমানবাহিনীর মূল দায়িত্ব। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি আধুনিক, পেশাদার ও শক্তিশালী বিমানবাহিনী গঠন করা।... বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই এই বাহিনীর আধুনিকায়ন শুরু হয়।’’
বিমান বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন- জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে বিমান বাহিনীর জন্য কেনা প্রতিটি যুদ্ধোপকরণ ব্যবহারে যত্নশীল হতে হবে। রোববার সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু-কে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড দেওয়ার সময় এই নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন- বর্তমান সরকার আধুনিক ও প্রতিরোধক ক্ষমতাসম্পন্ন বাহিনী হিসেবে বিমান সেনাদের আগামীর জন্য গড়ে তুলছে।
একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের আকাশসীমাকে নিরাপদ ও শত্রুমুক্ত রাখার দায়িত্বে থাকে বিমানবাহিনী। এ বাহিনীর কার্যক্রম পরিচালনা হয় বিভিন্ন বিমান ঘাঁটি থেকে। বিমান বাহিনী আধুনিকায়নের প্রক্রিয়ায় ২০১৩ সালে পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটি হিসেবে যাত্রা শুরু করে ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু’। রোববার সকালে এই ঘাঁটিকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড তুলে দেন সরকার প্রধান ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ উপলক্ষে কুর্মিটোলায় চৌকস বিমান সেনাদের প্যারেড পরিদর্শন শেষে রাষ্ট্রীয় সালাম গ্রহণ করেন তিনি। এসময় দক্ষ বৈমানিকরা মিগ টোয়েন্টি নাইনসহ বেশ কয়েকটি যুদ্ধ বিমানের ফ্লাইপাস্ট পরিচালনা করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়ার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয় ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান কার্যক্রম। এরপর সংক্ষিপ্ত ভাষণে প্রতিটি যুদ্ধোপকরণ ব্যবহারে বিমান সেনাদের যত্নশীল হওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীর সদস্যদের ‘দক্ষ ও আদর্শ’ বিমানসেনা হিসেবে গড়ে ওঠার তাগিদ দেন এবং জনগণের ‘কষ্টার্জিত অর্থের’ বিনিময়ে সংগ্রহ করা যুদ্ধ উপকরণের ‘কার্যকর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে’ আরও বেশি যত্নবান হতে নির্দেশ দেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যবৃন্দ তাদের দক্ষতা, দেশপ্রেম, নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির জন্য আরও অনেক সাফল্য বয়ে আনবে।’ ‘‘আমি আশা করি, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আপনারা নিজেদের গড়ে তুলবেন এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সর্বতোভাবে সক্ষম হবেন।’’ ‘জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে, আকাশ প্রতিরক্ষা এবং শত্রুর আক্রমণ প্রতিরোধে এই ঘাঁটির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিমানবাহিনীর এই ঘাঁটিটি ঢাকা তথা বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষার মূল ঘাঁটি হিসেবে আজ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আকাশ যুদ্ধে সুসজ্জিত বঙ্গবন্ধু ঘাঁটি বাংলাদেশের আকাশসীমাকে শত্রুমুক্ত ও নিরাপদ রাখতে সম্পূর্ণভাবে সক্ষম বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’ ‘‘একটি স্বাধীন জাতির আকাশসীমাকে নিরাপদ ও শত্রুমুক্ত রাখাই সেদেশের বিমানবাহিনীর মূল দায়িত্ব। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিধি ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি আধুনিক, পেশাদার ও শক্তিশালী বিমানবাহিনী গঠন করা।... বঙ্গবন্ধুর সময় থেকেই এই বাহিনীর আধুনিকায়ন শুরু হয়।’’
তিনি আরও বলেন, বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নে বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আধুনিকীকরণ কার্যক্রমের ফলে আগামীতে বিমান বাহিনী উচ্চতর কারিগরি ও পেশাগত ক্ষেত্রেও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।